হোয়াইট হ্যাট এসইও এবং ব্ল্যাক হ্যাট এসইও কি ?

আপনি কি হোয়াইট হ্যাট এসইও এবং ব্ল্যাক হ্যাট এসইও সম্পর্কে শুনেছেন ? আপনি কি জানতে চান ব্ল্যাক হ্যাট এসইও বনাম হোয়াইট হ্যাট এসইও কি ? আপনি নিশ্চয়ই Black Hat SEO এবং White Hat SEO সম্পর্কে শুনেছেন । এই টেকনিক গুলো বড় বড় এসইও বিশেষজ্ঞ এবং ওয়েবমাস্টাররা তাদের ওয়েবসাইটকে Google-এ উচ্চতর র‍্যাঙ্কিং পেতে ব্যবহার করেন ।

আমরা যদি ব্ল্যাক হ্যাট এসইও সম্পর্কে কথা বলি, তাহলে এই কৌশলগুলি ব্যবহার করে সার্চ ইঞ্জিনের নিয়ম লঙ্ঘন করে ওয়েবসাইটের র‍্যাঙ্কিং বাড়ানো হয় । অন্যদিকে, হোয়াইট হ্যাট এসইও এমন একটি কৌশল যার অধীনে গুগলের নিয়মের কথা মাথায় রেখে ওয়েবসাইটের র‍্যাঙ্কিং বাড়ানো হয় । আপনি নিশ্চয়ই সিনেমায় নায়ক ও ভিলেনের ভূমিকা দেখেছেন । একজন নায়ক থাকেন যিনি সব সময় সত্যের পথে হাঁটেন এবং অন্যদিকে একজন খলনায়ক থাকেন যিনি সত্য এবং নিয়মের পরোয়া করেন না, তার একমাত্র লক্ষ্য হল শর্টকাটে সফল হওয়া । এখানে, Black Hat SEO Vs White Hat SEO এর অর্থও অনেকটা একইরকম কিছু ।

আপনারা সবাই জানেন যে, গুগলে যেকোনো ওয়েবসাইটকে র‍্যাঙ্ক করতে আমাদের বিভিন্ন ধরনের কৌশল অবলম্বন করতে হয় ।গুগল সর্বদা নতুন নতুন অ্যালগরিদম চালু করে তার র‍্যাঙ্কিং সিস্টেম আপডেট করে এবং এর জন্য আমাদের এসইও কৌশলগুলিতে পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয়, যাতে সার্চ ইঞ্জিনগুলিতে আমাদের ওয়েবসাইটগুলির স্থান উপরের দিকে বজায় থাকে ।

ব্ল্যাক হ্যাট এসইও কিব্ল্যাক হ্যাট এসইও কাকে বলে

ব্ল্যাক হ্যাট এসইও হল একটি এসইও কৌশল যেখানে ওয়েবসাইটের র‍্যাঙ্কিং এবং অথোরিটি দ্রুত বৃদ্ধি করতে অনৈতিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় । গুগলের মতো সার্চ ইঞ্জিনের তৈরি নিয়মের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই । এর আওতায় শুধুমাত্র সার্চ ইঞ্জিনকে টার্গেট করে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা হয় । এতে ওয়েবসাইটটি কোন ব্যবহারকারীর জন্য উপকারী কিনা তা বিবেচ্য নয় । এখানে সার্চ ইঞ্জিন থেকে প্রচুর পরিমাণে ট্রাফিক বা ভিজিটর পাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের স্প্যাম এসইও টেকনিক ব্যবহার করা হয় । ব্ল্যাক হ্যাট এসইও টেকনিক সার্চ ইঞ্জিন দ্বারা শাস্তিযোগ্য । আপনি যদি সার্চ ইঞ্জিনের তৈরি নিয়ম লঙ্ঘন করে ধরা পড়েন, তাহলে আপনি কঠোর শাস্তি পেতে পারেন এবং আপনার ওয়েবসাইট চিরতরে সার্চ ইঞ্জিন থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে ।আমরা কোন অবস্থাতেই, আপনাদের ব্ল্যাক হ্যাট এসইও টেকনিক ব্যবহার করার পরামর্শ দেব না । আমাদের উদ্দেশ্য শুধুমাত্র জানার জন্য এই কৌশলগুলি সম্পর্কে বলা ।

হোয়াইট হ্যাট এসইও কিহোয়াইট হ্যাট এসইও কাকে বলে

যদি আমরা হোয়াইট হ্যাট এসইও সম্পর্কে কথা বলি, তবে এটি ব্ল্যাক হ্যাট এসইওর ঠিক বিপরীত । হোয়াইট হ্যাট এসইও এর উদ্দেশ্য হল সার্চ ইঞ্জিনে একটি ওয়েবসাইটের র‍্যাঙ্কিং এবং অথোরিটি উন্নত করা, তবে এই সমস্ত কাজ সার্চ ইঞ্জিনের তৈরি নিয়ম বা রুলস মেনে করা হয় । হোয়াইট হ্যাট এসইও সার্চ ইঞ্জিনের জন্য কোন হুমকি সৃষ্টি করে না । সার্চ ইঞ্জিন এবং ব্যবহারকারী উভয়ের জন্য ওয়েবসাইটটিকে আরও ভাল করে তোলাই এর প্রধান উদ্দেশ্য । আপনি নিশ্চয়ই অন পেজ এসইও এবং অফ পেজ এসইও এর নাম শুনেছেন, এগুলো উভয়ই হোয়াইট হ্যাট এসইও এর অংশ । হোয়াইট হ্যাট এসইওকে এথিক্যাল এসইওও বলা হয় ।কারণ এতে এমন এসইও টেকনিক অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা সার্চ ইঞ্জিনের তৈরি নিয়মগুলিকে মাথায় রেখে গৃহীত হয় ।

যদিও দেখা যায়, ব্ল্যাক হ্যাট এসইও টেকনিক ব্যবহার করা হোয়াইট হ্যাট এসইও টেকনিকের চেয়ে সহজ, কিন্তু আপনি ধরা পড়লে সার্চ ইঞ্জিন দ্বারা শাস্তি পেতে পারেন । তাই আমরা আপনাকে কখনই ব্ল্যাক হ্যাট এসইও ব্যবহার করার পরামর্শ দেব না ।

আরও পড়ুনঃ এসইও কি? এটা কিভাবে কাজ করে?

হোয়াইট হ্যাট এবং ব্ল্যাক হ্যাট এসইও এর মধ্যে কোনটা অধিক কার্যকর

যদি সহজভাবে দেখা যায়, তাহলে ব্ল্যাক হ্যাট এসইও টেকনিক ব্যবহার করে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আপনার ওয়েবসাইট উচ্চতর র‍্যাঙ্কিং পেতে পারে তবে আপনার ব্যবহৃত এই টেকনিক কতদিন স্থায়ী হবে তা বলা মুশকিল। যদিও ব্ল্যাক হ্যাট এসইও অনেক বেশী কার্যকর তবে এটি অল্প সময়ের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে, কারণ এই জাতীয় কৌশল ব্যবহার করে সার্চ ইঞ্জিনের রেজাল্টে সব সময়ের জন্য প্রথম দিকে থাকা সম্ভব নয়। কারণ বর্তমানে সার্চ ইঞ্জিনও অনেক স্মার্ট এবং এই ধরনের অনৈতিক কাজগুলি যখন সার্চ ইঞ্জিন ডিটেক্ট করতে পারবে তখন আপনার ওয়েবসাইটটি সার্চ ইঞ্জিন ফলাফল পেজ থেকে একেবারে সরিয়ে দেওয়া হবে।

অন্যদিকে হোয়াইট হ্যাট এসইও দীর্ঘ সময়ের জন্য ব্যবহার করতে পারবেন । কারণ হোয়াইট হ্যাট এসইও এর ক্ষেত্রে সার্চ ইঞ্জিন থেকে কোনো জরিমানা করা হয় না এবং এতে ব্যবহৃত কৌশলগুলো সার্চ ইঞ্জিন এবং ব্যবহারকারী উভয়ের জন্যই প্রযোজ্য। উভয়ের কার্যকারিতার মধ্যে পার্থক্য হল ব্ল্যাক হ্যাট এসইও ব্যবহার করে, আপনি কম সময়ে সাফল্য অর্জন করতে পারেন তবে এই কৌশলটি বেশী সময় কাজ করবে না। অন্যদিকে হোয়াইট হ্যাট এসইও দীর্ঘ সময়ের জন্য কার্যকর এবং এটিএ ক্ষেত্রে সার্চ ইঞ্জিন থেকে পেনাল্টি খাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।

ব্ল্যাক হ্যাট এসইওতে ব্যবহৃত টেকনিক গুলো কি কি

আগেই বলেছি, ব্ল্যাক হ্যাট এসইও ব্যবহার করে, এসইও-এর নিয়ম ভঙ্গ করে, ওয়েবসাইটটিকে সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পেজে নিয়ে আসা হয় । ব্ল্যাক হ্যাট এসইও-এর মধ্যে সর্বাধিক ব্যবহৃত কিছু কৌশল নীচে দেওয়া হল-

  • কীওয়ার্ড স্টাফিং
  • পেইড ব্যাকলিংক
  • Unrelated meta description
  • Doorway pages
  • হিডেন টেক্সট
  • Link farming
  • স্ক্র্যাপ কন্টেন্ট

কীওয়ার্ড স্টাফিং কীওয়ার্ড স্টাফিং ব্ল্যাক হ্যাট এসইও এর সেরা কৌশলগুলির মধ্যে একটি। একই কীওয়ার্ড বারবার ব্যবহার করে সার্চ ইঞ্জিনে টার্গেটেড কীওয়ার্ডে একটি পোস্ট র‍্যাঙ্ক করাকে কীওয়ার্ড স্টাফিং বলে। কীওয়ার্ড স্টাফিং মানে যেখানে প্রয়োজন নেই সেখানেও কীওয়ার্ড যোগ করা। এই ধরনের বিষয়বস্তু সার্চ ইঞ্জিনে স্থান পায়, কারণ এতে কীওয়ার্ড ডেনসিটি বেশী থাকে। কিন্তু এই ধরনের কন্টেন্ট বা বিষয়বস্তু ব্যবহারকারীর দ্বারা পড়ার উপযুক্ত হয় না। এই অতিরিক্ত কীওয়ার্ডগুলি আর্টিকেলের মাঝখানে ব্যবহারকারীদের বিরক্ত করে।

গুগল সব সময় বলে যে, ওয়েবসাইটে এমন একটি পেজ তৈরি করতে যা ব্যবহারকারীর জন্য উপকারী। এমন কোন পেজ তৈরি করবেন না বা এমন কোন কন্টেন্ট তৈরি করবেন না যা অরগ্যানিক দেখায় না এবং যা ব্যবহারকারীদের বিরক্ত করে। আপনি যদি সার্চ ইঞ্জিন দ্বারা কীওয়ার্ড স্টাফিং করতে গিয়ে ধরা পড়েন, তাহলে আপনার ওয়েবসাইট চিরতরে সার্চ ইঞ্জিন থেকে বের হয়ে যেতে পারে। তাই সঠিক কীওয়ার্ড ডেনসিটির সাথে মানসম্পন্ন কন্টেন্ট লেখার দিকে মনোনিবেশ করুন।

পেইড ব্যাকলিংক – পেইড ব্যাকলিংক হল একটি ব্ল্যাক হ্যাট এসইও কৌশল যা আজ বড় বড় কোম্পানি এবং এসইও বিশেষজ্ঞরা ব্যবহার করছে। আপনি আরও জানেন যে আমাদের ওয়েবসাইটের অথোরিটি এবং র‍্যাঙ্কিং বাড়ানোর জন্য ব্যাকলিংক কতটা উপকারী। কিন্তু আপনি যদি ব্যাকলিংক ক্রয় বিক্রয় করেন তাহলে আপনি শাস্তি পেতে পারেন।

গুগল এবং অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন সরাসরি ব্যাকলিংক ক্রয়-বিক্রয়ের বিরুদ্ধে। গুগল বলে যে আপনি আপনার নিজের অর্থ দিয়ে আপনার ওয়েবসাইটের জন্য বিশ্বাস কিনতে পারবেন না, কারণ ব্যাকলিংকগুলি একটি ওয়েবসাইটের জন্য বিশ্বাসের একটি রূপ। সার্চ ইঞ্জিনের মতে, ব্যাকলিংক কেনা বা বিক্রি করা শাস্তি যোগ্য অপরাধ । তাই আপনি যে কোনো সময় এই ধরনের কার্যকলাপের জন্য শাস্তি পেতে পারেন।

আপনি যদি টাকা দিয়ে আপনার ওয়েবসাইটের জন্য ব্যাকলিংক কিনে থাকেন, তাহলে সেই ওয়েবসাইটের মালিককে বলে দ্রুত সেটি সরিয়ে ফেলুন। আপনি যদি এটি সরাতে না পারেন, তাহলে আপনি Google Disavow টুল ব্যবহার করতে পারেন। আপনি যে ওয়েবসাইট গুলো থেকে ব্যাকলিংক কিনেছেন তার একটি তালিকা তৈরি করুন এবং এই টুলে জমা দিন। আপনি যদি এটি করেন, তাহলে আপনার ওয়েবসাইটের র‍্যাঙ্কিং নির্ধারণ করার সময় Google এই ব্যাকলিঙ্কগুলিকে গণনা করবে না ।

Unrelated meta description – যেকোনো আর্টিকেল বা কন্টেন্ট লিখার পরে আমরা ওয়েব পেজের ডেসক্রিপশন বা বিবরণের জায়গায় কন্টেন্টটি কোন বিষয়ের উপর লেখা হয়েছে সেই বিষয়ে একটি ছোট ডেসক্রিপশন দিয়ে থাকি। এই ডেসক্রিপশনের সাথে বারবার টার্গেটেড keyword ব্যবহার করা হয় যাতে সার্চ ইঞ্জিনে দ্রুত ranking পাওয়া যায়। মেটা description এর ভেতরে targeted keywords ব্যবহার করা প্রয়োজন । তবে বারবার সেম কীওয়ার্ড ব্যবহার করা বা অপ্রাসঙ্গিক কীওয়ার্ড ব্যবহার করাটা একটি স্প্যাম technique.

Doorway pages – ডোরওয়ে পেজ হল একটি ব্ল্যাক হ্যাট এসইও টেকনিক । ডোরওয়ে পেজগুলোকে নিম্ন-মানের পেজ হিসাবে বিবেচনা করা হয়, যা ভিজিটর এবং কন্টেন্টের মধ্যে একটি দরজা হিসাবে কাজ করে ৷ এই ধরণের পেজ গুলো মূলত এক ধরনের ফেক পেজ । অর্থাৎ, একজন ব্যবহারকারী বা ভিজিটর এই ধরণের পেজ গুলোকে দেখতে পারেনা, তবে সার্চ ইঞ্জিন বট গুলো এই পেজ গুলোকে পড়তে বা read করতে পারে। কোনো বিশেষ কি-ওয়ার্ডের জন্য সার্চ ইঞ্জিন এর ইনডেক্স টিকে হেরফের করে র‍্যাঙ্কিং এ আসার জন্য এই pages গুলো তৈরি করা হয়। এক্ষেত্রে মূলত, সার্চ ইঞ্জিন এর মধ্যে থেকে কোনো কীওয়ার্ড এর জন্য অনুপযুক্ত ভাবে ওয়েবসাইটের র‍্যাঙ্কিং বৃদ্ধি করে ট্রাফিক গ্রহণ করা হয়।

হিডেন টেক্সট – হিডেন টেক্সট অর্থ হল লুকানো লেখা । এই ব্ল্যাক হ্যাট এসইও কৌশলটি অনেকটা কীওয়ার্ড স্টাফিংয়ের মত । এই ক্ষেত্রে, হিডেন টেক্সটগুলো শুধুমাত্র সার্চ ইঞ্জিনে প্রদর্শিত হয় । কারণ ওয়েবসাইটের ওনাররা, তাদের ওয়েবসাইটের ব্যাকগ্রাউন্ডের কালার এবং টেক্সটের কালারগুলো সেম করে কীওয়ার্ডগুলি অতিরিক্ত ব্যবহার করে । এছাড়া তারা লেখার ফন্টের সাইজ ছোট করে দেয় এবং হিডেন ট্যাগ ইউজ করে বেশি করে কীওয়ার্ড ব্যবহার করে । এর ফলে সেই কীওয়ার্ডগুলো ভিজটরদের কাছে দৃশ্যমান হয় না, কিন্তু সেই টেক্সটগুলো সার্চ ইঞ্জিনের কাছে ঠিকই দৃশ্যমান হয় এবং সার্চ ইঞ্জিন বট, এই জাতীয় টেক্সটগুলোকেও স্ক্রল করে ।

তবে এটা করা সার্চ ইঞ্জিনের নিয়মের সম্পূর্ণ বিরুদ্ধে । আপনি যদি এটি করেন তবে আপনি কিছু দিনের জন্য সার্চ ইঞ্জিনে ভাল র‍্যাঙ্কিং পেতে পারেন, তবে পরবর্তীতে আপনি ধরা পড়ে যাবেন । আপনি সাধারণ ব্যবহারকারীদের থেকে টেক্সট লুকিয়ে রাখতে পারবেন, কিন্তু যদি আপনার কন্টেন্ট কোন হাইলি স্কিলড ওয়েবসাইট ডেভেলপারের কাছে যায়, সেক্ষেত্রে আপনি ধরা পরে যাবেন এবং সেই ডেভেলপার আপনার ওয়েবসাইটের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করতে পারে । তাই এই ধরনের ব্ল্যাক হ্যাট এসইও টেকনিক ইউজ করা থেকে বিরত থাকুন ।

লিঙ্ক ফার্মিং লিঙ্ক ফার্মিং হল আরও একটি ব্ল্যাক হ্যাট এসইও টেকনিক, যার অধীনে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা হয় শুধুমাত্র ব্যাকলিংক পাওয়ার উদ্দেশ্যে । উদাহরণ স্বরূপ, ধরুন আপনি ১৫ টি ওয়েবসাইট তৈরি করেছেন এবং পর্যায়ক্রমে সবগুলো ওয়েবসাইটকে একে অপরের সাথে লিঙ্কিং করেছেন । এর ফলে আপনার ওয়েবসাইটটি ১৫ টি ওয়েবসাইট থেকে ব্যাকলিংক পেয়েছে । অনেকে শুধুমাত্র একটি ওয়েবসাইটকে ব্যাকলিংক দেওয়ার জন্য অনেকগুলো ওয়েবসাইট তৈরি করে থাকেন ।

লিঙ্ক ফার্মিংয়ের জন্য তৈরি ওয়েবসাইটগুলিতে বেশিরভাগই লো কোয়ালিটির কন্টেন্ট থাকে এবং প্রতিটি আর্টিকেলে প্রচুর পরিমাণে আউটবাউন্ড লিঙ্ক থাকে । কিন্তু ব্যাকলিংক জেনারেট করার এই ধরনের পদ্ধতিগুলিকে স্প্যাম হিসাবে বিবেচনা করা হয় । অনৈতিকভাবে ব্যাকলিংক তৈরি করলে সার্চ ইঞ্জিন দ্বারা আপনার ওয়েবসাইটকে পানিশমেন্ট দেওয়া হতে পারে ।

স্ক্র্যাপ কন্টেন্ট – স্ক্র্যাপ কন্টেন্ট অর্থ হল, ওয়েবসাইটে এমন কন্টেন্ট পাবলিশ করা, যার মূলত কোনো মূল্য নেই । এটি একেবারে ব্ল্যাক হ্যাট এসইও কৌশল, কারণ আপনিও জানেন যে Google সবসময় ইউনিক কন্টেন্ট পছন্দ করে । স্ক্র্যাপ কন্টেন্ট হল এমন ধরনের কন্টেন্ট, যা অন্য কোন ওয়েবসাইট বা ব্লগ থেকে কপি করা হয়েছে বা কোন টুলের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে । গুগল ২০১১ সালে, এই ধরনের অনৈতিক কার্যকলাপ প্রতিরোধ করতে গুগল পান্ডা অ্যালগরিদম চালু করেছিল । এই আপডেটের পরে, লো কোয়ালিটি কন্টেন্ট ব্যবহার করা সাইটগুলিকে পানিশমেন্ট দেওয়া হয়েছিল ৷ যার ফলে তাদের ট্রাফিক তাৎক্ষণিকভাবে কমে গিয়েছিল ।

আপনি যদি অন্য কোন সাইট থেকে আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগের জন্য আর্টিকেল কপি করেন বা কোনও টুলসের মাধ্যমে কন্টেন্ট তৈরি করে আপনার সাইটে পাবলিশ করেন, তাহলে পরবর্তীতে আপনার সাইটের সমস্যা হতে পারে । তাই সব সময়, ভিজিটরদের জন্য উপকারী, পড়তে সহজ এবং ইউনিক কন্টেন্ট লিখে সাইটে পাবলিশ করুন । 

আরও পড়ুনঃ কীভাবে আপনার ব্লগ Google এ র‍্যাঙ্ক করবেন

হোয়াইট হ্যাট এসইওতে ব্যবহৃত কৌশল

আমরা আপনাদের আগেই বলেছি যে, হোয়াইট হ্যাট এসইও সার্চ ইঞ্জিনের সকল নিয়ম মেনে করা হয় । এই নীতিগুলির মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নীতিটি হল “সার্চ ইঞ্জিনের জন্য নয়, ভিজিটরদের উপকার করার জন্য আপনার ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়েছে” । কীওয়ার্ড রিসার্চ, ব্যাকলিংক, ইউনিক কন্টেন্ট, লিংক বিল্ডিং ইত্যাদি হল গুরুত্বপূর্ণ হোয়াইট হ্যাট এসইও টেকনিক ।আসুন আমরা, হোয়াইট হ্যাট এসইও টেকনিকের বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক ।

হোয়াইট হ্যাট এসইও-এর মধ্যে সর্বাধিক ব্যবহৃত কিছু কৌশল নীচে দেওয়া হল-

  • কীওয়ার্ড রিসার্চ
  • কোয়ালিটি কন্টেন্ট
  • ব্যাকলিংক
  • অন ​​পেজ অপ্টিমাইজেশান
  • অফ পেজ অপ্টিমাইজেশান

কীওয়ার্ড রিসার্চ কীওয়ার্ড রিসার্চ হল অন্যতম প্রধান হোয়াইট হ্যাট এসইও টেকনিক । কীওয়ার্ড রিসার্চ না করে এবং কীওয়ার্ডের যথাযথভাবে ব্যবহার না করে, সার্চ ইঞ্জিনে ভালো অবস্থানে যাওয়া অসম্ভব । কীওয়ার্ড রিসার্চ করার সময়, ভিজিটররা কী লিখে সার্চ করে এবং তাদের কী ধরনের তথ্য বা ডেটা প্রয়োজন, সেদিকে মনোযোগ দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ । কীওয়ার্ড রিসার্চ করার পর, আপনার লেখা আর্টিকেলে, সেই কীওয়ার্ডগুলো ব্যবহার করুন । এটি একটি হোয়াইট হ্যাট এসইও টেকনিক, এই টেকনিক ইউজ করলে কোন সার্চ ইঞ্জিন, কখনই আপনার সাইটকে পানিশমেন্ট দেবে না । এটি আপনার ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনে র‍্যাঙ্ক করানোর বৈধ উপায় ।

কোয়ালিটি কন্টেন্ট – কীওয়ার্ড রিসার্চ করার পর, সেই কীওয়ার্ডগুলো ব্যবহার করে, একটি কোয়ালিটি সম্পন্ন আর্টিকেল লিখুন । আপনার আর্টিকেলের মধ্যে ভিজিটরদের সমস্ত প্রশ্নের সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করুন । কন্টেন্ট সব সময় নিজে লিখুন । অন্য কোন সাইট বা ব্লগ থেকে কপি করা বা কোন টুলের মাধ্যমে তৈরি করা আর্টিকেলকে লো কোয়ালিটি কন্টেন্ট বলে ধরে নেয়া হয় । তাই অন্যের সাইট থেকে, পোস্ট কপি করা বন্ধ করুন । আর্টিকেলের মধ্যে প্রয়োজন অনুযায়ী কীওয়ার্ডগুলোকে আন্ডারলাইন, বোল্ড বা ইটালিক করুন এবং এর সেই সাথে পোস্টের মধ্যে আপনার সাইটের অন্য পোস্টের লিঙ্ক এড করুন । প্রয়োজনে ইমেজ এবং ভিডিও যুক্ত করুন, যাতে ভিজিটররা সহজেই বিষয়টি বুঝতে পারে । এছাড়াও গ্রামারের দিকে খেয়াল রাখুন । আর্টিকেলটি ছোট ছোট প্যারাগ্রাফে লিখুন । সঠিক টাইটেল এবং ডেসক্রিপশন ব্যবহার করেন । আর এই সব নিয়ম মেনে একটি কোয়ালিটি সম্পন্ন আর্টিকেল লিখলে আপনার পোস্ট অবশ্যই সার্চ ইঞ্জিনে র‍্যাঙ্ক করবে । আর এই সমস্ত পদ্ধতি আইনী, তাই আপনাকে ভবিষ্যতে আপনার সাইটের র‍্যাঙ্কিং নিয়ে চিন্তা করতে হবে না ।

ব্যাকলিংক – অন্য কোন ওয়েবসাইট বা ব্লগে, নিজেদের ওয়েবসাইটের লিংক পাবলিশ করার মাধ্যমে, আমরা আমাদের ওয়েবসাইটের জন্য একটি ব্যাকলিংক পাই । এর ফলে সার্চ ইঞ্জিনে আমাদের ওয়েবসাইটের মান বাড়ে এবং র‍্যাঙ্কিং ভালো হয় ।যখন কোন ওয়েবসাইটের মালিক, তার নিজের ওয়েবসাইটে একটি আর্টিকেল লিখেন এবং এটিতে আপনার ওয়েবসাইটের একটি লিঙ্ক দেন তখন আপনার সাইটের একটি ব্যাকলিংক তৈরী হয় । এখন আপনারা নিশ্চই ভাবছেন যে, কিভাবে ব্যাকলিংক পাওয়া যায় ।

আপনি বিভিন্ন ভাবে ব্যাকলিংক পেতে পারেন, যেমন – কমেন্ট, ফোরাম, গেস্ট পোস্ট ইত্যাদির মাধ্যমে অন্য ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার ওয়েবসাইটের একটি লিঙ্ক দিতে পারেন । এভাবে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের হোম পেজ বা যে কোন পোস্টের লিঙ্ক দিতে পারেন । এই টেকনিকটি হোয়াইট হ্যাট এসইও বিভাগের অধীনে আসে । সার্চ ইঞ্জিনের কাছে, যেকোনো সাইট বা ব্লগের গুরুত্ব এবং গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে ব্যাকলিংক খুবই গুরুত্বপূর্ণ । 

অন ​​পেজ অপ্টিমাইজেশান – একটি কীওয়ার্ডের মাধ্যমে, কোন পোষ্টকে সার্চ ইঞ্জিনে র‍্যাঙ্কিং করানোর জন্য, শুধুমাত্র কোয়ালিটি কন্টেন্ট লেখাই যথেষ্ট নয় ৷ সেই সাথে মেটা ডেসক্রিপশন, টাইটেল ট্যাগ এবং ইমেজের জন্য Alt ট্যাগের মতো আরও কিছু অন পেজ এসইও ফ্যাক্টর রয়েছে, যেখানে কীওয়ার্ডগুলি অন্তর্ভুক্ত করা উচিত । এর মধ্যে কিছু জিনিস আপনার আর্টিকেল সম্পর্কে সার্চ ইঞ্জিনে সংকেত পাঠায় ।

আপনি যদি আপনার সাইটের সবগুলো পোস্ট এবং পেজে ইন্টারনাল লিঙ্কিং করেন, তবে এটি আপনার সাইটের ভিজিটরদের সাইটটি নেভিগেট করতে সাহায্য করে এবং ভিজিটররা তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী অন্যান্য পোস্ট পড়তে পারে । আপনি ইন্টারনাল লিঙ্কের অ্যাঙ্কর টেক্সট হিসেবে কীওয়ার্ড ব্যবহার করতে পারেন । আপনি যে পেজের লিঙ্ক করছেন তার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ অ্যাঙ্কর টেক্সট ব্যবহার করুন ।

অফ পেজ অপ্টিমাইজেশান অফ পেজ অপ্টিমাইজেশান বলতে এমন ফ্যাক্টরগুলিকে বোঝায়, যেগুলি আপনার ওয়েবসাইটের মধ্যে নেই, কিন্তু আপনার ওয়েবসাইটের জন্য এগুলো অত্যন্ত জরুরী ৷ এর মধ্যে রয়েছে, আপনার সাইটের লিংক বিভিন্ন ডিরেক্টরিতে সাবমিট করা এবং বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে ওয়েবসাইটের লিঙ্ক শেয়ার করা । এই দুটি কাজের মাধ্যমে খুব ভাল ফলাফল পাওয়া যায় । এছাড়াও, ব্যাকলিংক হল অফ পেজ অপ্টিমাইজেশনের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ।

আপনি যদি এই সমস্ত হোয়াইট হ্যাট এসইও কৌশলগুলি ব্যবহার করেন, তবে আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগের র‍্যাঙ্কিং অবশ্যই উন্নত হবে । হোয়াইট হ্যাট এসইও টেকনিকগুলো কিছুটা ঝামেলাপূর্ণ এবং সময়সাপেক্ষ মনে হতে পারে, তবে আপনার ওয়েবসাইটের ভবিষ্যতের জন্য এটি ভাল হবে ।

শেষ কথা

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা, ব্ল্যাক হ্যাট এসইও এবং হোয়াইট হ্যাট এসইও সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি এবং সেই সাথে হোয়াইট হ্যাট এসইও এবং ব্ল্যাক হ্যাট এসইও টেকনিক সম্পর্কেও বলেছি । আমরা আশা করছি, আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা, ব্ল্যাক হ্যাট এসইও এবং হোয়াইট হ্যাট এসইও সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেড়েছেন এবং আপনার সাইটের জন্য কোনটি ভাল হবে সেটাও বুঝতে পেড়েছেন । তবে আমরা আপনাদের, ব্ল্যাক হ্যাট এসইও টেকনিক ইউজ না করার পরামর্শ দেব । আর্টিকেলটি নিয়ে যে কোন ধরনের প্রশ্ন বা মন্তব্য থাকলে কমেন্ট সেকশনে জানান । ধন্যবাদ

Share on:
Avatar photo

Hello Friends, I am James harden, the founder of this site. This blog provides accurate and precise information on Technology, Banking, Insurance, Tips & Tricks, Online Earning, Computer troubleshooting and much more.

Leave a Comment