পৃথিবী সবসময় তার আপন গতিতে চলছে । সেটি দিন হোক বা রাত, পৃথিবী তার নিজের মতই চলবে । কিন্তু এর মধ্যেই কিছু কিছু সময়, আমাদের সাথে ঘটে যায় কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা । আর এই সমস্ত ঘটনার কারণে আমরা নিজেদের অভাগা মানুষ মনে করি ! কিন্তু আজকের আর্টিকেলে, আমরা আপনাদের এমন একজন ব্যক্তির সম্পর্কে বলব, যাকে বলা হয় ‘ইতিহাসের সবচেয়ে দুর্ভাগা ব্যক্তি’ । এই মানুষটির সম্পর্কে জানলে আপনি আর কখনোই নিজেকে দুর্ভাগা বলে মনে করবেন না ।
বিশ্বের সবচেয়ে দুর্ভাগা মানুষ
আজকের আর্টিকেলে আমরা, ব্রিটেনের ওয়াল্টার সামারফোর্ড নামে এক ব্যক্তির কথা বলব । যাকে পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্ভাগা ব্যক্তি বলে মনে করা হয় । সামারফোর্ড ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর একজন অফিসার ছিলেন । এই ব্যক্তির সাথে তিনটি একইরকম ঘটনা ঘটেছিল, যার কারণে তাকে পৃথিবীর সবচেয়ে ‘অভাগা’ হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছিল এবং শুধু তাই নয়, মৃত্যুর পরেও তার সাথে একই ঘটনা ঘটেছিল ।
ওয়াল্টার সামারফোর্ডের সাথে প্রথম ঘটনাটি ঘটেছিল 1918 সালে । তখন তিনি বেলজিয়ামে কর্মরত ছিলেন । একদিন তিনি ঘোড়ায় চড়ে বেড়াচ্ছিলেন । এমন সময় তার উপর বজ্রপাত হয়, যার ফলে তার কোমরের নীচের অংশ অবশ হয়ে যায় । যদিও কয়েক মাসের মধ্যে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং পুনরায় হাঁটা শুরু করেন । কিন্তু তার আগেই সেনাবাহিনী থেকে তাকে অব্যাহতি দিয়ে দেওয়া হয় ।
ওয়াল্টার সামারফোর্ডের সাথে দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটেছিল প্রথম ঘটনার ঠিক ছয় বছর পরে অর্থাৎ 1924 সালে । এ সময় তিনি কানাডায় তার নতুন জীবন শুরু করেন । একদিন তিনি বাড়ীর পাশের পুকুরে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন । সেখানে তিনি একটি গাছের নিচে বসে মাছ ধরছিলেন, এমন সময় হঠাৎ তার উপরে আবার বজ্রপাত হয় । এবার তার শরীরের ডান সাইড অবশ হয়ে যায় । তবে অলৌকিকভাবে তিনি দুই বছরের মধ্যে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে আবার হাঁটাচলা শুরু করেন ।
দ্বিতীয় ঘটনার ঠিক ছয় বছর পর অর্থাৎ 1930 সালে, ওয়াল্টার সামারফোর্ডের সাথে একই ধরনের ঘটনা আবারও ঘটে । এ সময় তিনি পার্কে হাঁটছিলেন এবং চারপাশের দৃশ্য উপভোগ করছিলেন । কিন্তু হঠাৎ করেই আবহাওয়া খারাপ হয়ে যায় এবং আকাশ কালো মেঘে ঢেকে যায় এবং এর মধ্যেই তার উপর তৃতীয় বারের মত বজ্রপাত হয় ।
তৃতীয়বার বজ্রপাত হওয়ার পর, তিনি দু’বছর জীবন সংগ্রাম করেছিলেন । কিন্তু অবশেষে তিনি জীবন যুদ্ধে হেরে যান এবং 1932 সালে মারা যান । ওয়াল্টার সামারফোর্ডের মৃত্যুর পর, তার আত্মীয়রা তাকে কানাডার ভ্যাঙ্কুভারের মাউন্টেন ভিউ কবরস্থানে দাফন করেন ।
আপনি জানলে অবাক হবেন যে তার মৃত্যুর পরেও বজ্রপাত তাকে ছাড়েনি এবং 1936 সালে আবারও তার কবরের উপর বজ্রপাত হয়, যার কারণে তার কবরের উপর রাখা পাথরটি ভেঙে যায় । এই ঘটনাটিও ঘটেছিল তৃতীয় ঘটনার ঠিক ছয় বছর পর ।
কিন্তু কেন প্রতি ছয় বছর ওয়াল্টার সামারফোর্ডের উপড় বজ্রপাত হত তা আজও একটা রহস্য হয়ে রয়ে গেছে । আর এই সমস্ত ঘটনার কারনেই তাকে বলা হয় ‘ইতিহাসের সবচেয়ে দুর্ভাগা মানুষ’।
আরও পড়ুনঃ কৈলাস পর্বত, কোন বিজ্ঞানী যার রহস্যকে উদঘাটন করতে পারেনি