বর্তমানে ডা. জাহাঙ্গীর কবির স্যার খুব পরিচত একটি নাম। বিশেষ করে যারা ফেসবুক এবং ইউটিউব ব্যাবহার করি তাদের অধিকাংশই ডা. জাহাঙ্গীর কবির স্যার সম্পর্কে জানি। আপনারা নিশ্চই এটাও জানেন যে, আজকাল ফেসবুক এবং ইউটিউবে ডা. জাহাঙ্গীর কবিরের বিভিন্ন রকম ডায়েট সম্পর্কিত পোষ্ট এবং ভিডিও গুলো বেশ ভালই জনপ্রিয়তা পাচ্ছে । যেখানে ডায়েট ছাড়াও স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন ধরনের পরামর্শমূলক অনেক তথ্য তিনি দিয়ে থাকেন। কীভাবে সঠিকভাবে শুধুমাত্র ডায়েটের মাধ্যমে (মেডিসিন ব্যাবহার না করে) দ্রুত ওজন কমানো এবং সুস্থ থাকা সম্ভব তা তিনি সেসব পোষ্ট বা ভিডিওতে তুলে ধরেন।
আজকের এই আর্টিকেলে ডা. জাহাঙ্গীর কবিরের দেয়া একটি বহুল আলোচিত ডায়েট চার্ট নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। সম্প্রতি যারা নতুন ডায়েট শুরু করতে চাচ্ছেন এ চার্টটি তাদের জন্য খুবই কার্যকারী হবে। যারা কোন ধরনের ওষুধ ব্যাবহার না করে ওজন কমাতে চান তারা এই চার্টটি ফলো করে দেখতে পারেন। সাম্প্রতিক সময়ে ডা. জাহাঙ্গীর কবিরের এই ডায়েটিং পদ্ধতি বেশ ভাল জনপ্রিয়তা পেয়েছে। মূলত এই ডায়েটিং সিস্টেমের সফলতার হার থেকেই এ জনপ্রিয়তা অর্জিত হয়েছে। আর এই জনপ্রিয় ডায়েটিং পদ্ধতিটি, কিটো ডায়েট বা কিটোজনিক ডায়েট নামে পরিচিত ।
Table of Contents
কিটো ডায়েট কি ?
কিটোজেনিক ডায়েট বা কিটো ডায়েট মুলত সুপার লো-কার্ব ডায়েট। এই ডায়েটিং পদ্ধতিতে কার্ব এক্সট্রিম লেভেলে কম থাকবে আর ফ্যাট অনেক বেশী থাকবে আর প্রোটিন মধ্যম লেভেলে থাকবে। আমাদের সাধারন ডায়েটিং পদ্ধতিতে ৫০% কার্বোহাইড্রেট, ২০% প্রোটিন বাকি ৩০% ফ্যাট থাকে। কিন্তু টিপিক্যাল কিটো ডায়েটে সর্বমোট ক্যালোরিক নিডের কার্ব ৫%, প্রোটিন থাকে ২৫% আর বাকি ৭০% ফ্যাট থাকে। এরমানে আপনি সারাদিনে যতটুকু খাদ্য গ্রহণ করবেন তার মধ্যে খাবারের পার্সেন্টেজ এইরকম হবে। এই কারনে আপনাকে জানতে হবে কোন খাবারে কতটুকু পরিমাণ কার্ব, প্রোটিন ও ফ্যাট রয়েছে।
কিটো ডায়েট কীভাবে কাজ করে
আসলে কিটো ডায়েট মূলত কার্বোহাইড্রেট এর পরিবর্তে দেহের ফ্যাট বা চর্বি কমাতে কাজ করে। আমাদের শরীর যখন কার্বোহাইড্রেট থেকে এনার্জি সংগ্রহ করতে পারে না, তখন সে ফ্যাট থেকে এনার্জি গ্রহণ করা শুরু করে। সাধারণত আমরা কার্বোহাইড্রেট থেকে শক্তি বা এনার্জি সংগ্রহ করে থাকি। কিন্তু এই কিটো ডায়েট করার ফলে শরীরে জমা চর্বি ভেঙ্গে গিয়ে শক্তি তৈরি করে এবং শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে।
কিটো ডায়েট চার্ট বা কিটো ডায়েট খাবার তালিকা
আপনাদের বোঝার সুবিধার জন্য কিটো ডায়েট চার্ট কে আজ আমরা দুইটি ভাগে ভাগ করে উপস্থাপন করব –
- আপাতত যেসব খাবার মোটেও খাবেন না
- যা খাওয়া যাবে বা খেতে বাঁধা নেই
আপাতত যেসব খাবার মোটেও খাবেন না –
- চাউল থেকে তৈরি এমন কিছু ( যেমনঃ ভাত, চাউলের রুটি, চাল দিয়ে তৈরি দ্রব্যাদি)।
- গমের থেকে তৈরি করা সব কিছু (যেমনঃ রুটি, পাওরুটি, বিস্কুট, গম দিয়ে বানানো অন্যান্য যে কোন দ্রবাদি)
- সব ধরনের ডাল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে
- আলু, মিষ্টি আলু, গাছ আলু বা আলু সদৃশ্য শর্করা জাতীয় সবজি যেমন: মূলা খাওয়া যাবে না।
- চিনি এবং চিনি দিয়ে তৈরি যা কিছু আছে তার কোনটাই খাওয়া যাবে না।
- দই, টক দই, দুধ অথবা সরাসরি দুধ থেকে তৈরি দ্রবাদি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
- মধু এবং মিষ্টি ফলমূল গ্রহন করা যাবে না।
- সয়াবিন তেল, সূর্যমুখীর তেল অথবা রাইস ব্যান তেল সম্পূর্ণ ভাবে বাদ দিতে হবে।
- ফার্মের মুরগি, যে মুরগিগুলো টেনারির বর্জ্য থেকে উৎপাদিত খাদ্য গ্রহন করে অথবা সয়া খাওয়ানো হয় সেগুলো খাবারের তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে।
- গরুর অথবা খাসির মাংস, যে গরু বা খাসি গুলোকে ইঞ্জেকশন প্রয়োগের মাধ্যমে মোটা তাজা করা হয় সেগুলো খাওয়া যাবে না ।
যা খাওয়া যাবে বা খেতে বাঁধা নেই
- যে কোন ধরনের সবুজ শাক – সবজি বেশি পরিমানে খেতে হবে । এছাড়া গাজর, কচি মিষ্টি কুমড়া অল্প পরিমাণে খাওয়া যেতে পারে ।
- টক জাতীয় ফল (যেমনঃ জলপাই, আমলকী)
- কচি ডাবের পানি
- যে কোন ধরনের মাছ খেতে পারবেন ৷ তবে তেল যুক্ত দেশি মাছের ভেতর পাংগাস, বোয়াল, সরপুঁটি, ব্রীগেড, গ্রাসকার্প, বাইম ইত্যাদি মাছ গুলো উত্তম ৷ তেল সমৃদ্ধ বা সাগরের মাছ হলে আরো বেশি ভালো।
- গরু এবং খাসির মাংস খেতে পারবেন তবে তা অবশ্যই ইঞ্জেকশন মুক্ত হতে হবে এবং ঘাস, লতা-পাতা বা খড় কুটো খেয়ে পালিত ৷ তবে খুব বেশি পরিমাণে খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
- গরু বা খাসির পায়া খেতে পারবেন। গরু বা খাসির পায়া খাওয়া এই সময়ে খুব উপকারী৷ তবে এটিও কম পরিমানে খেতে হবে।
- মুরগির ডিম খাওয়া যাবে ৷ ফার্মের মুরগির ডিম হলেও সমস্যা নেই, তবে দেশি মুরগি বা হাসের ডিম হলে বেশী ভালো হয়।
- সম্ভব হলে মাছের ডিমও খেতে চেষ্টা করবেন ।
- খাটি ঘি, অর্গানিক বাটার, এক্সট্রা ভার্জিন ওলিভয়েল, MCT ওয়েল, কোকোনাট ওয়েল খাওয়া যাবে ৷ এগুলো সব বড় শপে পাওয়া যায়, তবে নিজে তৈরী করে নিতে পারলে সবচেয়ে ভাল হবে।
- যে কোন ধরনের বাদাম (যেমনঃ চিনাবাদাম, কাজুবাদাম, পেস্তা বাদাম, অন্যান্য যে কোন বাদাম) খাওয়া যাবে ৷ আপনি চাইলে উপরে উল্লেখিত নারকেল তেলের সাথে বাদাম ব্লেন্ড করে পিনাট বাটার বানিয়েও খেতে পারেন ৷ যেটা খেতে খুব ভাল ৷ তবে অল্প পরিমাণে খাবেন।
- দুধ এবং চিনি ছাড়া রং চা বা কফি খেতে পারেন। এছাড়াও গ্রীণ টি এর সাথে লেবু, আদা এবং সামান্য লবন মিশিয়ে খেতে পারেন। কফির সাথে MCT ওয়েল, মাখন বা খাঁটি ঘি, এবং অর্গানিক কোকোনাট অয়েল মিশিয়ে বাটার কফি বানিয়েও খেতে পারবেন৷ এতে আরও বেশী ভালো কাজ হবে।
কিটো ডায়েট করার নিয়ম
সকালের নাস্তা –
- যাদের সকালে খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে তারা সকাল আটটা বা সাড়ে আটটার দিকে দুধ চিনি বাদে এক কাপ চা খেতে পারেন। চায়ের সঙ্গে আদা, লেবু এবং সামান্য লবণ মিশিয়ে নেবেন।
- কুসুম গরম পানির সাথে অল্প পরিমান অ্যাপেল সিডার ভিনেগার অথবা কোকনাট ভিনেগার মিশিয়ে খাবেন
- অল্প কিছু পরিমান লেবুর রস কুসুম কুসুম গরম পানির সঙ্গে মিশিয়েও খেতে পারেন।
- সকাল আটটায় সকালের খাবার খেলে দেড়টার মধ্যে দুপুরের খাবার খেয়ে নিতে হবে। এছাড়া যাদের দেরিতে নাস্তা করার অভ্যাস রয়েছে তারা বেলা এগারোটার দিকে উপরোক্ত পদ্ধতিতে সকালের নাস্তা করবেন এবং দুপুরের খাবার অবশ্যই আড়াইটা থেকে তিনটার মধ্যে কমপ্লিট করবেন।
দুপুরের খাবার-
- দুপুরে খাবার কিছু সময় আগে এক চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনেগার, এক গ্লাস পানির সাথে ভালভাবে মিশিয়ে খেয়ে নেবেন । এতে আপনার গ্যাসট্রিকের সমস্যা হবে না এবং চর্বি কাটাতেও খুব ভাল কাজ করে। দুপুরে খাবার আগে এটি অবশ্যই খেতে হবে।
- দুপুরের খাবারের তালিকায় সবুজ শাক, সবজি, মাছ বা মাংস , ঘি দিয়ে ভাজা ডিম, ঘি দিয়ে ভাজা বাদাম এবং এর সঙ্গে বাটারও রাখতে পারেন । এর সাথে অবশ্যই টমেটো, গাজর, ক্ষীরা বা শসার সালাদ খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
- শাক, সবজি সবসময় এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল দিয়ে রান্না করতে হবে। মাছ ভাজলে (কড়া ভাজা থেকে বিরত থাকবেন এতে মাছের খাদ্যগুণ অনেকাংশে নষ্ট হয়) বা রান্না করলে এই তেল দিয়েই করবেন। সবজি যতটা সম্ভব কম সেদ্ধ করে রান্না করবেন। যেন সবজির গুণগত মান নস্ট না হয়ে যায়।
- ডিম কুসুম সহ ঘি বা মাখনে ভেজে খাবেন। প্রতিদিন সর্বোচ্চ ছয়টা পর্যন্ত ডিম কুসুম সহ খেতে পারবেন। এতে করে কোন সমস্যা হবে না। কারণ ডিম হল প্রোটিন এবং ফ্যাটের খুব ভাল উৎস। তবে একবার যদি ফ্যাট এ্যাডাপটেশন হয়ে যায় সেক্ষেত্রে আপনি চাইলেও আর এত খেতে পারবেন না।
- দেশি মুরগির মাংস খেতে পারেন, তবে এক বা দুই টুকরো অথবা উল্লেখিত গরুর মাংস। যদি মাছ খান সেক্ষেত্রে মাংস খাবেন না। আর যদি মাংস খান তাহলে মাছ খাওয়া যাবে না। তবে বিদেশে অবস্থানকারীরা ব্রয়লার মুরগি এক টুকরো করে খেতে পারেন। কারণ বিদেশে ফার্মের মুরগিকে আদর্শ মানের খাবার খাওয়ানো হয় ।
- দুম্বা, উট অথবা ভেড়ার মাংস খেতে পারেন কিন্তু কোনভাবেই এক টুকরোর বেশি খাওয়া যাবে না।
বিকেলের নাস্তা –
বিকেলে যদি ক্ষুধা পায় সেক্ষেত্রে উপরে বর্ণিত চা, বাটার কফি এবং বাদাম, যে কোনো ধরনের মাখন বা ঘি দিয়ে ভেজে বা মিশিয়ে খাবেন ।
রাতের খাবার-
- রাতে খাবার খাওয়ার আগে দুপুরের মত ভিনেগার মিশ্রিত এক গ্লাস পানি খেয়ে নিবেন।
- রাতের খাবারও দুপুরের খাবারের অনুরূপ খাবেন। আইটেম কিছু কম বেশি হলেও কোনো সমস্যা নেই।
- রাত আটটার আগেই সব ধরনের খাবার খাওয়া শেষ করুন। এরপর বাকি রাতে পানি ছাড়া কিছুই খাওয়া যাবে না।
কতদিন কিটো ডায়েট করা উচিত
যে কোনও ডায়েট করার ক্ষেত্রে এটি সত্য, যদি আপনি জীবনধারার এই পরিবর্তন বজায় রাখতে পারেন, তবে তা অনুসরণ করা উচিত।পরিবর্তন দেখতে গেলে কমপক্ষে ২৮ দিনের মত সময় লাগে। তবে কারো কারো ক্ষেত্রে আশানুরূপ ফলাফল পেতে তিন মাস পর্যন্ত লেগে যেতে পারে। তবে এটি, সম্পূর্ণ নির্ভর করে কিটো ডায়েট গ্রহণকারী ব্যক্তির গ্লুকোজ বা কার্বোহাইড্রেটের উপর।
কারা কিটো ডায়েট চার্ট ব্যবহার করবেন না
কিডনিতে সমস্যা রয়েছে এমন ব্যক্তিরা, হৃদরোগের ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিরা, গর্ভবতী মহিলা বা নার্সিং মহিলারা, টাইপ-১ ডায়াবেটিস আছে এমন ব্যক্তিরা এবং পিত্তথলি অপারেশন করা হয়েছে এমন ব্যক্তিদের কিটো ডায়েট করা উচিত নয়।
যে বিষয় গুলো অবশ্যই মানতে হবে:
১) রাতে দশটা বা সর্বোচ্চ এগারোটার ভেতর আপনাকে ঘুমিয়ে পড়তে হবে৷ কারণ রাত দশটা থেকে শুরু করে দুইটার ভেতর আমাদের শরীর থেকে গ্রোথ হরমোন নি:সরন হয়৷ আর এই গ্রোথ হরমোনগুলো ফ্যাট বার্নিং করতে প্রচুর পরিমানে সহায়তা করে। যদি আপনি এই প্রাকৃতিক বিষয়টিকে অগ্রাহ্য করেন তাহলে আপনার ডায়েট অসম্পূর্ণ রয়ে যাবে এবং আপনি কখনই ভাল ফল পাবেন না।
২) খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠতে হবে৷ নামাজ পড়া শেষ করে (মুসলমানেরা) হাঁটতে বের হবেন। খালি পেটে হাটা, শরীরের ফ্যাট বার্ণিং করতে অত্যন্ত কার্যকরী । আপনার হাঁটার গতি নির্ভর করবে আপনার বয়স অনুযায়ী। আপনার বয়স যদি চল্লিশের উপরে হয় স্বাভাবিক গতিতে ৪০-৬০ মিনিট হাটুন। আর আপনার বয়স যদি চল্লিশের নিচে হয় তাহলে জগিং করুন অথবা জোরে জোরে হাঁটুন ৪০-৬০ মিনিট। তবে একটি বিষয় খেয়াল রাখবেন, হাঁটতে হাঁটতে যেন আপনি হাঁপিয়ে না যান অথবা শ্বাস কষ্ট না হয়। যতটুকুই হাঁটুন বা ব্যায়াম করুন, আপনার শরীরের কন্ডিশনের সাথে মানিয়ে করুন।
৩) দ্রুত মেদ ভুরি কমাতে চাইলে ইয়োগা করতে পারেন ৷ ইয়োগা করার সিস্টেম ইউটিউব থেকে দেখে নিতে পারেন।
৪) সাত থেকে আট দিন উপরের লিখিত নিয়ম গুলো সম্পূর্ণরূপে মেনে চলুন। এই সময়টার মধ্যে আপনার শরীর ফ্যাট বার্নিং করতে বা চর্বি গলাতে শিখে যাবে৷ এটি হচ্ছে আপনার ডায়েটিং এর ১ম ধাপ।
৫) এবার দ্বিতীয় ধাপে শুরু করুন না খেয়ে থাকা বা রোজা রাখা ৷ সেহরীতে শুধুমাত্র পানি খেয়ে রোজা রাখা শুরু করুন ৷ স্বাভাবিক রোজার দিনের মতো দিনের বেলা পানি বা অন্য যে কোন কিছু খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
৬) বাদাম, মাখন এবং শসা দিয়ে ইফতার করবেন ৷ সাথে সালাদ এবং টক ফল খেতে পারেন।
৭) খাবার আগে ভিনেগার মিশ্রিত পানি খেয়ে রাতের খাবার উপরে উল্লিখিত নিয়ম অনুসারে খাবেন এবং অবশ্যই আটটার মাঝে সমস্ত খাবার গ্রহন করা শেষ করবেন। আরও ভালো ফল পেতে ইফতার শেষ করার এক ঘন্টার মধ্যে খাবার শেষ করুন তারপর থেকে পানি খেতে থাকুন।
৮) রোজা রাখা শুরু করলে অনেক সময় বসা অবস্থা থেকে দাঁড়াতে গেলে মাথা সামান্য ঘুরতে পারে ৷ সেক্ষেত্রে অল্প পরিমান লবন মিশ্রিত পানি খাবেন প্রতিদিন ৷ এছাড়াও ডাবের পানি পান করতে পারেন৷ দিনে একটি করে কচি ডাব খাওয়া খুবই জরুরি।
৯) একটানা যতগুলো রোজা রাখতে পারবেন আপনি তত দ্রুত ফল পাবেন। তবে ৭ দিন পর পর দুইদিন করে রোজা বিরতি দিবেন ৷ ঐ দুইদিনও চার ঘন্টার ব্যাবধানে দুই বেলা করে খাবেন ৷ খাদ্যের তালিকা আগের মতই ৷ বাকি সময় ভিনেগার, লেবু, গ্রীন টি বা লবন মিশ্রিত পানি এগুলো পান করবেন।
১০) যদি এক টানা রোজা রাখতে সমস্যা হয় তবে প্রতি সপ্তাহে অন্তত দুইটা রোজা রাখুন ৷ আর যাদের সারা দিনে রোজা রাখতে সমস্যা হয় তারা উপরের মেনুগুলো অনুসরণ করে খাদ্যবিরতির সময়টা বাড়িয়ে দেবেন ৷ দুইবেলা করে খাবেন চার ঘন্টা পর পর ৷ খাদ্যের তালিকা আগের মতই, বাকী বিশ ঘন্টা ভিনেগার, লেবু, গ্রিন টি, লবন মিশ্রিত পানি এগুলো খেতে থাকবেন ৷ সেই সাথে নিয়মিত হাঁটুন এবং পর্যাপ্ত ব্যায়াম করুন। আশা করা যায় দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যেই আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে যেতে পারবেন।
আরো কিছু উল্লেখযোগ্য বিষয়:
১) যতটা সম্ভব টেনশন মুক্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে।
২) সবসময় হাসি খুশি ভাবে থাকার চেষ্টা করবেন।
৩) প্রত্যেকদিন হাঁটার সময় বা হাঁটার পরে সকালের স্নিগ্ধ রোদ শরীরে লাগানোর চেষ্টা করবেন৷ কারণ রোদে থাকা ভিটামিন ডি আমাদের শরীরকে সুস্থ সবল রাখতে সাহায্য করে।
৪) রাত আটটার মধ্যে সমস্ত ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যাবহার বন্ধ করুন । এতে করে আপনার ঘুম অনেক ভালো হবে।
৫) মুসলমান হলে নিয়মিত নামাজ আদায় করবেন। বেশি বেশি করে নফল নামাজ পড়বেন। এতে আপনার ফরজ আদায় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শারীরিক ব্যায়াম হবে, যা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। অন্য ধর্মের হলে নিজ নিজ ধর্মের রীতি অনুযায়ী সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করুন। আর সৃষ্টিকর্তার উপর সবসময় সবপরিস্থিতিতে বিশ্বাস এবং ভরসা রাখুন।
৬) বাহিরের সকল প্রকার খাবার সম্পূর্ণভাবে পরিহার করুন।
৭) রান্নার জন্য প্যাকেট মসলা না কিনে বাজার থেকে গোটা মসলা কিনে নিয়ে মেশিনে গুড়ো করে নিন৷ সকল প্রকার প্যাকেটজাত দ্রব্য বাদ দেওয়ার চেষ্টা করুন।
৮) রান্নার সময় সয়াবিন তেলের পরিবর্তে যদি এক্সটা ভার্জিন অলিভওয়েল ব্যবহার করতে না পারেন সেক্ষেত্রে আপাতত সরিষার খাঁটি তেল (বাজার থেকে সরিষা কিনে নিজেরা মেশিনে প্রক্রিয়া করে তৈরি করে নিন) ব্যবহার করুন ৷
অনেকের মনে একটি কমন প্রশ্ন কাজ করে আর তা হল কিটো ডায়েট চার্ট কি নিরাপদ ?
উত্তরঃ হ্যাঁ কিটো ডায়েট চার্ট নিরাপদ একটি ডায়েট চার্ট,। তবে যাদের কিডনিতে সমস্যা, হৃদরোগের সমস্যা, গর্ভবতী মহিলা অথবা টাইপ-১ ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের এই কিটো ডায়েট চার্ট ফলো না করাই ভাল ।