আপনি যদি স্মার্টফোন ইউজার হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই সেন্সরের নাম শুনে থাকবেন । কারণ আমাদের ফোনে অনেক ধরনের সেন্সর থাকে, যেগুলো ফোন ইউজ করার সময় আমাদেরকে অনেক ভাবে সাহায্য করে । কিন্তু আপনি কি জানেন এই সেন্সরগুলো আসলে কি এবং সেগুলো কি করে? তাহলে চলুন আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা জানার চেষ্টা করি সেন্সর কি এবং কি কাজে ব্যবহার করা হয়? এছাড়াও, আমাদের স্মার্টফোনে ব্যবহৃত প্রধান সেন্সরগুলি কী কী এবং সেগুলোর কাজ কী?
Table of Contents
সেন্সর কি – সেন্সর কাকে বলে
সেন্সর শব্দের অর্থ হল কোনো তথ্য অনুধাবন করা বা করার ক্ষমতা । সেন্সর হল এমন একটি ডিভাইস যা প্রকৃতির ভৌত পরিবেশ থেকে ইনপুট (যেমন গতি, আলো, তাপ, চাপ, তাপমাত্রা, আর্দ্রতা ইত্যাদি) সনাক্ত করে এবং আউটপুট হিসাবে প্রতিক্রিয়া জানায় । এই আউটপুট সিগন্যাল ডেটা সেন্সরে, মানুষের পাঠযোগ্য ডিসপ্লে বা বৈদ্যুতিক সংকেতে রূপান্তরিত হয় । যা মানুষ ইলেকট্রিক ডিভাইসের (যেমন – স্মার্টফোন) ডিসপ্লেতে দেখতে ও পড়তে পারে ।
অন্য কথায়, সেন্সর হল এক ধরনের কনভার্টার, যা পরিবেশগত কোন পরিবর্তনকে ডিটেক্ট করে তা সিগন্যালে রুপান্তরিত করে ।মানুষ তার চারপাশের পরিবেশ থেকে কোন অনুভুতি গ্রহন করতে হলে নাক, কান, চোখ ইত্যাদি ব্যবহার করে থাকে । আর যন্ত্রের ক্ষেত্রে এই অনুভুতিগুলো নেওয়ার জন্য সেন্সর ব্যবহার করা হয় । বাজারে অনেক ধরণের সেন্সর পাওয়া যায়, যেগুলি বাইরের পরিবেশ থেকে আলো, গতি, তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, আর্দ্রতা, কম্পন, চাপ, চৌম্বক ক্ষেত্র, মাধ্যাকর্ষণ, বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র, শব্দ এবং অন্যান্য ভৌত বস্তু সনাক্ত করতে ব্যবহৃত হয় ।
সেন্সর এর কাজ কি
আমাদের স্মার্টফোনে অনেক ধরণের সেন্সর রয়েছে, যার বিভিন্ন ধরনের ফাংশন রয়েছে । কিন্তু এসবের উদ্দেশ্য একটাই, স্মার্টফোনকে ভালোভাবে ইউজ করতে সাহায্য করা । অর্থাৎ স্মার্টফোনের ব্যবহারযোগ্যতা বাড়ানো । সেন্সরের কারণে স্মার্টফোন ব্যবহার করা অনেক বেশী সহজ হওয়ার পাশাপাশি আজকার স্মার্টফোনের মাধ্যমে অনেক ধরনের কাজ করা সম্ভব হচ্ছে ।
ধরুন আপনি আপনার ফোনে একটি কার রেসিং গেম খেলছেন । এবং গাড়িটি বাম এবং ডানে মুভ করাতে হলে আপনাকে ফোনের স্ক্রিনের উপর বারবার ট্যাপ করতে হবে । কিন্তু যদি আপনার ফোনে জাইরোস্কোপ সেন্সর থাকে, তাহলে আপনি স্ক্রিনে কোন ধরনের ট্যাপ করা ছাড়াই শুধুমাত্র ফোনটিকে ডানে বামে কাত করেই গাড়িটিকে পছন্দসই দিকে মুভ করাতে পারবেন ।একইভাবে, আমাদের ফোনে আরও অনেক ধরনের সেন্সর থাকে, যা বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয় ।
টেলিভিশন দেখার সময় আমরা সবসময় রিমোট ব্যবহার করি । এখানে সেন্সর, রিমোট এবং টিভির মধ্যে কমিউনিকেশনের ক্ষেত্রে একটি প্রধান ভূমিকা পালন করে । রিমোটের বোতাম চাপার পর, রিমোটের ভেতরে থাকা সেন্সর টিভির সেন্সরের সাথে যোগাযোগ করে । এটি রিমোট থেকে পাঠানো সিগন্যাল টিভিতে ইনপুট হিসেবে পাঠায় । যার মাধ্যমে চ্যানেল পরিবর্তনের কাজ, ভলিউম কমানো বাড়ানো বা অন্য কোন অপারেশন করা হয় ।
সেন্সর নিজেই স্মার্টফোন এবং স্মার্টওয়াচ বা ফিটনেস ব্যান্ডের মধ্যে যোগাযোগ করতে সাহায্য করে । সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আমাদের স্মার্টফোনে বাকি ডিভাইসের চেয়ে বেশি সেন্সর থাকে । এর মধ্যে রয়েছে টাচ স্ক্রিন, ক্যামেরা, ফ্ল্যাশ লাইট, ফিঙ্গারপ্রিন্ট, স্ক্রিন লাইট সেন্সর ইত্যাদি । গাড়ি এবং মোটরবাইকেও বিভিন্ন সেন্সর ইউজ করা হয় ।
গাড়ির স্পিড মিটারে লাইট সেন্সর ইউজ করা হয়েছে । এটির সাহায্যে দিনের বেলায় আলো নেভানো অবস্থায় থাকে এবং অন্ধকার হওয়ার সাথে সাথে এর আলো অটোমেটিক জ্বলতে শুরু করে । আজকাল অনেক গাড়ির হেডলাইটেও সেন্সর ইউজ করা হয় । এছাড়াও স্মার্টফোন এবং কার-বাইকের মধ্যে যোগাযোগ করার জন্য সেন্সর ইউজ করা হয় ।
আরও পড়ুনঃ ক্যাপচা কি ? এটা কিভাবে কাজ করে?
সেন্সর কত প্রকার
সেন্সরের প্রকারভেদ নিচে দেওয়া হল –
- এক্টিভ এবং প্যাসিভ সেন্সর
- বৈদ্যুতিক এবং তেজস্ক্রিয় সেন্সর
- ইনপুট এবং আউটপুট সেন্সর
- এনালগ এবং ডিজিটাল সেন্সর
আমাদের ফোনে সেন্সরগুলো কি কি
আমাদের স্মার্টফোনে থাকা কিছু সেন্সর সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হল –
অ্যাক্সিলোমিটার – এটি একটি খুব কমন এবং গুরুত্বপূর্ণ সেন্সর, যা প্রায় প্রতিটি স্মার্টফোনেই পাওয়া যায় । এর কাজ হল ফোনের সফটওয়্যারকে বোঝানো যে, ইউজার ফোনটিকে কীভাবে ধরে আছে? অর্থাৎ ফোনটি কি সোজা বা নাকি ক্রস ধরে রাখা হয়েছে? সেই অনুযায়ী, এটি ফোনের স্ক্রিনকে রোটেট করে । আপনি অবশ্যই আপনার স্মার্টফোনের Auto Rotate অপশন দেখেছেন? এই অটোরোটেট অপশনটি এই সেন্সরের সাহায্যে কাজ করে । মুভি বা ভিডিও দেখার সময় এই সেন্সর আপনাকে অনেক সাহায্য করে ।
জাইরোস্কোপ – এটি অ্যাক্সিলোমিটার সেন্সরের একটি উন্নত সংস্করণ । যা আপনাকে সঠিকভাবে বলে যে, আপনি কোন কোণ থেকে আপনার স্মার্টফোনটি ধরে রেখেছেন । এবং আপনার ফোন কোন দিকে কাত হয়ে আছে ? এই সেন্সরটি ৩৬০° ভিডিও দেখতে ইউজ করা হয় । এই সাথে, আপনি এটির মাধ্যমে ৩৬০° ভিডিও রেকর্ড করতে পারবেন । এছাড়াও, আপনি যখন প্যানোরামা মোডে কোনো ছবি তলেন, তখন এই সেন্সরটি আপনাকে অনেক সাহায্য করে । এবং এই সেন্সরটি গেম খেলার সময় সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় । আপনি যখন আপনার ফোনে কোন কার রেসিং গেম খেলেন, তখন ফোনটিকে ডান-বামে, উপরে-নিচে মুভ করিয়ে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করেন, এই সেন্সরের সাহায্যে এই সবকিছু ঘটে ।
প্রক্সিমিটি সেন্সর – বর্তমান সময়ের প্রায় সব ফোনেই এই সেন্সর দেখতে পাবেন । এটি মূলত ফোনের চারপাশের গতিবিধি সনাক্ত করে এবং ফোন থেকে আপনার দূরত্বও পরিমাপ করে । আপনি লক্ষ্য করলে দেখবেন যে, কল করার সময় আপনি যখন ফোনটি আপনার কানের কাছে নিয়ে যান তখন স্ক্রিন অটোমেটিক বন্ধ হয়ে যায় । এর ফলে আপনার ফোনের ব্যাটারি কম খরচ হয় এবং ফোনের স্ক্রিন বন্ধ থাকার কারণে আপনার মুখের সাথে লেগে কলটির সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয় না । এছাড়াও আপনার ফোনে যখন কোন কল আসে এবং তখন আপনি যদি আপনার ফোনটি জাস্ট উল্টে দেন অর্থাৎ ফোনের স্ক্রিন মাটির দিকে ঘুরিয়ে দেন তাহলে দেখবেন যে ফোনটি মিউট হয়ে যাবে । অর্থাৎ ফোনের রিংটোন বাজা বন্ধ হয়ে যাবে । এছাড়াও প্রক্সিমিটি সেন্সরের সাহায্যে আপনি আপনার অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে ফোনের স্ক্রিন অন/অফ করতে পারবেন এবং কলও রিসিভ করতে পারবেন । প্রক্সিমিটি সেন্সর কয়েক ধরনের হয়ে থাকে –
- ক্যাপাসিটিভ প্রক্সিমিটি সেন্সর
- ইন্ডাকটিভ প্রক্সিমিটি সেন্সর
- চৌম্বকীয় প্রক্সিমিটি সেন্সর
অ্যাম্বিয়েন্ট লাইট সেন্সর – এই সেন্সর মূলত আমাদের ফোনের আলো নিয়ন্ত্রণ করে । আপনি অবশ্যই আপনার ফোনে অটো ব্রাইটনেস অপশনটি দেখেছেন, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনাদের আশেপাশের আলোর অবস্থা অনুসারে স্ক্রিনের ব্রাইটনেস ঠিক করে । আপনি যখন বাড়ির ভিতরে বা অন্ধকারে থাকেন, এটি আপনার ফোনের স্ক্রিনের ব্রাইটনেস কমিয়ে রাখে । আবার আপনি যখন ঘরের বাইরে থাকেন বা সূর্যের আলোতে থাকেন, তখন এটি আপনার ফোনের ব্রাইটনেস বাড়িয়ে দেয় । অর্থাৎ অ্যাম্বিয়েন্ট লাইট সেন্সর আপনার ফোনের ব্রাইটনেস কন্ট্রোল করে, যার কারণে ফোনের ব্যাটারির চার্জ বেশী সময় থাকে ।
কম্পাস/ম্যাগনেটোমিটার – এই সেন্সর ম্যাগনেট অর্থাৎ চুম্বকের সাহায্যে কাজ করে । এটি আমাদের স্মার্টফোনে কম্পাস হিসেবে কাজ করে । এই সেন্সরটি Google ম্যাপের দিকনির্দেশ খুঁজে পেতে এবং আপনার বর্তমান লোকেশন খুঁজে বের করতে ব্যবহার করা হয় । এছাড়াও, এই সেন্সর চৌম্বক ক্ষেত্র পরিমাপ করার জন্যও ব্যবহার করা হয় । আপনি যদি কোন বন বা সমুদ্রের মাঝখানে হারিয়ে যান তাহলে এই সেন্সরের সাহায্যে, আপনি আপনার ফোনের কম্পাস অ্যাপের মাধ্যমে আপনার কোন দিকে যেতে হবে তা বুঝতে পারবেন । লোকেশন ভিত্তিক অ্যাপগুলোতে এই সেন্সরটি সবচেয়ে বেশি ইউজ করা হয় ।
ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর – এই সেন্সর সম্পর্কে আপনাদের বেশি কিছু বলার দরকার নেই, কারণ আপনারা ইতিমধ্যেই এটি সম্পর্কে জানেন । আগে শুধুমাত্র দামি স্মার্টফোনগুলোতে এই সেন্সর দেখা যেত । কিন্তু বর্তমানে কম বাজেটের যে কোন সস্তা স্মার্টফোনেও সহজেই দেখা যায় । এই সেন্সরটি মূলত সিকিউরিটির জন্য ব্যবহৃত হয় । এর সাহায্যে, আপনি আপনার আঙ্গুলের ছাপ ব্যবহার করে আপনার ফোন আনলক করতে পারেন । এটি বেশ নিরাপদ বলে মনে করা হয় । এই কারণেই বর্তমানে অনেক কোম্পানি এটিকে তাদের সিকিউরিটি সিস্টেমের একটি অংশ করে তুলছে । এখন ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরের কাজ শুধুমাত্র ফোন আনলক করা নয় বরং আজকাল এটি অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে থেকে উচ্চ মানের সিকিউরিটি ডিভাইসেও ব্যবহার করা হচ্ছে । আর ধীরে ধীরে এর পরিধি আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে ।
ব্যারোমিটার – আপনি শুধুমাত্র অল্প কিছু স্মার্টফোনেই এই সেন্সরটি দেখতে পাবেন । এটি কোন নির্দিষ্ট স্থানের সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা খুঁজে বের করতে এই সেন্সর ব্যবহৃত হয় । এছাড়াও, এটি কিছু হেলথ বা ফিটনেস রিলেটেড অ্যাপে ব্যবহৃত হয়, যা আপনাকে বলে যে আপনি কতটা পাহাড়ে উঠেছেন এবং কতটুকু নেমেছেন । অর্থাৎ পর্বতারোহণের রেকর্ড রাখে এমন ফিটনেস অ্যাপে এই সেন্সর খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
থার্মোমিটার সেন্সর – প্রতিটি স্মার্টফোনের ভিতরে একটি থার্মোমিটার সেন্সর থাকে যা ফোনের ইন্টারনাল তাপমাত্রা পরিমাপ করতে ব্যবহৃত হয়, যেমন CPU-এর তাপমাত্রা । কিছু কিছু দামী ফোনে বাইরের তাপমাত্রা পরিমাপ করার জন্য এক্সট্রা থার্মোমিটার সেন্সরও থাকে, যা আপনার আশেপাশের পরিবেশের তাপমাত্রা সম্পর্কে তথ্য দিতে সক্ষম । অর্থাৎ এই সেন্সরের সাহায্যে আপনি জানতে পারবেন আপনি যেখানে অবস্থান করছেন সেখানকার তাপমাত্রা কত? এছাড়াও, এই ধরনের সেন্সর আবহাওয়া অধিদপ্তরের যন্ত্রপাতি এবং মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ফ্রিজার ইত্যাদির মতো অনেক ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইসেও ব্যবহৃত হয় ।
পেডোমিটার – এই সেন্সরটি বেশিরভাগ সময় ফিটনেস ব্যান্ডে দেখা যায় । এটি স্মার্টফোনে খুব কম সময় ব্যবহৃত হয় । এজন্য আপনি এটি শুধুমাত্র অল্প কিছু ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোনেই দেখতে পাবেন । এটি সঠিকভাবে আপনার পায়ের স্টেপ গুলো গণনা করতে পারে । যদিও এই কাজটি অ্যাক্সিলোমিটার সেন্সরের মাধ্যমেও করা যায়। কিন্তু অ্যাক্সিলিওমিটার সেন্সরের স্টেপ গণনা করার ক্ষমতা পেডোমিটারের মতো সঠিক নয় । এজন্য ফিটনেস ব্যান্ডে বা স্মার্ট ওয়াচে পেডোমিটার সেন্সর ব্যবহার করা হয় ।
আরও পড়ুনঃ অপারেটিং সিস্টেম কি? অপারেটিং সিস্টেম কিভাবে কাজ করে?
বায়ু আর্দ্রতা সেন্সর – এই সেন্সরের মাধ্যমে আপনি আপনার চারপাশের বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ সম্পর্কে জানতে পারবেন ।যদি আপনার আশেপাশের পরিবেশে আর্দ্রতার পরিমাণ বেড়ে যায় এবং আবহাওয়া খারাপ হতে শুরু করে তাহলে এই সেন্সরটি আপনাকে আপনার ফোনের মাধ্যমে একটি সতর্কবার্তা পাঠাবে, যাতে আবহাওয়ার অবনতি সম্পর্কে আপনি জানতে পারেন ।তবে এই সেন্সরটিও স্মার্টফোনে খুব কমই দেখা যায় । তবে আপনি অল্প কিছু ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোনে এই সেন্সর দেখতে পাবেন ।
ইনফ্রারেড সেন্সর – এই সেন্সরটিকে IR সেন্সর বা রিমোট সেন্সরও বলা হয় । এর মাধ্যমে আপনি আপনার স্মার্টফোনটিকে রিমোট হিসাবে ব্যবহার করতে পারবেন । যেমন টিভি রিমোট, এসি রিমোট, সেটআপ বক্স রিমোট, ডিভিডি প্লেয়ার রিমোট ইত্যাদি বিভিন্ন জিনিসের রিমোট হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন । Xiaomi ফোনে এই সেন্সরটি খুব সহজেই দেখতে পাবেন ।
LiDAR সেন্সর (iPhone 13) – সাধারণত স্মার্টফোনে এই লিডার সেন্সর ইউজ করা হয় না । কিন্তু iPhone 13 হল প্রথম স্মার্টফোন যেখানে LiDAR সেন্সর ব্যবহার করা হয়েছে । LiDAR সেন্সর কি? LiDAR এর পূর্ণরূপ হল লেজার ইমেজিং ডিটেকশন এন্ড রেঞ্জিং । এটি আসলে এক ধরনের ইমেজিং সেন্সর, যা লেজারের মাধ্যমে কাজ করে । যখন কোনো বস্তু বা জিনিসের ছবি তোলা হয়, তখন সেই বস্তুর ওপর একটি লেজার লাইট ছেড়ে দেওয়া হয় । আর এরপর সেই লেজার লাইট সেই বস্তুতে আঘাত করা পুনরায় ফিরে আসে । এবং তা থেকে ঐ বস্তুর দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে তথ্য জানা যায় । LiDAR সেন্সর হল একটি হাই-রেজোলিউশন লেজার ইমেজিং টেকনোলজি । সাধারণত এই ধরণের সেন্সর স্যাটেলাইটে ব্যবহৃত হয় । তবে বর্তমানে স্যাটেলাইট ছাড়াও আরও অনেক কাজে এই সেন্সর ব্যবহৃত হচ্ছে । যেমন মানচিত্র তৈরি, ড্রাইভার বিহীন যানবাহন পরিচালনা, ভূগোল, ভূতত্ত্ব, প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ ইত্যাদি ।
হল সেন্সর – বেশীরভাগ স্মার্টফোনে হল সেন্সর ইউজ করা হয় । যখন আমরা স্মার্টফোনের ডিসপ্লেতে কোন ফ্লিপ কভার বা মেটাল জাতীয় কিছু রাখি, তখন ফোনের ডিসপ্লে অটো বন্ধ হয়ে যায় এবং আমরা ডিসপ্লের উপরের দিক থেকে সরিয়ে ফেললেই ফোনের ডিসপ্লে পুনরায় চালু হয়ে যায়। এটি মূলত হল সেন্সরের সাহায্যে ঘটে ।
আইরিস সেন্সর – আইরিস সেন্সরটি মূলত ফেস ডিটেক্টর হিসাবে কাজ করে । এটি মানুষের মুখ এবং চোখ আইডেন্টিফাই করে । এই সেন্সরটি বেশিরভাগ সময় নিরাপত্তার জন্য ব্যবহার করা হয় । এই সেন্সর ব্যাঙ্ক এবং বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানে ব্যবহৃত হয় । তবে আজকাল বেশিরভাগ স্মার্টফোনেই এই সেন্সর ব্যবহার করা হচ্ছে । বর্তমানে এই সেন্সরটি প্রায় সমস্ত স্মার্টফোনে ফেস লক হিসাবে ইউজ হয় ।
হার্ট রেট সেন্সর – হার্ট রেট সেন্সর সাধারণত শরীরের হার্ট রেট পরিমাপ করতে ইউজ করা হয় । এই সেন্সর তৈরি করা হয়েছে মানুষের হেলথ পর্যবেক্ষণ করার জন্য । এই সেন্সরটি বেশিরভাগ ফিটনেস ব্যান্ড বা স্মার্টওয়াচগুলিতে বেশী ব্যবহৃত হয় ।
বারকোড সেন্সর – এই সেন্সরের প্রধান কাজ হল বারকোড স্ক্যান করা । বারকোড হল কালো এবং সাদা রঙের সমান্তরাল রেখা সমন্বিত একটি ছবি, যার মধ্যে পণ্যের মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ, উৎপাদনের তারিখ, মূল্য ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত ফতথ্য থাকে । এই সেন্সরের মাধ্যমে বারকোডের মধ্যে থাকা তথ্য গুলোকে রিড করা হয় ।
শেষ কথা
আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা জানতে পেড়েছেন যে, সেন্সর কি এবং আমাদের স্মার্টফোনে ব্যবহৃত বহুল ব্যবহৃত সেন্সর কোনগুলো । আর্টিকেলটি নিয়ে যে কোন ধরনের প্রশ্ন বা মন্তব্য থাকলে কমেন্ট সেকশনে জানান ।