বর্তমান আধুনিকতা এবং প্রতিযোগিতার যুগে একটি কার্যকর ব্যক্তিত্ব অনেক গুরুত্বপূর্ণ। একটি আকর্ষণীয় শরীর যে কাউকে আকৃষ্ট করতে পারে, যার জন্য ফিট থাকা খুবই জরুরি। দেখা গেছে স্থূলতার পাশাপাশি শরীরের চর্বিহীনতা ব্যক্তিত্বকে খারাপভাবে প্রভাবিত করে। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে এটি উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আপনিও যদি চিকন হওয়ার সমস্যায় পড়ে থাকেন এবং সবকিছু চেষ্টা করে থাকেন, তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার সমস্যার সমাধান করতে পারে। আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সাথে মোটা হওয়ার সহজ উপায় কি এই সম্পর্কে বলব, যেগুলোর অনুসরন করে আপনারা খুব সহজেই প্রাকৃতিক ভাবে আপনাদের ওজন বাড়াতে পারবেন।
Table of Contents
ওজন কম হওয়ার কারণ
শরীরের চিকন হওয়ার পেছনে অনেক রকম কারণ থাকতে পারে। নিচে শরীর চিকন হওয়ার কিছু কারণ দেওয়া হল –
- পুষ্টির অভাব
- চিন্তা
- ক্ষুধামান্দ্য
- ক্যান্সার এবং ডায়াবেটিসের মতো রোগ
- ডায়রিয়ার মতো সংক্রমণের দীর্ঘমেয়াদী এক্সপোজার।
- অগ্ন্যাশয় সংক্রমণ
- ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (কেমোথেরাপি বা থাইরয়েড ওষুধ)
- দুশ্চিন্তা
পাতলা হওয়ার কারণ জানার পর চলুন জেনে নেওয়া যাক দ্রুত মোটা হওয়ার উপায়গুলো।
মোটা হওয়ার সহজ উপায় – ওজন বাড়ানোর ঘরোয়া উপায়
প্রাকৃতিক ভাবে ওজন বাড়াতে চাইলে খাবারের তালিকায় পুষ্টিকর খাবার যোগ করতে পারেন । নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খেলে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি পাবে। ওজন কমানোর থেকে কিন্তু ওজন বাড়ানো অনেক বেশী সহজ। আর এটি করার জন্য সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন সঠিক ডায়েট। কিছু মোটা হওয়ার সহজ উপায় নিচে দেওয়া হল ।
মোটা হতে বেশি পরিমাণে ক্যালোরি গ্রহন করুন
মোটা হওয়ার বা ওজন বাড়ানোর সবচেয়ে সহজ উপায় হলো অতিরিক্ত পরিমাণে ক্যালোরি গ্ৰহন করা। ওজন বৃদ্ধি করার জন্য শরীরের প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ক্যালোরি গ্রহণ করতে হবে। দ্রুত ওজন বাড়াতে চাইলে শরীরের চাহিদার তুলনায় প্রতিদিন ৫০০-৭০০ ক্যালোরি বেশি গ্রহন করতে হবে। আর যদি ধীরে ধীরে ওজন বাড়াতে চান তাহলে শরীরের চাহিদার তুলনায় প্রতিদিন ৩০০-৫০০ ক্যালোরি বেশি গ্রহণ করুন।
ঘি এবং চিনি
ওজন বৃদ্ধি করার জন্য আপনি ঘি ও চিনি খেতে পারেন। এটি ওজন বাড়ানোর একটি প্রাকৃতিক উপায়, যা বহু শতাব্দী ধরে স্বাস্থ্যের জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ওজন বাড়ানোর জন্য এক চামচ ঘিতে এক চামচ চিনি ভালো করে মিশিয়ে নিন। খাবারের আধা ঘণ্টা আগে এই মিশ্রণটি সেবন করুন। এক মাসের জন্য প্রতিদিন এই মিশ্রণটি গ্রহন করুন। ক্যালরি এবং চর্বি শরীরের ওজন দ্রুত বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ঘি এবং চিনি এই উভয় পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ, যা আপনার শরীরের ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে ।
আম এবং দুধ
চিকন ব্যক্তিরা আম এবং দুধ একসাথে গ্রহন করুন। এই দুটি উপাদানই ওজন বৃদ্ধিকারী পুষ্টিগুণে ভরপুর। মোটা হওয়ার উপায় হিসেবে প্রতিদিন দুটি পাকা আম খান। আম খাওয়ার পর পরই গরম দুধ পান করুন। অল্প কিছু দিনের মধ্যেই, আপনি আপনার শরীরের পরিবর্তন দেখতে শুরু করবেন। দুধে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্যাট পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায়, যা আপনাকে ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে। একই সাথে আম চর্বি এবং ক্যালোরি সমৃদ্ধ, যা ওজন বৃদ্ধির সাথে সাথে আপনার হজম ঠিক রাখতেও কাজ করে।
ওজন বাড়ানোর জন্য কার্বোহাইড্রেড
ওজন দ্রুত বাড়ানোর জন্য কার্বোহাইড্রেড প্রয়োজন। মোটা হওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো খাবারের তালিকায় কার্বোহাইড্রেড যুক্ত খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন। যেমন ভাত এবং রুটি ইত্যাদি কার্বোহাইড্রেডের প্রধান উৎস। মোটা হতে চাইলে প্রতিদিন অন্তত ২ – ৩ বার কার্বোহাইড্রেড যুক্ত খাবার গ্রহন করুন।
অশ্বগন্ধা
অশ্বগন্ধা মোটা হওয়ার একটি কার্যকর উপায়। এটি একটি আয়ুর্বেদিক ওষুধ, যা আপনার শরীরের ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।এক গ্লাস গরম দুধে আধা চা চামচ অশ্বগন্ধা গুঁড়ো মিশিয়ে প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে খান। স্বাদের জন্য আপনি এতে এক চামচ মধুও যোগ করতে পারেন। এভাবে নিয়মিত অশ্বগন্ধা সেবন করলে শীঘ্রই ভালো ফল পাওয়া যাবে। আপনারা জানেন যে স্ট্রেস ওজন কম হওয়ার অন্যতম কারণ । অশ্বগন্ধা একটি অ্যান্টি-স্ট্রেস হিসাবে কাজ করে, যা শরীরকে চাপ থেকে মুক্তি দেয়।এছাড়াও এটি পেট সংক্রান্ত সমস্যা থেকে মুক্তি দিয়ে হজম প্রক্রিয়াকেও উন্নীত করতে পারে। এতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য শরীরকে ফ্রি র্যাডিক্যাল থেকে দূরে রাখতে কাজ করে। একটি সমীক্ষা অনুসারে, দুধের সাথে অশ্বগন্ধা সেবন করলে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায় ( তথ্যসূত্র )।
ওজন বাড়াতে সঠিক প্রোটিন গ্রহণ করুন
মোটা হওয়ার জন্য প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় প্রোটিনজাতীয় খাবার রাখুন যেমন ডিম, ডাল এবং দুধ ইত্যাদি। এই খাবার গুলো আপনার শরীরের ওজন বাড়াতে খুব কার্যকরী। প্রোটিন যুক্ত খাবার গ্রহন করার পাশাপাশি ক্যালরি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত।
আরও পড়ুনঃ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার এবং শরীরে প্রোটিনের ভূমিকা
চিনাবাদাম এবং মাখন
আপনি ওজন বাড়ানোর উপায় হিসাবে চিনাবাদাম এবং মাখন খেতে পারেন। ওজন বাড়ানোর জন্য আপনি আপনার দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় পিনাট বাটার অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। সকালের নাস্তায় পিনাট বাটার দিয়ে ব্রাউন ব্রেড খেতে পারেন। চিনাবাদাম এবং মাখন ক্যালরির একটি বড় উৎস। 100 গ্রাম পিনাট বাটারে 598 ক্যালোরি পাওয়া যায়। এছাড়াও, এটি ফ্যাট, প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেটের মতো পুষ্টিতেও সমৃদ্ধ, যা আপনার শরীরের ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।
কলা এবং দুধ
ওজন বাড়ানোর ঘরোয়া উপায় হিসেবে আপনি কলা এবং দুধ বেছে নিতে পারেন। প্রতিদিন সকালের নাস্তায় দুটি কলা ও এক গ্লাস গরম দুধ পান করুন। স্বাদের জন্য আপনি দুধে এক চামচ মধু যোগ করতে পারেন। এভাবে নিয়মিত কলা ও দুধ খেলে তাড়াতাড়ি ভালো ফল পাওয়া যায়। কলা এবং দুধে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি রয়েছে ( তথ্যসূত্র ) যা আপনার ওজন বাড়ানোর পাশাপাশি, আপনার কাজের ক্ষমতাও বাড়াবে। এছাড়াও কলা আপনার হজমের ক্ষমতা বাড়াবে, কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে।
ওজন বাড়াতে বেশী পরিমাণ ঘুমান:
পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম সুস্থ স্বাস্থ্যের জন্য খুবই জরুরী। প্রতিদিন কমপক্ষে ৭-৮ ঘন্টা ঘুম অবশ্যই আপনার শরীরের জন্য প্রয়োজন। এছাড়াও ঘুম থেকে উঠে প্রতিদিন ব্যায়াম করা আপনার স্বাস্থের জন্য খুব উপকারী। দ্রুত ওজন বাড়াতে প্রতিদিন বেশী পরিমাণে ঘুমান । সম্ভব হলে দুপুরে খাবার পরে ১-২ ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। দুপুরে খাবার পরে ঘুমালে শরীরে বিশ্রাম আসবে এবং হারানো শক্তি মেকআপ হবে। মাত্র কয়েক ঘণ্টার ঘুম ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। মোটা হওয়ার উপায় হিসেবে আপনাকে অবশ্যই রাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে।
বাদাম ও কিসমিস
সহজে মোটা হওয়া বা ওজন বাড়ানোর জন্য বাদাম ও কিসমিসের অনেক উপকারিতা রয়েছে। ওজন দ্রুত বাড়াতে প্রতিদিন খাবারের তালিকায় বাদাম ও কিসমিস যুক্ত করুন। দিনের যেকোনো সময় আপনারা এই বাদাম এবং কিসমিস খেতে পারেন । তবে সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে খেয়ে নিলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। বাদাম ও কিসমিসে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি রয়েছে যা আপনার শরীরের ওজন বাড়াতে দ্রুত কাজ করবে । এছাড়াও এগুলোতে থাকা ফাইবার, প্রোটিন, ওমেগা-৩, ভিটামিন ই এবং ফ্যাটি এসিডের মত পুষ্টিকর উপাদান আপনার স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। তাই দ্রুত মোটা হতে চাইলে নিয়মিত বাদাম ও কিসমিস খাওয়া শুরু করুন।
বেশী পরিমাণে ভাত খান
সহজে ওজন বাড়ানোর জন্য তিন বেলা বেশী পরিমাণে ভাত খান। ভাতে প্রচুর পরিমানে ফ্যাট এবং কার্বোহাইড্রেট রয়েছে যা দ্রুত মোটা হওয়ার জন্য খুব কার্যকরী।
চিনি বা মিস্টি জাতীয় খাবার গ্রহন করুন
মিষ্টি বা চিনি জাতীয় খাবার সহজে ওজন বাড়ানোর জন্য খুব কার্যকরী ভুমিকা পালন করে। কারণ চিনি বা মিস্টি জাতীয় খাবারে ক্যালরির পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে চিনি বা মিষ্টি যুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ সহ আরো বিভিন্ন ধরনের রোগের লক্ষণ দেখা দিতে পারে । তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে চিনি যুক্ত খাবার গ্ৰহন করুন।
বেশী করে আলু খান
দ্রুত ওজন বাড়ানোর জন্য আলুর কোন বিকল্প নেই। আলুতে প্রচুর পরিমাণে শর্করা রয়েছে যা আপনাকে সহজে এবং দ্রুত মোটা হতে সাহায্য করবে। মোটা হওয়ার সহজ উপায় হলো প্রতিদিন খাবারের সাথে বেশী পরিমাণে আলু খাওয়ার চেষ্টা করুন।
তেলে জাতীয় খাবার গ্রহন করুন
তেল যুক্ত খাবার গুলো খেলে দ্রুত মোটা হওয়া যায়।। এছাড়াও ফাস্ট ফুড জাতীয় খাবার মানুষের শরীরকে দ্রুত মোটা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দ্রুত মোটা হওয়ার জন্য তেল জাতীয় খাবার যেমন বার্গার, সিংগারা, পিয়াজু, পেস্ট্রি, পিৎজা এবং পুরি ইত্যাদি প্রচুর পরিমাণে খাওয়া শুরু করুন।
চর্বি যুক্ত মাংস গ্রহন করুন
মাংসপেশী এবং শরীরের ওজন বৃদ্ধিতে লাল মাংস খুব কার্যকরী। গরুর এবং খাসির মাংসে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং ফ্যাট দুটোই থাকে যা ওজন বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। তাই দ্রুত ওজন বাড়াতে সপ্তাহে কমপক্ষে ১ দিন চর্বিসহ লাল মাংস গ্রহন করুন।
শাকসবজি গ্রহন করুন
মোটা হওয়ার জন্য বেশ কয়েকটা শাকসবজি রয়েছে তার মধ্যে- মিষ্টি কুমড়া, আলু, কাচা কলা, মিষ্টি আলু, সিম, কচু মুখি, কলার মোচা ইত্যাদি। এই ধরনের শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি রয়েছে যা আপনার দ্রুত ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে।
দুধ ও মধু
দুধ ও মধু দ্রুত ওজন বাড়াতে খুব কার্যকরী। দুধ ও মধু তে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে যা দ্রুত মোটা হতে সাহায্য করে। প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে নিয়মিত দুধের সাথে মধু মিশিয়ে গ্রহন করুন। এছাড়াও সকালে ঘুম থেকে উঠে ঠান্ডা পানির সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। প্রতিদিন ঠান্ডা পানির সাথে মধু মিশিয়ে খেলে আপনার ওজন দ্রুত বৃদ্ধি পাবে।
বেশি পরিমাণে খাবার গ্রহন করুন
আপনার শরীরের ওজন বৃদ্ধি করার জন্য বেশী বেশী পরিমাণে খাবার গ্রহন করুন। আপনি যদি অল্প পরিমান খাবার খাওয়ার কারণে রোগা বা পাতলা হয়ে থাকেন, তাহলে খাবার খাওয়ার পরিমাণ বৃদ্ধি করুন। বেশী বেশী খাবার খাওয়ার পাশাপাশি মোটা হওয়ার জন্য আপনার খাবার খাওয়ার অভ্যাস পরিবর্তন করা খুব জরুরি। অনেকে বলেন যে বারবার অল্প অল্প করে খাবার খেলে দ্রুত ওজন বাড়ে কিন্তু কথাটি একেবারেই সত্য নয়। অল্প অল্প করে বারবার খাবার গ্রহন করলে মেটাবলিজাম বৃদ্ধি হয় যার ফলে শরীরের ওজন ধীরে ধীরে কমে যায়।
তাই নিয়মিত বেশী পরিমাণে খাবার খেলে মেটাবলিজাম কমে শরীরে চর্বি জমা শুরু হবে। যার ফলে শরীরের ওজন ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করবে এবং আপনি মোটা হতে থাকবেন।
মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন
ওজন কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ হল মানসিক চাপ । মানসিক চাপে আক্রান্ত ব্যক্তি খাবার ও পানীয় কম পরিমাণে গ্রহন করে। যার ফলে ওজন কমে যায়। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে বা ওজন বৃদ্ধি করতে যতটা সম্ভব মানসিক চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করুন।এর জন্য আপনি প্রতিদিন মর্নিং ওয়াক ও যোগাসন করতে পারেন। মানসিক চাপ দূর করতে মর্নিং ওয়াক খুব ভাল কাজ করে।
আরও পড়ুনঃ ফ্যাটি লিভার কি এবং ফ্যাটি লিভারের ডায়েট চার্ট
মোটা হওয়ার টিপস – ওজন বাড়ানোর টিপস
মোটা হওয়ার উপায় হিসাবে, এই টিপসগুলি আপনারা ফলো করতে পারেন –
- ওজন বাড়ানোর জন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাস থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনার দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় উচ্চ ক্যালোরি এবং উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করুন।
- সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার এবং রাতের খাবারের মধ্যে বাদাম এবং আখরোট খেতে থাকুন। আপনার শরীর যত বেশি ক্যালোরি গ্রহণ করবে, তত বেশি ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে।
- খাবার আগে বেশি পানি পান করবেন না, বেশি পানি পান করলে বেশি খাবার খেতে পারবেন না।
- যতটা সম্ভব শরীরকে বিশ্রাম দিন, রাতে কমপক্ষে ৭-৮ ঘন্টা ঘুমান। দুপুরে খাবার পরে কমপক্ষে ১ ঘন্টা ঘুমান ।
- ধূমপান থেকে দূরে থাকুন, কারণ এটি ক্ষুধা নিবারক হিসেবে কাজ করতে পারে।
- প্রতিদিন ধীরে ধীরে খাবারের পরিমাণ বাড়ান। এটি আপনার শরীরের ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে।
- আপনি একজন বিশেষজ্ঞ ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শে ওজন বাড়ানোর সাপ্লিমেন্ট গ্রহন করতে পারেন।
- একজন ডায়েটিশিয়ানের সাহায্যে আপনি একটি ডায়েট চার্ট অনুসরণ করতে পারেন।
- আপনার খাবার এবং পানীয়ের একটি রেকর্ড রাখুন, যাতে আপনি জানতে পারেন আপনি দিনে কত ক্যালরি গ্রহন করছেন।
নোটঃ আপনারা ফেসবুক, টিভি বা নিউজপেপারে ৭ থেকে ১ মাসের মধ্যে মোটা হওয়ার অনেক বিজ্ঞাপন দেখতে পাবেন। দয়া করে এইগুলো গ্রহন করবেন না। এই ধরনের চটকদার বিজ্ঞাপন থেকে সম্পূর্ণ ভাবে দূরে থাকুন । এই ধরনের বিজ্ঞাপণের ওষুধ বা সাপ্লিমেন্ট গ্রহন করলে হয়ত আপনি সাময়িক ভাবে মোটা হতে পারবেন কিন্তু এগুলোর অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে । যার কারণে আপনার অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তাই যদি মোটা হওয়ার জন্য কোন ওষুধ বা সাপ্লিমেন্ট গ্রহন করতে চান তাহলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বা ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ নিন।
শেষ কথা
ওজন কমানোর চেয়ে কিন্তু ওজন বাড়ানো অনেক সহজ সহজ। যদিও মোটা না হওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে তবে উপরে উল্লিখিত পদ্ধতি গুলো অনুসরন করে আপনারা প্রাকৃতিক ভাবে আপনাদের শরীরের ওজন বৃদ্ধি করতে পারেন।
দ্রুত মোটা হওয়ার জন্য অনেকে ওষুধ গ্রহন করে থাকেন, তবে এই সব ওষুধের অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। তাই মোটা হওয়ার জন্য ওষুধ গ্রহন না করাই উচিত । তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সাথে মোটা হওয়ার কিছু ঘরোয়া প্রাকৃতিক উপায় সম্পর্কে বলেছি । আমরা আশা করি এই গুলোর মাধ্যমে আপনারা আপনাদের শরীরের ওজন বৃদ্ধি করতে পারবেন।
আর্টিকেলটি নিয়ে যে কোন ধরনের প্রশ্ন বা মন্তব্য থাকলে কমেন্ট সেকশনে জানান।
ধন্যবাদ ।