আমরা যারা ব্লগিং করি বা যাদের ওয়েবসাইট আছে, তারা সবাই এসইও শব্দটির সাথে পরিচিত। সার্চ ইঞ্জিনে শীর্ষস্থানীয় হওয়ার জন্য এবং ওয়েবসাইটে আরো বেশী পরিমাণে অরগ্যানিক ট্রাফিক নিয়ে আসার জন্য ওয়েবসাইটের এসইও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। SEO এর পূর্ণরূপ হচ্ছে Search Engine Optimization (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন)। এবং এটি ব্লগ বা ওয়েবসাইটের কর্মক্ষমতাকে বৃদ্ধি করার একটি প্রক্রিয়া। তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব ব্লগিং এর সবচেয়ে ইম্পরট্যান্ট পার্ট এসইও নিয়ে। আমরা আরও জানব এসইও কী এবং ওয়েবসাইটের SEO করা কেন প্রয়োজন ?
বর্তমানে প্রায় ৮০% মানুষ ইন্টারনেটে গুগল বা তাদের পছন্দের সার্চ ইঞ্জিনে যেকোন সমস্যা, সমাধান, পরামর্শ বা অন্য কিছু সার্চ করে থাকে। সুতরাং এমন পরিস্থিতিতে, আপনি যদি একজন ব্লগার হন বা অনলাইনের মাধ্যমে আপনি ব্যবসা করেন, তাহলে আপনি অবশ্যই চাইবেন যে আপনার ওয়েবসাইটটি সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পৃষ্ঠায় থাকুক। যাতে আপনার ওয়েবসাইটে আরো বেশি বেশি অর্গানিক ট্রাফিক আসে এবং আপনার আয় ক্রমাগত বৃদ্ধি পায়। আর এই সার্চ ইঞ্জিনে শীর্ষ স্থানে থাকার জন্য, আপনাকে আপনার ওয়েবসাইটের আরও ভাল ভাবে SEO করতে হবে। আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইট সঠিকভাবে SEO করতে চান তাহলে প্রথমেই আপনার এসইও সম্পর্কে ভালো পরিমাণে জ্ঞান থাকা আবশ্যক। আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাকে Search Engine Optimization সম্পর্কে ধারনা দেয়ার চেষ্টা করব।
Table of Contents
এসইও (SEO) কী
SEO এর পূর্ণরূপ হল (SEARCH ENGINE OPTIMIZATION)। এর মাধ্যমে আপনি আপনার ওয়েবসাইট, ব্লক এবং ইউটিউব চ্যানেলে সার্চ ইঞ্জিন (গুগল, বিং ইত্যাদি) থেকে হাজার লাখেরও বেশি অরগ্যানিক ট্রাফিক আনতে পারবেন এবং ভালো আয় করতে পারবেন। সোজা কথায়, SEO হল ব্লগিং এর প্রাণ। যেমন আত্মা ছাড়া শরীর অকেজো হয়ে যায়। একইভাবে, এসইও ছাড়া আপনার ব্লকও অকেজো হয়ে যায়।
যখনই আমরা গুগলে কোন কিছু সার্চ করি, আমাদের সামনে একটা পেজ ওপেন হয়। উদাহরণস্বরূপ, ধরুন আপনি “করোনাভাইরাস কী” লিখে সার্চ করেছেন। সুতরাং করোনাভাইরাস সম্পর্কে আপনাকে ১০০% সঠিক তথ্য দেওয়া গুগলের দায়িত্ব হয়ে ওঠে এবং গুগলও সেটি করার চেষ্টা করে। এই জন্য, গুগল অ্যালগরিদম 1 সেকেন্ডেরও কম সময়ে এই ধরনের লক্ষ লক্ষ ওয়েবসাইট চেক করে দেখে, যেখানে করোনাভাইরাস সম্পর্কে সম্পূর্ণ এবং সঠিক তথ্য দেওয়া হয়েছে। এবং সেই সাইট গুলোর মধ্যে থেকে সবচেয়ে নির্ভুল তথ্য সমৃদ্ধ ওয়েবসাইট গুলোকে প্রথম পাতায় উপস্থাপন করে। এখন প্রশ্ন হলো, গুগল কিভাবে বুঝবে যে আপনার ওয়েবসাইট টি সবচেয়ে বেশী নির্ভুল তথ্য সমৃদ্ধ?
গুগল কে বোঝানোর এই কাজের প্রক্রিয়াটি মূলত এসইও (SEO) । অনলাইনে লক্ষ লক্ষ ওয়েবসাইট রয়েছে, কিন্তুু গুগলকে সবাই এই জিনিসটি বোঝাতে পারেনা যে, তাদের সাইটটি মেইনলি কোন বিষয় নিয়ে কাজ করছে। আর গুগল যতক্ষন পর্যন্ত আপনার ওয়েবসাইটের আসল বিষয়বস্তু বা টপিক সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝতে না পারবে, ততোক্ষণ পর্যন্ত আপনার ওয়েবসাইট কে গুগল সার্চ রেজাল্টের প্রথম সারিতে প্রদর্শন করবেনা।
আর গুগল কে বোঝানোর কাজটি সঠিকভাবে করার একমাএ উপায় হলো, এসইও। যখন আপনি আপনার ওয়েবসাইটকে সঠিক নিয়ম মেনে সার্চ ইন্জিনের জন্য প্রোপার অপটিমাইজ করবেন, তখন গুগল ঠিকই আপনার Website কে সার্চ রেজাল্টের প্রথম সারিতে প্রদর্শন করবে।
SEO কত প্রকার
SEO প্রধানত ৩ প্রকার
টেকনিক্যাল এসইও
একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইটে এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) করার ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল এসইও প্রথম আসে। টেকনিক্যাল এসইওর সাহায্যে, আপনার ওয়েবসাইটের বিষয়বস্তু খুব সহজে পড়া যায়। যার ফলে গুগলের ক্রলার খুব সহজে আপনার ওয়েবসাইট ক্রল করে বুঝতে পারে, যাতে সার্চ ইঞ্জিন আপনার ওয়েবসাইটকে একটি ভালো উচ্চমানের সাইট হিসেবে প্রদর্শন করে।
টেকনিক্যালি আপনার ওয়েবসাইটকে অপ্টিমাইজ করা কেই টেকনিক্যাল এসইও বলা হয়। যেমন, ওয়েবসাইটের গতি, সার্ভার কনফিগারেশন এবং ওয়েবসাইট সিকিউরিটি ইত্যাদি নিয়ে কাজ করা এবং সেগুলোর উন্নতি করাকে বলা হয় টেকনিক্যাল এসইও। বিশেষ করে টেকনিক্যাল এসইও হল আপনার সম্পূর্ণ ওয়েবসাইটের Structure উন্নত করার কৌশল।
টেকনিক্যাল এসইও এর মধ্যে যেসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে-
- ওয়েবসাইট আর্কিটেকচার – website architecture
- ওয়েবসাইটের গতি – website Speed
- নিরাপত্তা যেমন SSL – Security such as SSL
- ইনডেক্সিং – Indexing
- ক্রলবিলিটি – Crawlability
- ক্রলবিলিটি – Structured data
- মোবাইল বান্ধব – Mobile-friendly
অন পেজ SEO (On Page SEO)
অন পেজ SEO বলতে মূলত একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরি করা থেকে শুরু করে ডিজাইন, কন্টেন্ট রাইটিং, ওয়েবসাইট কাস্টমাইজেশন এবং সার্চ ইন্জিনে (যেমন- গুগল, বিং) ইন্ডেক্স করা পর্যন্ত যাবতীয় কাজ গুলোকে বোঝায়।
অন পেজ SEO এর মধ্যে যে বিষয় গুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে তা নিচে দেওয়া হল-
- কি প্রেস – Keyphrase
- টেক্সট লেন্থ – Text Length
- টাইটেল ট্যাগ – Title Tag
- মেটা ডেসক্রিপশন – Meta description
- হেডলাইন – headline
- হেডার ট্যাগ – Header Tag
- কন্টেন্ট – Content
- ইমেজ অপটিমাইজেশন – Image Optimization
- ইন্টারনাল লিঙ্ক – Internal Links
- আউট বাউন্ড লিঙ্ক – Outbound Links
- ইউআরএল অপটিমাইজেশন – URL Optimization
- রেসপন্সিভ থিম – Responsive Theme/Template
অফ পেজ এসইও (Off-Page SEO)
Off Page SEO হলো SEO এর এমন একটি প্রসেস যার সবকিছুই আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটের বাইরে থেকে করা হয়। আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে কন্টেন্ট পাবলিশ করার পর থেকে Off Page এসইও এর কাজ শুরু হয়।
ব্লগ বা ওয়েবসাইটের জন্য ব্যাক লিঙ্ক তৈরি করা থেকে আরম্ভ করে Social মিডিয়া sharing, ওয়েবসাইটের DA এবং PA বাড়ানোর সকল কার্যক্রম অফ পেজ এসইও এর মধ্যে পরে।
সহজ ভাষায় বললে, যে কোন ব্লগ বা ওয়েবসাইটের পাবলিসিটি করার জন্য যে সকল পদক্ষেপ নেওয়া হয়ে সেগুলোকেই অফ পেজ এসইও বলা হয়।
অফ পেজ এসইও এর মধ্যে নিচের বিষয় গুলো অন্তর্ভুক্ত –
- লিঙ্ক বিল্ডিং – Link Building
- ব্যাক লিঙ্ক – Backlinks
- সোশ্যাল মিডিয়া শেয়ার – Social Media
- গেস্ট পোস্ট – Guest Posting
- ট্রাস্ট – Trust
- ডোমেইন অথরিটি – Domain authority
- পেজ অথরিটি – Page authority
- ইউজার কমেন্ট – User Comments
SEO এর মৌলিক বিষয় কি?
মানুষের যেমন খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা এবং শিক্ষা এই পাঁচটি মৌলিক চাহিদা রয়েছে, ঠিক সেই রকম এসইও এর ক্ষেএেও এমন কিছু মৌলিক বিষয় রয়েছে।
যে বিষয় গুলো ছাড়া SEO পুরপুরিভাবে অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। আর এই বিষয়টিকে সম্পূর্ণ রূপ দেওয়ার জন্য, আপনাকে অবশ্যই SEO এর মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে পর্যাপ্ত ধারনা থাকতে হবে।
SEO এর কয়েকটি মৌলিক বিষয় আছে –
- কম্পিটিটর এনালাইসিস (Competitor)
- কিওয়ার্ড রিসার্চ (Keyword research)
- ব্যাকলিংক (Backlink)
- ভিজিটর এনালাইসিস (Visitor Analyses)
কম্পিটিটর এনালাইসিস (Competitor)
একজন SEO এক্সপার্ট হওয়ার জন্য, সবথেকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে, কম্পিটিটর এনালাইসিসের ক্ষেত্রে। কারন যদি আপনি আপনার কম্পিটিটরদেরকে এনালাইসিস করতে না পারেন তাহলে আপনি আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট কে র্যাঙ্ক করাতে পারবেন না।
সবার প্রথমে আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে, আপনার কম্পিটিটর কে বা কারা? কার বা কাদের সাথে আপনাকে প্রতিযোগীতা করতে হবে?
ধরুন, আপনি “গুগল থেকে আয়”- সম্পর্কে একটি আর্টিকেল আপনার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছেন। কয়েকদিন পর দেখলেন, আপনার প্রকাশ করা আর্টিকেল, গুগলের ২ নং পেজে প্রদর্শিত হচ্ছে।
এখন আপনার বর্তমান পজিশন থেকে শুরু করে গুগলের টপ পজিশন পর্যন্ত যতোগুলো ব্লগ বা ওয়েবসাইট রয়েছে, সেই সব ওয়েবসাইট গুলই মূলত আপনার কম্পিটিটর।
এখন আপনি চিন্তা করুন যে, গুগল কেন আপনার আর্টিকেলটি ২য় পেজে প্রদর্শন করল। প্রথম পেজের আর্টিকেল গুলোতে এমন কি রয়েছে যার কারনে গুগল তাদের আর্টিকেলটিকে ১ম পেজে শো করছে।
এরপর আপনাকে আপনার কম্পিটিটর ওয়েবসাইট গুলোর কিছু বিষয় খুব ভালোভাবে এনালাইস করতে হবে। যেমন,
- কন্টেন্ট Quality
- কন্টেন্ট Quantity
- ফোকাস Keyword
- এলএসআই (LSI) Keyword
- ব্যাক লিঙ্ক
- ডোমেইন অথরিটি / পেজ অথরিটি
Website গুলোকে ভালোভাবে Analysis করলে আপনি বুঝতে পারবেন যে, আপনার আর্টিকেলকে অপটিমাইজ করার জন্য আর কি কি কাজ করতে হবে।
যেমন মনে করুন, আপনার কন্টেন্ট এর কোয়ান্টিটি হলো ৩০০০ ওয়ার্ড। কিন্তুু যে কন্টেন্ট গুল গুগলের প্রথম পজিশনে শো করছে, সেগুলোর Content কোয়ান্টিটি ৫০০০ ওয়ার্ড। এর অর্থ হল আপনার কন্টেন্টে আরও বেশি ওয়ার্ড যুক্ত করতে হবে।
ঠিক এভাবেই আপনার Competitor দের ওয়েবসাইটের ব্যাক লিংক, Keyword, ডোমেইন অথরিটি/পেজ অথরিটি ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ করে আপনার নিজের ওয়েবসাইট/কন্টেন্ট আপডেট করতে হবে।
কিওয়ার্ড রিসার্চ (Keyword research)
যারা এসইও নিয়ে কাজ করে, তাদের জন্য Keyword research হল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। যখন আপনি Keyword research করবেন,তখন নিচের উল্লেখ করা বিষয়গুলো অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে, সেগুলো হলোঃ
- Keyword সার্চ ভলিউম
- কিওয়ার্ড difficulty
- কিওয়ার্ড quantity
- এলএসআই Keyword
- KGR কিওয়ার্ড
আপনাকে এমন কিওয়ার্ড নির্বাচন করতে হবে, যার যথেষ্ট পরিমাণে Search Value রয়েছে। কারন যদি আপনার নির্বাচিত কিওয়ার্ড লিখে গুগলে কেউ সার্চ না করে তাহলে আপনার আর্টিকেল যতোই SEO Optimize হোক না কেন, তাতে আপনার কোনো লাভ হবে না।
Keyword research এর আরেকটি পার্ট হলো, কিওয়ার্ড Difficulty। ধরুন আপনি একটা কিওয়ার্ড সিলেক্ট করলেন যার Search value অনেক বেশী, কিন্তুু সেই কিওয়ার্ডের উপর অনেক হাই কোয়ালিটি ওয়েবসাইট অলরেডি র্যাঙ্ক করে আছে। এই পরিস্থিতিতে আপনি যখন SEO করবেন তখন আপনাকে প্রচুর পরিমাণে পরিশ্রম করতে হবে।
যখন আপনি Keyword Research সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পারবেন, তখন আরও দুই রকমের কিওয়ার্ড সম্পর্কে জানতে পারবেন ৷ যেমন,
- LSI Keyword
- KGR keyword
KGR কিওয়ার্ডঃ যে সব কিওয়ার্ডের Search ভ্যালু কম, আবার সার্চ Difficulty একবারে জিরো সেই ধরনের কিওয়ার্ডক গুলোকে বলা হয় KGR Keyword । তবে এই টেকনিক গুলো ভালোভাবে বুঝতে হলে এসইও সেক্টরে বেশ কিছুদিন সময় দিতে হবে।
LSI কিওয়ার্ডঃ আবার আমরা গুগলে কোন কিওয়ার্ড লিখে সার্চ করার পর গুগলের পেজের নিচের দিকে যে Keyword গুলা শো করে সেই গুলকেই LSI কিওয়ার্ড বলা হয়।
ব্যাকলিংক (Backlink)
লিংক বিল্ডিং বা ব্যাক লিংক হল SEO করার অত্যন্ত পাওয়ারফুল একটি টেকনিক। যদিও অনেকেই মনে করে যে, বর্তমান সময়ে Backlink তেমন কোন কাজে আসে না। কিন্তু তাদের এই ধারনাটি আসলে সঠিক নয়।
বর্তমানে লিংক বিল্ডিং এর কিছু কিছু টেকনিক কাজ করে না, এটা ঠিক কথা। কিন্তু সেই কারণে আপনি যদি পুরো লিংক বিল্ডিং বা Backlink টেকনিকটাকেই বাদ দিয়ে দেন তাহলে আপনি কোনোভাবেই প্রোপার SEO করতে পারবেন না।
যখন আপনি ব্যাক লিংক করবেন, তখন আপনার সামনে কয়েকটি বিষয় আসবে। যেমন,
- Anchor টেক্সট
- ব্লগ কমেন্ট
- ফোরাম Posting
- গেস্ট Posting
- প্রোফাইল Backlink
- সোশ্যাল Bookmarking
- Web ২.০
- Social SEO ইত্যাদি
দেখুন, লিঙ্ক বিল্ডিং করার সময় অবশ্যই লক্ষ্য রাখবেন, যেন আপনার Backlink করার পদ্ধতিটা ন্যাচারাল বলে মনে হয়। অর্থ্যাৎ, গুগল কোনো অবস্থাতেই যেন ধরতে না পারে যে, আপনি জোর করে কিংবা টাকা খরচ করে আপনার ব্লগ বা সাইটের জন্য ব্যাক লিংক নিচ্ছেন।
আপনি যে Website থেকে ব্যাকলিংক নিচ্ছেন সেই ওয়েবসাইটটি যেন হাই Authority হয়। এর সাথে সেই ওয়েবসাইটের স্প্যাম score অবশ্যই চেক করে নেবেন। স্প্যাম score যত কম হবে ততোই সেটা আপনার ওয়েবসাইটের জন্য ভালো হবে।
আরও পড়ুনঃ কিভাবে ওয়েবসাইটের স্প্যাম স্কোর চেক করবেন
ভিজিটর এনালাইসিস (Visitor Analyses)
একটা কথা চিন্তা করুন, আপনি একটি Blog বা WebSite ক্রিয়েট করেছেন, সেই সাইটকে ভালোভাবে SEO করেছেন, এসব মুলত কিসের জন্য? -অবশ্যই ভিজিটরের জন্য, তাইনা?
সেই কারনে আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে যে ভিজিটর গুলো আসবে, সেই ভিজিটরদের খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে ৷ যেমন,
- Find সার্চ Engine
- Detect কি ওয়ার্ড
- ভিজিটর Bounce Rate
- Visitor টাইম Spend
Visitor Analyses করার ক্ষেত্রে আপনাকে লক্ষ্য রাখতে হবে যে আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগে যে ভিজিটর গুলো আসছে
- তারা কোন সার্চ ইঞ্জিন (গুগল, বিং, ইয়ান্ডেক্স) থেকে আসছে,
- কোন কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ট্রাফিক আপনার ওয়েবসাইটে আসছে,
- এছাড়াও ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইটে আসার পর তারা আপনার আর্টিকেলে কত সময় ব্যয় করছে।
এই বিষয়গুলো খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
এসইও এর গুরুত্ব
ওয়েবসাইটে একটি আর্টিকেল পোস্ট করার পর যদি তা গুগলের প্রথম পাতায় প্রদর্শিত না হয় তাহলে সেখান থেকে কোন ধরনের লাভ আশা করা যায় না। কেননা যদি আপনি সাধারনভাবে চিন্তা করেন যে, আমরা যখন সার্চ ইঞ্জিনে কোন বিষয় লিখে সার্চ করি তখন কেবল গুগলের প্রথম পেজে যে ফলাফল গুলো প্রদর্শিত হয় সেগুলো থেকেই আমার আমাদের কাঙ্ক্ষিত বিষয় খুজে বের করার চেষ্টা করি।
অর্থাৎ আমরা যদি আমাদের ওয়েবসাইটের আর্টিকেল, গুগলের প্রথম পাতায় নিয়ে আসতে না পারি তাহলে আমাদের ব্লগ বা ওয়েব সাইটেও ভিজিটর বা ট্রাফিক আসার সম্ভাবনা একেবারেই কমে যাবে।
অন পেজ এসইও এর গুরুত্ব
SEO কেন এত গুরুত্বপূর্ণ সে বিষয়টি একটি পরিক্ষার মাধ্যমে আপনাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করছি- ধরুন আপনি ”অনলাইন ইনকাম” কিওয়ার্ডটির উপর আর্টিকেল লিখেছেন।
Google সার্চ বক্সে আপনার Keyword এর প্রথমে এবং শেষে (“) চিহ্নটি দিয়ে এন্টার প্রেস করুন। সার্চ রেজাল্টটি দেখুন, এখানে দেখতে পাচ্ছেন ”অনলাইন ইনকাম” কিওয়ার্ডটির উপর মোট 77,300 রেজাল্ট প্রদর্শিত হয়েছে। অর্থাৎ 77,300 টি ব্লগ বা ওয়েবসাইটে অনলাইন ইনকাম কিওয়ার্ডটির উপর আর্টিকেল লেখা রয়েছে।
এখন আপনাকে চেক করে দেখতে হবে 77,300 টি ব্লগ বা ওয়েবসাইটের মধ্যে কতজন তাদের আর্টিকেলের On Page SEO ভালোভাবে করেছে।
এরপর গুগল সার্চে আপনার কিওয়ার্ডের প্রথমে allintitle: (allintitle:অনলাইন ইনকাম) টাইপ করে এন্টার প্রেস করুন। এখন দেখুন সার্চ রেজাল্ট 77,300 থেকে তা মাত্র 6,990 এ চলে এসেছে। অর্থাৎ 77,300 টি আর্টিকেলের মধ্যে মাত্র 6,990 টি আর্টিকেলের শিরোনামে উক্ত কিওয়ার্ডটি ব্যবহার করা হয়েছে।
এবার গুগল সার্চ বক্সে আপনার কিওয়ার্ডের প্রথমে allinurl: (allinurl:অনলাইন ইনকাম) টাইপ করে এন্টার কি প্রেস করুন। এখন দেখুন সার্চ রেজাল্ট 6,990 থেকে তা মাত্র 1,200 তে চলে এসেছে। অর্থাৎ 6,990 টি নিবন্ধের মধ্যে মাত্র 1200 টি আর্টিকেলের URL বা Permalink এ অনলাইন ইনকাম কিওয়ার্ডটি ব্যবহার করা হয়েছে।
সুতরাং 1,200 টি আর্টিকেলের মধ্যে এগিয়ে থাকতে হলে আপনাকে আপনার আর্টিকেলের URL বা Permalink এ অবশ্যই উক্ত কিওয়ার্ডটি ইউজ করতে হবে। যা অন পেজ এসইও এর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন অংশ।
এখন গুগল এর প্রথম পেজে প্রদর্শিত হওয়া আর্টিকেল বা পোস্ট গুলো ভালো ভাবে পর্যবেক্ষন করুন-
- আর্টিকেল গুলতে কত গুলো শব্দ বা ওয়ার্ড ইউজ করা হয়েছে?
- আর্টিকেল গুলতে কয়টি ইমেজ ব্যবহার করা হয়েছে?
- ফোকাসিং কিওয়ার্ডটি H2 এবং H3 Tag এ কতবার ইউজ করা হয়েছে?
- ফোকাসিং কিওয়ার্ডটি সম্পূর্ণ আর্টিকেলে কতবার ব্যবহার করা হয়েছে?
পর্যবেক্ষণ শেষে সেই অনুসারে আপনি আপনার আর্টিকেলটি লিখে পোস্ট করে ফেলুন।
অফ পেজ এসইও এর গুরুত্ব
Google এর প্রথম পেজে শো হওয়া Blog বা ওয়েবসাইট গুলো হল আপনার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। অন পেজ এসইও করার পরে আপনাকে গুগলের প্রথম পেজে শো হওয়া ওয়েবসাইট গুলোর অফ পেজ এসইও এর অবস্থা ভালভাবে পর্যবেক্ষন করতে হবে। যেমন-
- তাদের সাইটে কি পরিমাণে Backlink (ব্যাক লিঙ্ক) রয়েছে?
- আর্টিকেল গুলো Social Media প্ল্যাটফর্মে কত বার Share করা হয়েছে?
- ওয়েবসাইট গুলোর Domain Authority বা ডিএ কত?
- আর্টিকেল গুলোর Page Authority বা পিএ কত?
উপরের বিষয়গুলো ভালোভাবে পর্যালোচনা করে সেই অনুসারে আপনি আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট র্যাঙ্কিং এ নিয়ে আসার জন্য অফ পেজ এসইও করতে থাকুন।
SEO কিভাবে কাজ করে?
seo মূলত কিভাবে কাজ করে সে বিষয়ে বুঝতে হলে সবার প্রথমে আমাদের জানতে হবে একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কিভাবে আয় হয়?
অ্যাডসেন্স এর কথাই ধরা যাক, আপনার ব্লগের মাধ্যমে তখনই উপার্জন হবে যখন ভিজিটর আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে ভিসিট করে কোন বিজ্ঞাপনে ক্লিক করবে। অর্থাৎ আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে যদি ট্রাফিক বা ভিজিটর না আসে তাহলে সেখান থেকে কোন প্রকার উপার্জন করা সম্ভব না।
এখন আপনি মনে করতে পারেন, সার্চ ইন্জিন ছাড়াও ওয়েবসাইটে অন্য ভাবে ভিজিটর নিয়ে আসা যায়, যেমন বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়া ট্রাফিক। কিন্তু মূল কথাটা হল সোস্যাল মিডিয়া একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইটের পরিচিতি বাড়াতে সাহায্য করে এটা ঠিক কিন্তু এই ট্রাফিক থেকে ইনকামের তেমন একটা আশা করা ঠিক না।
কারণ, অ্যাডসেন্স থেকে উপার্জন করার প্রধান শর্ত হলো- কোন ভিজিটর কোন একটি কিওয়ার্ড লিখে যদি গুগলে সার্চ করে আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে এবং আপনার ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত হওয়া কোন অ্যাড বা বিজ্ঞাপনে ক্লিক করে তাহলে আপনি সেই কিওয়ার্ডের জন্য নির্ধারিত CPC অনুযায়ী কমিশন পাবেন।
কিন্তু সেই সমান পরিমান ভিজিটর যদি ফেসবুক বা অন্য কোন সোস্যাল মিডিয়া থেকে আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে এসে কোন বিজ্ঞাপনে ক্লিক করে তাহলে আপনি সেই CPC অনুযায়ী কমিশন পাবেন না। আর যদিও কিছু পান সেট হবে খুবই সামান্য।
SEO মূলত ৩ টি ধাপে কাজ করে থাকে –
ধাপ-১ঃ আমরা যখন গুগলে কোন কিওয়ার্ড লিখে সার্চ বা অনুসন্ধান করি তখন গুগল প্রথমে আমাদের দেওয়া কিওয়ার্ডের উপর লিখিত আর্টিকেল গুলো খুজে বের করে।
ধাপ-২ঃ কিন্তু সেই রেজাল্টের সংখ্যা হাজার থেকে শুরু করে লক্ষাধিক পর্যন্ত হতে পারে, তাই এই পরিস্থিতিতে গুগল পর্যবেক্ষন করে উক্ত রেজাল্ট গুলোর মধ্যে কোন আর্টিকেল গুলোতে ভালোভাবে On Page SEO করা হয়েছে।
ধাপ-৩ঃ ফলাফল গুলোর অন পেজ এসইও চেক করার পর, পরের ধাপে গুগল চেক করে দেখে যে কোন ব্লগ বা ওয়েবসাইট গুলোতে ভালোভাবে অফ পেজ এসইও করা হয়েছে এবং সেই পর্যবেক্ষণের উপর ভিত্তি করে গুগল তার সেরা ফলাফল গুলো প্রথম পাতায় প্রদর্শন করে।
আরও পড়ুনঃ নতুন ব্লগে ট্রাফিক নিয়ে আসার উপায়
এসইও টুলস (Tools)
SEO করার জন্য অনেক ধরনের কাজ করতে হয়। কাজগুলো যদি ম্যানুয়ালি করতে চান, তাহলে কাজগুলো করার জন্য আপনার অনেক সময় ব্যয় হবে। ম্যানুয়ালি যে কাজ করতে আপনার ১ দিন সময় লাগবে, ঠিক সেই কাজ Tools ব্যবহার করে করলে মাত্র কয়েক মিনিটেই করে ফেলতে পারবেন।
ইন্টারনেটে SEO করার জন্য ২ (দুই) রকমের টুলস পাবেন।
- পেইড Tools
- ফ্রী Tools
যদি আপনার পেইড টুলস কেনার সামর্থ্য থাকে, তাহলে আপনি অবশ্যই পেইড টুলস ব্যবহার করুন৷ অন্যথায় অনেক Free Tools আছে যেগুলোর সাহায্যে আপনি এসইও সম্পর্কিত অনেক ধরনের কাজ করতে পারবেন। তাহলে চলুন সেই এসইও (SEO) tools গুলোর নাম জেনে নেই।
পেইড টুলস
বর্তমানে SEO করার জন্য অনেক ধরনের Paid Tools রয়েছে। যেগুলো ব্যবহার করে আপনি এসইও রিলেটেড যেকোনো কাজ, খুব অল্প সময়ের মধ্যে করে ফেলতে পারবেন। এমন কিছু পেইড টুলসের নাম নিচে দেওয়া হল
ফ্রি টুলস
যদি আপনি নতুন এসইও শেখা শুরু করে থাকেন অথবা আপনার পেইড Tools ইউজ করার মতো সামর্থ্য না থাকে। সেক্ষেত্রে আপনি এসইও এর Free টুলস গুলো ইউজ করতে পারবেন।
এমন কিছু ফ্রি এসইও টুলসের নাম নিচে দেওয়া হলোঃ
- গুগল Analytics
- গুগল Trands
- Search Console
- Keyword Hero
- Screaming Frog
- SEOlyzer
- Answer The Public
- গুগল কিওয়ার্ড Planner
- কি ওয়ার্ড Surfer
- Ubersuggest
শেষ কথা
আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করলাম এসইও কি? SEO কত প্রকার? এসইও এর গুরুত্ব ও এটি কিভাবে কাজ করে? আশা করছি উপরোক্ত আলোচনা থেকে খুব সহজেই বুঝতে পেরেছেন যে ব্লগিং এর ক্ষেত্রে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর গুরুত্ব কতটুকু।
আর্টিকেলটি নিয়ে কোন প্রশ্ন বা মন্তব্য থাকলে কমেন্ট করে জানান। ধন্যবাদ