ইন্টারনেটে যেকোনো ওয়েবসাইট প্রদর্শন করার জন্য ওয়েব হোস্টিং প্রয়োজন । আপনি যদি একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান বা আপনি কীভাবে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করবেন তা জানতে চান, তাহলে আপনার ওয়েব হোস্টিং সম্পর্কে জ্ঞান থাকা জরুরী । আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সাথে ওয়েব হোস্টিং কি? ওয়েব হোস্টিং কত প্রকার? কিভাবে কাজ করে? ইত্যাদি বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব ।
Table of Contents
ওয়েব হোস্টিং কি – হোস্টিং কাকে বলে
ওয়েব হোস্টিং হল এক ধরনের ওয়েব সার্ভার, যা ইন্টারনেটে একটি ওয়েবসাইটের জন্য জায়গা বা স্থান প্রদান করে । আমরা যখন কোন ওয়েবসাইটকে হোস্টিংয়ের সাথে কানেক্ট করি, তখন সেই ওয়েবসাইটটি বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেখা যায় ।
আরও সহজ ভাবে বললে, ওয়েব হোস্টিং হল ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবে উপস্থিত একটি অনলাইন স্পেস । যেখানে একটি ওয়েবসাইটের সমস্ত ফাইল সংরক্ষণ করা হয় । এবং যখন একজন ইউজার কোন ফাইলের জন্য রিকোয়েস্ট করে, তখন সেই ফাইলটি ইউজারের সামনে উপস্থাপন করা হয় ।
উদাহরণস্বরূপ, বাড়ি তৈরি করতে হলে যেমন জমির প্রয়োজন হয় । ঠিক তেমনই যে কোন ওয়েবসাইটের ফাইল স্টোর করার জন্য জায়গার প্রয়োজন হয় । আর এই ওয়েবসাইটের ফাইল স্টোর করার জায়গাকেই ওয়েব হোস্টিং বলা হয় ।
আপনি যখন একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরি করেন, তখন এর সমস্ত কন্টেন্ট, যেমন ছবি, ভিডিও, টেক্সট ইত্যাদি হোস্টিং সার্ভারে সংরক্ষণ করা হয় । আপনার ওয়েবসাইটের সমস্ত ডেটা যে জায়গায় থাকে, সেই কম্পিউটারটি ২৪ ঘন্টা ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত থাকে, যার কারণে ইউজাররা দিন রাত সবসময় আপনার ওয়েবসাইট দেখতে সক্ষম হয় ।
যেহেতু আমাদের পক্ষে এই ধরনের সার্ভার রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব নয়, কারণ এর রক্ষণাবেক্ষণের খরচ অনেক বেশি, তাই আমরা ওয়েবসাইট হোস্টিং করার জন্য বিভিন্ন ওয়েব হোস্টিং কোম্পানির সহায়তা নেই । কারণ ওয়েব হোস্টিং কোম্পানিগুলির নিজস্ব শক্তিশালী সার্ভার এবং হাই স্কিল কর্মী রয়েছে । আমরা এই সব হোস্টিং প্রোভাইডারের থেকে, মাসিক বা বার্ষিক প্যাকেজ অনুযায়ী হোস্টিং সার্ভিস কিনে থাকি ।
বর্তমানে অনেক কোম্পানি ওয়েব হোস্টিং পরিষেবা প্রদান করে থাকে । তাও মধ্যে জনপ্রিয় কিছু হোস্টিং প্রোভাইডার হল – GoDaddy, Neamcheap, Hostinger, Bluehost, এবং Hostagator ইত্যাদি ।
আরও পড়ুনঃ ডোমেইন কি ? ডোমেইন কিভাবে কাজ করে
ওয়েব হোস্টিং এর ইতিহাস
ইন্টারনেটের আবির্ভাবের কারণে বিজনেস এবং তথ্য সংগ্রহের জন্য অনেক নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে । এর একটি উদাহরণ হল ওয়েব হোস্টিং, যা মানুষকে কন্টেন্ট বিতরণ এবং বিশ্বব্যাপী একে অপরের সাথে যোগাযোগ করার সুযোগ করে দিয়েছে । ওয়েব হোস্টিং-এর বিকাশ ইন্টারনেট ইতিহাসের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ ।
১৯৬৫ সালে MIT-এর বিজ্ঞানীরা দুটি কম্পিউটারের মধ্যে সফলভাবে যোগাযোগ করে ইন্টারনেটের ভিত্তি স্থাপন করেন ।
১৯৭৩ সালে ইন্টারনেটের সূচনা হয় ।
১৯৭৪ সালে টেলিনেট নামে প্রথম ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (ISP) এর আবির্ভাব ঘটে ।
১৯৮৩ সালে TCP/IP প্রোটোকল স্যুটের ব্যবহার শুরু হয়, যা আজও ইন্টারনেটের মাধ্যমে নেটওয়ার্ক কানেক্ট করতে ইউজ হয় ।
১৯৮৩ সালেই DNS বা ডোমেন নেম সিস্টেম চালু করা হয় ।
১৯৮৫ সালে প্রথম ডোমেইন (symbolics.com) রেজিস্টার করা হয় ।
১৯৮৮ সালে প্রথম হোস্টিং কোম্পানির আবির্ভাব ঘটে । এটি ” 1&1 ইন্টারনেট ” ( বর্তমানে 1&1 IONOS নামে পরিচিত ) নামে জার্মানিতে প্রতিষ্ঠিত হয় । 1&1 ইন্টারনেট হল বিশ্বের প্রথম হোস্টিং কোম্পানি ।
১৯৮৯ সালে টিম বার্নার্স-লি, ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব তৈরি করেন ।
১৯৯০ সালে প্রথম এইচটিএমএল চালু হয় ।
১৯৯১ সালে লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম চালু হয়, যা ইউনিক্সের থেকে সস্তা । এটি লিনাক্স হোস্টিং প্রোভাইডারদের, পূর্ববর্তী ইউনিক্স হোস্টিং প্রোভাইডারদের তুলনায় কম দামে তাদের সার্ভিস প্রদান করতে সক্ষম করেছে ।
১৯৯২ সালে কোলোকেশন ওয়েব হোস্টিং এর সুচনা হয় ।
১৯৯৪ সালে পিটার ফরম্যান, ফরম্যান ইন্টারঅ্যাকটিভ প্রতিষ্ঠা করেন । ফরমান ইন্টারঅ্যাকটিভ অবশেষে একটি ওয়েব হোস্টিং প্রোভাইডার এবং ডোমেইন নেম নিবন্ধক হয়ে ওঠে । পরবর্তীতে সেই কোম্পানির নাম Register.com এ পরিবর্তন করা হয় ।
১৯৯৫ সাল নাগাদ ফ্রি ওয়েব হোস্টিং, AIT, Inc. , Geocities এবং Tripod- এর মতো ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার সাইটগুলি লঞ্চ হয় ।
ব্যানার অ্যাডের মাধ্যমে আয়ের আশায় তারা বিনামূল্যে ওয়েব হোস্টিং চালু করে । .
১৯৯৬ সালে ভেরিও ইনক প্রতিষ্ঠিত হয় । পরবর্তীতে এটি ভাল হোস্টিং কোম্পানিগুলির মধ্যে একটি হয়ে ওঠে । ভেরিও অনেক ছোট আইএসপি এবং হোস্টিং প্রভাইডার কোম্পানি কিনে নেয় এবং সেগুলিকে ভেরিও ব্র্যান্ড নামের আন্ডারে পরিচালনা করা শুরু করে ।
১৯৯৭ সালে GoDaddy চালু হয় । এটি GoDaddy Inc. Jomax Technologies নামে প্রতিষ্ঠিত হয় । ২০১৯ সালের মধ্যে, তারা বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ওয়েব হোস্টিং সার্ভিস প্রোভাইডার হয়ে ওঠে ।
১৯৯৭ সালেই LexiConn কোম্পানি প্রথম ভার্চুয়াল ওয়েব হোস্টিং অফার করে ।
১৯৯৮ সালে Akamai Technologies, Inc. প্রতিষ্ঠিত হয় । Akamai হল বিশ্বের প্রথম এবং বৃহত্তম CDN বা কন্টেন্ট ডেলিভারি নেটওয়ার্ক প্রদানকারী ।
২০০০ সালে আরও একটি জনপ্রিয় ডোমেইন নেম রেজিস্ট্রার কোম্পানি Namecheap এর যাত্রা শুরু হয় । এটি বর্তমানে সেরা ডোমেইন রেজিস্ট্রার এবং ওয়েব হোস্টিং সার্ভিস প্রোভাইডার কোম্পানি গুলোর মধ্যে একটি ।
২০০১ সালে লিনাক্স ভিপিএস হোস্টিং বাজারে আসে । রোজহোস্টিং নামে একটি কোম্পানি জনসাধারণের কাছে বাণিজ্যিকভাবে সর্বপ্রথম লিনাক্স ভিপিএস হোস্টিং অফার করে ।
২০০২ সালে HostGator চালু হয় । বর্তমানে তারা বিশ্বের অন্যতম শেয়ার্ড, ভার্চুয়াল এবং ডেডিকেটেড ওয়েব হোস্টিং প্রদানকারী কোম্পানি ।
২০০৩ সালে ওয়ার্ডপ্রেস, Name.com এবং BlueHost লঞ্চ করা হয় ।
২০০৬ সালে ক্লাউড হোস্টিং এর আবির্ভাব ঘটে ।
২০০৮ সালে গুগল ক্লাউড প্ল্যাটফর্ম চালু হয় ।
২০১৮ সালে ” 1&1 ইন্টারনেট “, ক্লাউড কম্পিউটিং কোম্পানি ” প্রফিটব্রিক্সের ” সাথে একীভূত হয়ে নতুন ব্র্যান্ড 1&1 IONOS তৈরি করে ।
ওয়েব হোস্টিং কিভাবে কাজ করে?
ওয়েব হোস্টিং এর জন্য ইন্টারনেটে অনেক কোম্পানি আছে যেগুলো ওয়েবসাইট ওনারদের, টাকার বিনিময়ে তাদের সার্ভারে ওয়েবসাইট হোস্ট করার অনুমতি প্রদান করে । সার্ভারে, ওয়েবসাইটের সমস্ত এইচটিএমএল পেজ, ছবি, ডকুমেন্ট, ভিডিও ইত্যাদি আপলোড করার পর ইন্টারনেটের মাধ্যমে যে কেউ, সেই ওয়েব অ্যাড্রেস (ডোমেইন নেম) এর মাধ্যমে যেকোনো সময়, যে কোন জায়গা থেকে দেখতে পারে ।
যখনই একজন ইন্টারনেট ইউজার তার ডিভাইসের ওয়েব ব্রাউজারে, কোন ওয়েব এড্রেস লিখে সেই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে, তখন তার কম্পিউটার সেই সার্ভারের সাথে কানেক্ট হয়, যেখানে সেই ওয়েবসাইটটি হোস্ট করা আছে । এরপর সার্ভার, ভিজিটরের ব্রাউজারে রিকোয়েস্ট অনুযায়ী প্রয়োজনীয় HTML পেজ এবং কন্টেন্ট প্রদর্শন করে ।
ওয়েব হোস্টিং এর প্রকারভেদ – ওয়েব হোস্টিং কত প্রকার
ওয়েব হোস্টিং প্রধানত চার ধরনের ওয়েব হোস্টিং রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে শেয়ার্ড হোস্টিং, ভিপিএস হোস্টিং, ডেডিকেটেড হোস্টিং এবং ক্লাউড হোস্টিং । আসুন এই সমস্ত হোস্টিং সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নেওয়া যাক ।
- শেয়ার্ড হোস্টিং
- VPS (ভার্চুয়াল প্রাইভেট সার্ভার) হোস্টিং
- ডেডিকেটেড হোস্টিং
- ক্লাউড হোস্টিং
1. শেয়ার্ড হোস্টিং কি
অনেক লোক যেভাবে মেস বা হোস্টেল একসাথে এক রুম শেয়ার করে থাকে, শেয়ার্ড ওয়েব হোস্টিং ঠিক তার অনুরূপ । শেয়ার্ড হোস্টিং-এ, একটি সিঙ্গেল ওয়েব সার্ভারে হাজার হাজার ওয়েবসাইট হোস্টিং করা থাকে । একটি সার্ভার, অনেকে শেয়ার করে ইউজ করার কারণে একে শেয়ারড হোস্টিং বলা হয় ।
নতুন ব্লগারদের জন্য শেয়ারড ওয়েব হোস্টিং উপযুক্ত বলে মনে করা হয় । কারণ প্রথম অবস্থায় নতুন ব্লগারদের ওয়েবসাইটে তেমন ট্রাফিক থাকে না, তাই এই হোস্টিং নতুনদের জন্য ভালো । সেই সাথে, এই হোস্টিং এর আরও একটি বড় সুবিধা হল, এটি অন্যান্য হোস্টিংয়ের তুলনায় দামে অনেক সস্তা । যখন আপনার ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বৃদ্ধি পাবে, তখন আপনি শেয়ার্ড হোস্টিং পরিবর্তন করে অন্য আরও ভাল হোস্টিং কিনতে পারবেন ।
শেয়ার্ড হোস্টিং যেমন সস্তা, তেমনি এই হোস্টিং সেটআপ করাও অনেক সহজ । আপনি নতুন অবস্থায় এই হোস্টিং দিয়ে আপনার ওয়েবসাইট কন্ট্রোল করতে কোন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হবেন না । কারণ এই ধরনের হোস্টিং এর কন্ট্রোল প্যানেল একদম বেসিক এবং সেই সাথে ইউজার ফ্রেন্ডলী । কম্পিউটার সম্পর্কে ব্যাসিক নলেজ থাকলেই এই হোস্টিং সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায় ।
এর ধরনের হোস্টিং এর সুবিধার পাশাপাশি কিছু অসুবিধাও রয়েছে । যদিও নতুন অবস্থায় এতে কোন ক্ষতি নেই কিন্তু তারপরেও আপনার জানা দরকার। কিছু কিছু কোম্পানি আপনাকে শেয়ার্ড হোস্টিং এ সাপোর্ট প্রদান করে না । এছাড়াও এই ধরনের হোস্টিং এ আপনার ওয়েবসাইটের লোডিং স্পীড কখনও বাড়তে পারে বা আবার কমতেও পারে । শেয়ার্ড হোস্টিংয়ের সিকিউরিটি সিস্টেম ততটা উন্নত নয় ।
2. VPS (ভার্চুয়াল প্রাইভেট সার্ভার) হোস্টিং
VPS হোস্টিং শেয়ার্ড হোস্টিং থেকে সম্পূর্ণ আলাদা । এতে হোস্টিং কোম্পানি অন্য কোনো ওয়েবসাইট সংযুক্ত করতে পারবে না ।এটা শুধুমাত্র আপনার নিজের । এর নিরাপত্তা ব্যবস্থা যেমন শক্তিশালী, সেই সাথে এতে স্পীডেরও কোন সমস্যা হয় না । এর ভেতরে ভিজ্যুয়ালাইজেশন টেকনোলোজি ব্যবহার করা হয়েছে, যা কার্যত সার্ভারকে বিভিন্ন অংশে বিভক্ত করে । যার কারণে আপনার ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালী হয় ।
ভিপিএস হোস্টিং-এ প্রতিটি সার্ভারের জন্য একটি পৃথক রিসোর্স ব্যবহার করা হয় । যার ফলে শুধুমাত্র আপনার ওয়েবসাইট প্রয়োজনীয় রিসোর্স পায় । এটি আপনার ওয়েবসাইটের স্পীড এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা উভয়ই উন্নত করে । কিন্তু ভিপিএস হোস্টিং এর দাম শেয়ারড হোস্টিং এর থেকে বেশি । আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট থেকে যদি ভাল পরিমাণ টাকা আয় হয়, তাহলে আপনি এই হোস্টিং কিনতে পারেন ।
এবার ভিপিএস হোস্টিং এর সুবিধাগুলি সম্পর্কে জেনে নিন । ভিপিএস হোস্টিং-এ আপনি ডেডিকেটেড হোস্টিংয়ের মতো সম্পূর্ণ কন্ট্রোল পাবেন । আবার এটিকে ডেডিকেটেড হোস্টিংয়ের চেয়ে সস্তায় কিনতে পারবেন । সেই সাথে এই হোস্টিং আপনার ওয়েবসাইটের কর্মক্ষমতা এবং নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেবে ।
3. ডেডিকেটেড হোস্টিং
ডেডিকেটেড হোস্টিংয়ে শুধুমাত্র একটি ওয়েবসাইট হোস্ট করা হয় । এটিতে অন্য কোন ব্যক্তির ওয়েবসাইট শেয়ার করা হয় না ।শেয়ার্ড হোস্টিং-এ যেমন অনেক ওয়েবসাইট হোস্ট করা হয়, কিন্তু এই হোস্টিং তার সম্পূর্ণ বিপরীত । এখানে পুরো হোস্টিং সার্ভারে শুধুমাত্র একটি ওয়েবসাইট রান হয় । যার ফলে এই হোস্টিং সার্ভারের আন্ডারে থাকা ওয়েবসাইট খুব দ্রুত কাজ করে, তবে এর দামও অনেক বেশী, কারণ শুধুমাত্র একজনকে পুরো সার্ভারের খরচ দিতে হয় ।
এই হোস্টিং সেই সব ওয়েবসাইটগুলির জন্য প্রযোজ্য, যেগুলো ওয়েবসাইটে প্রতি মাসে মিলিয়ন মিলিয়ন ট্রাফিক আসে । সাধারণত ডেডিকেটেড হোস্টিংগুলো ই-কমার্স টাইপের ওয়েবসাইটের জন্য ইউজ করা হয় । যার মধ্যে রয়েছে Alibaba, Daraz, Flipkart ইত্যাদি ।
ডেডিকেটেড হোস্টিং অনেক ব্যয়বহুল, তবে এর সুবিধাও অনেক বেশী । আপনি যদি এই হোস্টিং এর মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইট হোস্ট করেন, তাহলে আপনার ওয়েবসাইট অনেক বেশী নিরাপদ থাকবে । সেই সাথে আপনি সম্পূর্ণরূপে আপনার ওয়েবসাইটের সার্ভার কন্ট্রোল করতে পারবেন । তবে এই ধরনের হোস্টিং ইউজ করার জন্য আপনার টেকনিক্যাল নলেজ থাকতে হবে ।
4. ক্লাউড হোস্টিং
এটি একটি নতুন ধরণের হোস্টিং, যা বর্তমানে অনেক বেশী জনপ্রিয় হয়ে উঠছে । ক্লাউড হোস্টিং একাধিক রিমোট সার্ভারের (গ্রুপ অফ সার্ভার) সাথে কাজ করে । যদি কোন সার্ভার স্লো কাজ করে, তাহলে এটি ওয়েবসাইটটিকে অন্য সার্ভারের সাথে কানেক্ট করে । আপনি যদি ক্লাউড সার্ভারে আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট হোস্ট করেন, তাহলে আপনার ওয়েবসাইটের স্পীড এবং কর্মক্ষমতা উভয়ই বেড়ে যায় । তবে অন্যান্য হোস্টিং এর তুলনায় এটির দাম অনেক বেশী ।
ক্লাউড হোস্টিং এর সার্ভার খুবই সিকিউর । আপনি এই হোস্টিং-এ যে কোন পরিমাণ ট্র্যাফিক সহ ওয়েবসাইট কানেক্ট করতে পারবেন । কারণ এই ধরনের হোস্টিং এ, যত বেশী ট্রাফিক আসুক না কেন তা খুব সহজেই মেইনটেইন করা যায় । এর ফলে আপনার ওয়েবসাইট ডাউন বা স্লো হয়ে যাওয়ার মত সমস্যা দেখা যায় না ।
আরও পড়ুনঃ লিনাক্স কি ? লিনাক্স কিভাবে কাজ করে ?
লিনাক্স বনাম উইন্ডোজ হোস্টিং
আপনি যখন কোন হোস্টিং প্রোভাইডার কোম্পানির ওয়েবসাইটে যাবেন তখন সেখানে আপনি দুটি অপশন দেখতে পাবেন । এর মধ্যে একটি হল লিনাক্স হোস্টিং এবং অন্যটি হল উইন্ডোজ হোস্টিং । তবে এই দু ধরনের হোস্টিং এর মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য নেই ।কিন্তু যে ব্যক্তি প্রথমবার হোস্টিং কিনবে সে ঠিক বুঝতে পারে না কোনটি বেছে নেবেন । এবং কেন? তো চলুন জেনে নিই লিনাক্স এবং উইন্ডোজ হোস্টিং কি? এবং এই দুটি হোস্টিং এর মধ্যে পার্থক্য কি?
লিনাক্স ওয়েব হোস্টিং –
আপনারা প্রায় সবাই জানেন যে, লিনাক্স একটি ওপেন সোর্স অপারেটিং সিস্টেম, যা একদম ফ্রি । আপনি এটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ইউজ করতে পারেন । এই কারণে লিনাক্স হোস্টিং অনেক সস্তা । এখন আপনারা প্রশ্ন করতে পারেন যে, যখন লিনাক্স ওএস ফ্রি, তাহলে লিনাক্স হোস্টিং এর জন্য কেন টাকা দিতে হবে ? এর উত্তর হল হোস্টিং প্রোভাইডাররা আপনাকে একটি ফুল প্যাকেজ দেয় । অর্থাৎ আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের ফিচার যোগ করে দেওয়া হয় । যার মধ্যে cPanel ও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ।এই সব কারণে লিনাক্স হোস্টিং কিনতে হলে আপনাকে কিছু পরিমাণ টাকা খরচ করতে হবে । যাইহোক, তা সত্ত্বেও, লিনাক্স হোস্টিং অনেক সস্তা ।
উইন্ডোজ ওয়েব হোস্টিং
উইন্ডোজ হোস্টিং, লিনাক্স হোস্টিং এর তুলনায় ব্যয়বহুল । কারণ উইন্ডোজ হল মাইক্রোসফটের একটি পণ্য । এজন্য আপনাকে এটি পারসেস করতে হবে । অর্থাৎ মাইক্রোসফট থেকে লাইসেন্স কিনতে হবে । সেজন্য উইন্ডোজ হোস্টিং এর দাম একটু বেশি । যদিও উইন্ডোজ হোস্টিং, লিনাক্স হোস্টিং এর তুলনায় ব্যয়বহুল, কিন্তু এটি লিনাক্স হোস্টিং এর থেকে বেশি সিকিউর । সেজন্য নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করে উইন্ডোজ হোস্টিং কে লিনাক্স হোস্টিং এর থেকে ভালো বলে মনে করা হয় ।
ওয়েব হোস্টিং এর বৈশিষ্ট্য কি হওয়া উচিত
আপনি যখনই আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগের জন্য একটি হোস্টিং কিনবেন, তখন অবশ্যই নীচে দেওয়া ওয়েব হোস্টিং এর বৈশিষ্ট্যগুলি ভাল করে দেখে তারপর হোস্টিং কিনবেন । একটি ভাল ওয়েব হোস্টিং এর কি কি বৈশিষ্ট্য থাকা উচিত তা নিচে দেওয়া হল –
1. ডিস্ক স্পেস / স্টোরেজ
একটি স্মার্টফোনে ছবি, ভিডিও এবং গান ইত্যাদি রাখার জন্য যেমন স্টোরেজের প্রয়োজন হয় । ঠিক তেমনই, একটি ওয়েবসাইটের ফাইলগুলি সংরক্ষণ করার জন্যও স্টোরেজের প্রয়োজন হয় । তাই ওয়েব হোস্টিং কেনার আগে, আপনার হোস্টিং এর ডিস্ক স্পেস বা স্টোরেজের দিকে খেয়াল রাখা উচিত । আপনি কি ধরনের ওয়েবসাইট তৈরি করছেন, তার উপর ভিত্তি করে আপনার কেমন স্টোরেজ প্রয়োজন হবে তা নির্ধারণ করুন এবং সেই অনুযায়ী স্টোরেজ সহ হোস্টিং কিনুন ।
ধরুন আপনি যদি একটি সাধারণ ব্লগ ওয়েবসাইটের জন্য হোস্টিং কিনতে চান, তাহলে আনলিমিটেড স্টোরেজ কেনার প্রয়োজন নেই । কারণ একটি ব্লগে তেমন কোন ডেটা থাকে না । কয়েকটি এইচটিএমএল পেজ এবং কিছু ছবি থাকে, যার ফলে খুব বেশি জায়গার প্রয়োজন হয় না । এজন্য একটি ব্লগের জন্য ২ থেক ৫ GB স্টোরেজই যথেষ্ট । আপনি যত বেশি স্টোরেজ নিবেন, আপনাকে তত বেশি টাকা খরচ করতে হবে । তবে আমরা সাজেস্ট করব আপনার প্রয়োজনের চেয়ে সামান্য একটু বেশি স্টোরেজ সহ হোস্টিং প্যাকেজ কিনুন ।
2. ব্যান্ডউইথ
ব্যান্ডউইথ হল হোস্টিংয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য । ব্যান্ডউইথ বলতে, ওয়েবসাইটে ভিজিটরদের মধ্যে ডেটা ট্রান্সফারের সময়সীমা বোঝায় । হোস্টিং কেনার সময় আপনি যদি লো ব্যান্ডউইথের হোস্টিং প্যাকেজ কেনেন এবং আপনার সাইটে ট্রাফিক বেড়ে যায় । সেক্ষেত্রে আপনার সাইটের লোডিং স্পিড অনেক কমে যাবে । অর্থাৎ যখনই আপনার ওয়েবসাইটে বেশি পরিমাণে ভিজিটর আসবে, তখনই আপনার ওয়েবসাইটের স্পীড স্লো হয়ে যেতে পারে । অন্যদিকে আপনি যদি হাই ব্যান্ডউইথের হোস্টিং প্যাকেজ কেনেন, তাহলে এটি আপনার ওয়েবসাইটে আসা সমস্ত দর্শকদের খুব সহজেই হ্যান্ডেল করতে পারবে । যার কারণে আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটের স্পীড কোনোভাবেই প্রভাবিত হবে না ।
3. আপটাইম
আপটাইম অর্থ হল আপনার ওয়েবসাইট দর্শকদের কাছে কত সময়ের জন্য উপলব্ধ থাকবে । অর্থাৎ ওয়েবসাইটটি যতক্ষণ পর্যন্ত অনলাইনে থাকে, তাকে আপটাইম বলা হয় এবং যতক্ষণ এটি অফলাইনে থাকে বা ডাউন থাকে তাকে সাইটের ডাউনটাইম বলা হয় । বেশীরভাগ হোস্টিং কোম্পানি গ্যারান্টিযুক্ত আপটাইম দাবি করে ।
যদিও, একটি ওয়েবসাইট ২৪ ঘন্টা লাইভে বা অনলাইনে থাকে । কিন্তু অনেক সময় বিভিন্ন কারিগরি সমস্যার কারণে সার্ভার ডাউন হয়ে যায় । যার ফলে ওয়েবসাইটটি অফলাইনে চলে যায় । কিন্তু এটা খুব কম সময়ই ঘটে । তাই কোন হোস্টিং সার্ভিস প্রোভাইডার ১০০% আপটাইমের গ্যারান্টি দেয় না । তবে বেশীরভাগ হোস্টিং পরিষেবা কোম্পানি 99.99% আপটাইমের গ্যারান্টি দিয়ে থাকে । তাই এমন একটি হোস্টিং প্ল্যান নির্বাচন করুন যাতে সর্বোচ্চ আপটাইমের গ্যারান্টি থাকে ।
4. কন্ট্রোল প্যানেলের বৈশিষ্ট্য
হোস্টিং এর কন্ট্রোল প্যানেল ইউজার ফ্রেন্ডলি হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ । কারণ আপনার ওয়েবসাইটের বেশিরভাগ কাজই কন্ট্রোল প্যানেলের মাধ্যমে করতে হবে । এই প্যানেলের মাধ্যমেই আপনাকে ওয়েব পেজ আপলোড, ডোমেইন এবং সাবডোমেইন পরিচালনা করতে হবে ইত্যাদি । এছাড়াও ওয়েবসাইটকে স্প্যাম থেকে রক্ষা করার সমস্ত কাজ কন্ট্রোল প্যানেল নিজেই করে ।
5. ইমেইল
এছাড়াও আপনি যে হোস্টিং প্রোভাইডারের থেকে হোস্টিং কিনবেন সেখান থেকে ইমেইল হোস্টিং সার্ভিসও নিতে পারেন । কারণ আপনার কোম্পানির জন্য কাস্টম ইমেইল এড্রেস তৈরি করা খুব গুরুত্বপূর্ণ । যার ফলে আপনার সমস্ত কাজ প্রফেশনাল মানের হয়ে যায় ।
6. ব্যাকআপ
ব্যাকআপ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে একটি, যা প্রত্যেকটি ওয়েবসাইটের জন্য বাধ্যতামূলক ৷ ওয়েব হোস্টিং কেনার সময়, হোস্টিং প্রোভাইডার আপনাকে ব্যাকআপের অপশন দিচ্ছে কি না তা ভাল করে দেখে নিন । আবার ব্যাকআপের অপশন দিলেও সেটি কি ধরনের ব্যাকআপ প্রোভাইড করছে সেটাও দেখে নিন । অর্থাৎ হোস্টিং কোম্পানি আপনাকে অটো ব্যাকআপ এর অপশন দিচ্ছে, নাকি আপনাকে ম্যানুয়ালি ব্যাকআপ নিতে হবে তা দেখে নিন । কারণ অনেক সময় আপনার ওয়েবসাইটে কিছু সমস্যা হতে পারে বা আপনার সাইট হ্যাক হয়ে যেতে পারে । যার কারণে আপনাকে সম্পূর্ণ ওয়েবসাইটটি মুছে ফেলতে হতে পারে । এমন পরিস্থিতিতে, আপনার হোস্টিং এর যদি ব্যাকআপের সুবিধা থাকে, তাহলে আপনি খুব সহজেই আপনার ওয়েবসাইট পুনরুদ্ধার করতে পারবেন । এছাড়াও মেয়াদোত্তীর্ণ ওয়েবসাইট পুনরুদ্ধার করা যেতে পারে । এবং ডিলিট হয়ে যাওয়া সমস্ত ফাইল আবার পুনরুদ্ধার করা যেতে পারে । সেই কারণে হোস্টিং প্যাকেজে এই ফিচার থাকা বাধ্যতামূলক ।
7. গ্রাহক সহায়তা
ওয়েব হোস্টিং কেনার আগে অবশ্যই গ্রাহক সহায়তা বা কাস্টোমার সাপোর্ট সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য জেনে নেবেন । কারণ অনেক সময় যখন আমাদের হোস্টিংয়ে কোনো প্রবলেম হয়, তখন আমাদের হোস্টিং কোম্পানির কাস্টমার এক্সিকিউটিভদের দিয়েই সেই সস্ম্যার সমাধান করতে হয় । কারণ তাদের অনেক দক্ষ কর্মী রয়েছে, যারা খুব অল্প সময়ের মধ্যে আপনার সমস্যার সমাধান করে দিতে পারে । তাই হোস্টিং কেনার আগে সবসময় হোস্টিং প্রোভাইডারের কাস্টমার সাপোর্ট কেমন তা দেখে নেওয়া আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
ওয়েব হোস্টিং কোথায় থেকে কিনবেন ?
এখন প্রশ্ন হল কোথা থেকে ওয়েব হোস্টিং কিনবেন? এবং কেন? নিচে আমি আপনাদের সবচেয়ে বেশী জনপ্রিয় এবং নির্ভরযোগ্য ৫ টি হোস্টিং সার্ভিস প্রোভাইডার সম্পর্কে বলব । যারা বহু বছর ধরে খ্যাতির সাথে হোস্টিং সার্ভিস প্রোভাইড করে আসছে । আপনি নিশ্চিন্তে এর যে কোনটি বেছে নিতে পারেন । নিচে সেরা ৫ হোস্টিং প্রোভাইডারের তালিকা দেওয়া হল –
1. WordPress.com
আপনার যদি প্রযুক্তিগত জ্ঞান কম থাকে, তাহলে ওয়ার্ডপ্রেস আপনার জন্য সেরা অপশন । কারণ এতে আপনার তেমন কিছু করার দরকার পরে না । সবকিছু প্রায় সেটআপ করাই থাকে । এছাড়াও এতে ২৪×৭ কাস্টমার সাপোর্ট, রিয়েল-টাইম ব্যাকআপ এবং খুব ভাল নিরাপত্তা ব্যাবস্থা রয়েছে ।
WordPress.com-এ কাস্টমাইজেশনের জন্য খুব বেশী স্বাধীনতা পাবেন না । তবে এখানে আপনি CMS টুলস এবং ওয়েব ডেভেলপমেন্ট টুলস পাবেন, যা আপনি অন্য আর কোথাও পাবেন না ।
সেজন্য যদি আপনার ডাটাবেস, সার্ভার, মাইএসকিউএল, phpMyAdmin ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞান না থাকে, তাহলে WordPress হল আপনার জন্য সেরা অপশন । কারণ এতে আপনার এসব বিষয়ে জানার কোন প্রয়োজন হবে না । আপনি কোন ধরনের ঝামেলা ছাড়াই বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ এবং সিকিউর একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন ।
2. হোস্টগেটর
Hostgator, বর্তমান সময়ের একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং নির্ভরযোগ্য হোস্টিং সার্ভিস প্রোভাইডার । যা ন্যায্য মূল্যে দুর্দান্ত সার্ভিস প্রোভাইড করে । হোস্টগেটরে আপনারা ২৪×৭ কাস্টোমার সাপোর্ট এবং ব্যাকআপের মতো সমস্ত প্রয়োজনীয় সুবিধা পাবেন । এছাড়াও এটি ৪৫ দিনের মানি ব্যাক গ্যারান্টিও দিয়ে থাকে । অর্থাৎ, আপনি যদি একটি হোস্টিং প্ল্যান কিনে থাকেন এবং এটি আপনার পছন্দ না হয় তাহলে আপনি ৪৫ দিনের মধ্যে এটি ফেরত দিতে পারবেন এবং হোস্টগেটর আপনাকে সম্পূর্ণ টাকা ফেরত দেবে । ওয়ার্ডপ্রেস এবং অন্যান্য অনেক জনপ্রিয় হোস্টিং সার্ভিস প্রোভাইডাররাও এই সুবিধা দিয়ে থাকে ।
3. Bluehost
ব্লুহোস্ট হল আরও একটি সেরা হোস্টিং সার্ভিস প্রোভাইডার । এবং এর সার্ভিস কোয়ালিটি এত ভালো যে, ওয়ার্ডপ্রেস আনুষ্ঠানিকভাবে Bluehost কে সাপোর্ট করে । এবং এটিকে ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিংয়ের জন্য সেরা হোস্টিং হিসাবে বিবেচনা করে ।এমন পরিস্থিতিতে আপনি নিশ্চই বুঝতে পারছেন যে, ব্লুহোস্টের সার্ভিস কোয়ালিটি কতটা ভালো হবে?
Bluehost আপনাদের এসএসডি স্টোরেজ , ব্যাকআপ, মার্কেটিং টুলস এবং বিভিন্ন ধরনের ওয়েব ডেভেলপমেন্ট টুলস সরবরাহ করে । যেগুলোর সাহায্যে আপনি একটি ভাল মানের প্রফেশনাল ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন ।
4. হোস্টিংগার
হোস্টিংগার হল অন্যতম সস্তা হোস্টিং সার্ভিস প্রোভাইডার । এতে অনেক সময় ৭০% পর্যন্ত ছাড় পাওয়া যায় । অর্থাৎ, এটি সবচেয়ে কম দামে হোস্টিং প্রোভাইড করে । কিন্তু সস্তা হওয়ার পরেও এর সার্ভিসের কোয়ালিটি খুবই ভালো । আপনি যদি খুব কম দামে একটি ভাল মানের হোস্টিং প্ল্যান কেনার কথা ভেবে থাকেন তাহলে অবশ্যই Hostinger হবে আপনার জন্য সেরা অপশন ।
5. Godaddy
Godaddy মূলত একটি ডোমেইন রেজিস্ট্রার কোম্পানি হিসাবে বেশী পরিচিত । কিন্তু ডোমেইনের পাশাপাশি এটি হোস্টিং সার্ভিসও প্রদান করে থাকে । আপনি চাইলে Godaddy থেকে আপনার ওয়েবসাইটের জন্য ডোমেইন এবং হোস্টিং দুটোই কিনতে পারেন । তবে এতে আলাদা করে ডোমেইন কেনার প্রয়োজন নেই । কারণ এখানে হোস্টিং এর সাথে ডোমেইন ফ্রি বা বিনামুল্যে পাওয়া যায় ।Godaddy হোস্টিং প্ল্যানগুলো খুব বেশী ব্যয়বহুল বা অনেক সস্তা নয় ।
কোন হোস্টিং প্ল্যান কিনবেন ?
এখন আপনি নিশ্চই ভাবছেন যে, অনেক হোস্টিং প্রোভাইডার রয়েছে এবং তাদের প্রত্যেকের বিভিন্ন ধরনের হোস্টিং প্যাকেজ রয়েছে । তাহলে আপনি কোন প্ল্যানটি কিনবেন? মূলত আপনি কি ধরনের ওয়েবসাইটের জন্য হোস্টিং কিনবেন তার উপর নির্ভর করে হোস্টিং প্ল্যান কিনবেন । আপনি যদি একটি নতুন ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান, তাহলে আপনি প্রাইমারী প্ল্যানগুলো বেছে নিতে পারেন এবং পরবর্তীতে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী সেই প্যাকেজ আপগ্রেড করতে পারেন । আবার আপনি যদি একটি ভাল মানের প্রফেশনাল ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান তাহলে এর জন্য অন্তত একটি মিডরেঞ্জ প্যাকেজ প্রয়োজন হবে ।
আবার আপনি যদি স্টোরেজ বা ই-কমার্স ওয়েবসাইটের জন্য হোস্টিং কিনতে চান, তাহলে আপনাকে ফ্ল্যাগশিপ প্ল্যান কিনতে হবে । কারণ এই ধরনের ওয়েবসাইটের জন্য প্রয়োজন আনলিমিটেড ব্যান্ডউইথ, আনলিমিটেড স্টোরেজ, হাই সিপিইউ পাওয়ার, ফাস্ট স্পিড এবং ভালো মানের সিকিউরিটি । যা শুধুমাত্র আপনারা ফ্ল্যাগশিপ প্ল্যানগুলোতেই পাবেন ।
শেষ কথা
যারা নতুন ওয়েবসাইট বা ব্লগ তৈরি করেন, তাদের মধ্যে বেশীরভাগই জানেন না যে, কোন হোস্টিং তাদের ওয়েবসাইটের জন্য সঠিক হবে । যার কারণে অনেক সময় তারা ভুল ওয়েব হোস্টিং প্ল্যান কেনেন এবং পরবর্তীতে যখন ওয়েবসাইটটিতে ভিজিটর বেশী আসতে শুরু করে তখন তাদের সাইটেও সমস্যা আসতে শুরু করে । তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সাথে, হোস্টিং সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি । আর্টিকেলটি নিয়ে যে কোন ধরনের প্রশ্ন বা মন্তব্য থাকলে কমেন্ট সেকশনে জানান ।