আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগ পোস্টের Google Ranking এবং Indexing নিয়ে চিন্তায় থাকেন, তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য উপকারী হতে পারে । আজ আমরা আপনাদের সাথে ১৫ টি বিষয় নিয়ে আলোচনা করব, যেগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার করে আপনি আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটকে গুগলে র্যাঙ্ক করতে পারেন । একটি ওয়েবসাইট বা ব্লগের পোস্ট Google সার্চ রেজাল্টে র্যাঙ্ক বা সূচী না হওয়ার পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে ।
আপনি যদি একটি নতুন ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরি করে থাকেন, তাহলে হয়ত আপনার সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) সম্পর্কে জ্ঞান কম থাকতে পারে অথবা আপনি আপনার ওয়েবসাইটে সঠিকভাবে কাজ করছেন না । এগুলো ছাড়াও, আরও কিছু বিষয় রয়েছে, যেগুলো আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট র্যাঙ্ক করার জন্য প্রয়োজনীয় । বেশীরভাগ নতুন ব্লগাররা, গুগলে কীভাবে তাদের নতুন ব্লগকে র্যাঙ্ক করবেন তা নিয়ে চিন্তিত থাকেন, তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের, গুগলে ব্লগ র্যাঙ্ক করার ১৫ টি টিপস সম্পর্কে বলব । এই টিপসগুলো ফলো করে আপনি সহজেই গুগলে আপনার একটি নতুন ওয়েবসাইট র্যাঙ্ক করতে পারবেন ।
Table of Contents
গুগলে ব্লগ র্যাঙ্ক করার ১৫ টি টিপস
বর্তমান সময়ে ব্লগিং একটি ব্যবসার মত হয়ে উঠেছে । আর ব্লগিংয়ের প্রতি এই আগ্রহের প্রধান কারণ হল “ব্লগ থেকে টাকা ইনকামের সুযোগ” । মানুষ এখন ব্লগিংকে একটি ব্যবসা বা পেশা হিসেবে নিচ্ছে । আর তাই এই ক্ষেত্রে প্রচুর প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে । আমরা সকলেই জানি যে, একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট থেকে অর্থ উপার্জন করতে, “সেই ব্লগটিতে প্রতিদিন হাজার হাজার ইউনিক ভিজিটরের প্রয়োজন” । এই ক্ষেত্রে, Google সার্চইঞ্জিন, প্রতিদিন আপনাদের ব্লগে প্রচুর অরগ্যানিক ট্র্যাফিক সরবরাহ করতে পারে ।
এবং তাই, একজন ব্লগার হিসাবে, আমরা সব সময় আমাদের ব্লগটিকে “গুগল সার্চ ইঞ্জিন”-এর শীর্ষে নিয়ে আসার চেষ্টা করি । আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটকে গুগলে র্যাঙ্ক করার জন্য কিছু টিপস নিচে দেওয়া হল –
ভাল ডোমেইন নাম নির্বাচন করুন
একটি নতুন ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরি করার আগে, এটির জন্য সঠিক ডোমেইন নাম নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ । অনেক নতুন ব্লগার রয়েছেন, যারা টপ লেভেলের ডোমেইন না কিনে, সাবডোমেইনে তাদের ব্লগ তৈরি করেন । কিন্তু বর্তমান সময়ে প্রতিযোগিতা এত বেশী যে, একটি ওয়েবসাইট বা ব্লগ র্যাঙ্ক করাতে হলে টপ লেভেলের ডোমেইন থাকা জরুরি হয়ে পড়েছে । তাই আপনি আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটের জন্য .Com, .net, .org, .bd ইত্যাদি থেকে যেকোনো হাই লেভেল ডোমেইন নাম বেছে নিতে পারেন ।
এছাড়াও আপনার ব্লগের জন্য একটি নির্দিষ্ট নিশ টার্গেট করুন এবং সেই নিশের উপর ভিত্তি করে একটি ডোমেইন নাম নির্বাচন করুন । এর ফলে, যখন কেউ সেই নিশ রিলেটেড কিওয়ার্ড লিখে গুগলে সার্চ করবে, তখন আপনার ওয়েবসাইটের Google সার্চ রেজাল্টের শীর্ষে আসার সম্ভাবনা বেড়ে যায় ।
গুগল সার্চ কনসোলে ওয়েবসাইটটি সাবমিট করুন
যেকোনো ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরি করার পর, প্রথমেই সেটিকে Google Search Console-এ সাবমিট করতে হবে । কারণ একটি ওয়েবসাইটের ব্লগ পোস্টগুলি ইন্ডেক্স হওয়ার পরই সেই ওয়েবসাইটে ট্রাফিক আসা শুরু হবে । তাই সাইট তৈরি করার পর প্রথমেই ওয়েবসাইটটি গুগল সার্চ কনসোলে জমা দিতে হবে ।
যদি আপনার ওয়েবসাইটটি একদম নতুন হয়, তাহলে Google Bots, সেই নতুন ওয়েবসাইট ক্রল করতে একটু বেশী সময় নেবে ।Google সার্চ কনসোলে একটি নতুন ওয়েবসাইট ইন্ডেক্স হতে ১ মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে ৷ সুতরাং, যদি আপনার ব্লগ সাইটটি নতুন করে গুগলে সাবমিট করা হয়, তাহলে সমগ্র ওয়েবসাইটটি গুগলে ইন্ডেক্স এবং র্যাঙ্ক হতে সময় লাগবে । আপনি যদি Google-এ আপনার ব্লগের ইন্ডেক্স করা পেজগুলো দেখতে চান তাহলে, Google-এ গিয়ে site:yoursiteurl.com লিখে সার্চ করুন ৷ এখানে yoursiteurl.com এর জায়গায় আপনার ওয়েবসাইটের লিংক দিন ।
এর পরে আপনার ওয়েবসাইটের সমস্ত ইন্ডেক্স করা পেজগুলো দেখতে পাবেন । তবে নতুন ব্লগ বা ওয়েবসাইটের ক্ষেত্রে গুগলের প্রথম পাতায় র্যাঙ্কিং পাওয়া সহজ নয় । কারণ, যখন আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগ নতুন হবে, তখন সেই ওয়েবসাইটের ডোমেইন অথরিটি (DA) একদম কম থাকবে । এবং, Google একটি নতুন এবং কম ডোমেইন অথোরিটি (DA) সহ ওয়েবসাইটগুলিকে ট্রাস্ট করে না ।
আপনি যখন নিয়মিত আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগে আর্টিকেল পাবলিশ করবেন, তখন আপনার ব্লগ সাইটের ডোমেইন অথরিটি ধীরে ধীরে বাড়তে থাকবে । আর এভাবে আপনি যদি নিয়মিত, ভাল, হাই কোয়ালিটি এবং এসইও অপ্টিমাইজড আর্টিকেল লিখতে থাকেন, তাহলে ধীরে ধীরে আপনার ব্লগ পোস্ট গুগল সার্চ রেজাল্টের শীর্ষে চলে আসবে ।
গুগল সার্চ কনসোলে সাইটম্যাপ সাবমিট করুন
সাইটম্যাপ হল, একটি ডোমেইনে উপস্থিত ওয়েবসাইটের সমস্ত ওয়েবপেজের একটি লিস্ট । সাইটম্যাপ, আপনার ওয়েবসাইটের গঠন সম্পর্কে গুগলকে ধারনা দেয় । এজন্য আপনাকে গুগল সার্চ কনসোলে আপনার ব্লগের সাইটম্যাপ সাবমিট করতে হবে । একটি সাইটম্যাপ হল একটি ইন্ডেক্স ফাইল, যাতে গুগলকে ইন্ডেক্স করতে হয়, এমন URL বা লিংক গুলো থাকে ৷
গুগল ছাড়াও, অন্যান্য ওয়েবমাস্টার টুল, যেমন Bing, Yandex ইত্যাদি সার্চ ইঞ্জিনেও আপনার ওয়েবসাইটের সাইটম্যাপ সাবমিট করুন । এর সাহায্যে, আপনার ওয়েবসাইটের ওয়েব পেজগুলি অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনগুলিতেও ইনডেক্স হবে এবং আপনি আপনার ওয়েবসাইটে আরও বেশী ট্র্যাফিক পাবেন । সেই সাথে, আপনার ওয়েবসাইটের ওয়েব পেজগুলি সহজে এবং দ্রুত ইনডেক্স হবে ।
কম প্রতিযোগিতামূলক কীওয়ার্ড নির্বাচন করুন
আমরা আগেই বলেছি, ব্লগিং এ প্রতিযোগিতা অনেক বেড়ে গেছে । প্রতিদিন একই বিষয়ের উপর হাজার হাজার ব্লগ পোস্ট পাবলিশ করা হচ্ছে এবং গুগল সেগুলোকে ইনডেক্স করছে । এখন, আপনি যদি কোন নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর একটি ব্লগ তৈরি করেন বা একটি কীওয়ার্ডকে টার্গেট করে এমন একটি ব্লগ পোস্ট লিখছেন, যেটি সম্পর্কে গুগলের কাছে ইতিমধ্যেই সেই ওয়েবসাইট বা কীওয়ার্ড সম্পর্কে হাজার হাজার তথ্য বা ওয়েবসাইট রয়েছে । তাহলে সেই বিষয় বা কীওয়ার্ড দিয়ে গুগল সার্চের প্রথম পেজে র্যাঙ্কিং পেতে আপনাকে অনেক প্রতিযোগী ওয়েবসাইটের মোকাবেলা করতে হবে । এই ক্ষেত্রে, যদি আপনার প্রতিযোগী ওয়েবসাইটের কন্টেন্টের মান, এসইও এবং ডোমেইন অথোরিটি সবই উচ্চ মানের হয়, তবে আপনার পক্ষে সেই কীওয়ার্ড বা বিষয় দিয়ে গুগলে ওয়েবসাইটটি র্যাঙ্ক করা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে ।
এই কারণে, আপনার ওয়েবসাইটের জন্য কোন পোস্ট লেখার আগে, আপনাকে কীওয়ার্ড নিয়ে গবেষণা করতে হবে । কীওয়ার্ড রিসার্চ করার মাধ্যমে , আপনি যেকোন কীওয়ার্ড সম্পর্কে তথ্য কালেক্ট করতে পারেন, যা গুগলে সার্চ করা হয় । গুগল সার্চ ইঞ্জিনে প্রতি মাসে সেই কীওয়ার্ড কতবার সার্চ করা হচ্ছে, সেই কীওয়ার্ডকে টার্গেট করে কতগুলো আর্টিকেল লেখা আছে, ইত্যাদি বিষয় আপনি কীওয়ার্ড রিসার্চের মাধ্যমে জানতে পারবেন । ফ্রি তে কিওয়ার্ড রিসার্চ করার জন্য আপনারা Google Keyword Planner টুল ব্যবহার করতে পারেন ।
কোয়ালিটি সম্পন্ন কন্টেন্ট লিখুন
আপনার লেখা কন্টেন্টের মান যদি খারাপ হয়, তাহলে গুগল সার্চের প্রথম পাতায় র্যাঙ্কিং পেতে অনেক সমস্যা হবে । এখন প্রশ্ন হল এই “কোয়ালিটি কন্টেন্ট” মানে কি? উত্তরটা খুবই সহজ । কোয়ালিটি কন্টেন্ট বা কোয়ালিটি আর্টিকেল মানে হল, এমনভাবে আর্টিকেল লেখা, যাতে আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটররা, আপনার ব্লগ থেকে তাদের প্রশ্নের সঠিক উত্তর বা সমাধান পায় । পৃথিবীতে অনেক ব্লগার রয়েছেন, যারা স্পষ্টভাবে তাদের পোস্ট লিখেন না । তাদের আর্টিকেল লেখার কোন নিয়ম-কানুন নেই ।ফলস্বরূপ, ভিজিটররা তাদের পোস্ট পছন্দ করে না এবং গুগল সেই ওয়েবসাইটগুলিকে কখনই তাদের ফাস্ট পেজে র্যাঙ্ক করে না । তাই সবসময় চেষ্টা করুন যেকোনো বিষয়ের উপর বিস্তারিত এবং সঠিক তথ্য দিয়ে আর্টিকেল লেখার । ছোট ছোট প্যারাগ্রাফ করে আর্টিকেল লেখার চেষ্টা করুন এবং কমপক্ষে ১০০০ থেকে ১৫০০ শব্দের মধ্যে একটি তথ্যপূর্ণ আর্টিকেল পাবলিশ করার চেষ্টা করুন ।
একটি বিষয় মনে রাখবেন, গুগলের কাছে ইতিমধ্যেই যেকোন বিষয় বা কীওয়ার্ড এর জন্য প্রচুর ওয়েব পেজ রয়েছে । সুতরাং, গুগল কখনই নিম্নমানের সামগ্রীর জন্য আপনার ওয়েবসাইটকে র্যাঙ্ক করবে করবে না । তাই সব সময় কোয়ালিটি সম্পন্ন কন্টেন্ট লেখার চেষ্টা করুন ।
সামাজিক মিডিয়াতে আর্টিকেল শেয়ার করুন
সোশ্যাল মিডিয়া হল, একটি নতুন ওয়েবসাইটে ট্রাফিক পাওয়ার সবচেয়ে সেরা উপায় । এটি ছাড়াও, যদি আপনার ওয়েবসাইটটি বেশি বেশি শেয়ার করা হয়, তবে Google এই প্রতিক্রিয়াটি বুঝতে পারে এবং এর ফলে আপনার ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট, গুগলে দ্রুত ইনডেক্স হয় এবং সেই সাথে আপনার ওয়েবসাইটের র্যাঙ্কিং উন্নত করতে সহায়তা করে ।
এছাড়াও, আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইটের লিংক সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করেন, তাহলে সেখানে আপনার ওয়েবসাইটের জন্য একটি রেফারেল লিঙ্ক তৈরি হবে এবং সেখান থেকে আপনার ওয়েবসাইটের জন্য একটি Dofollow বা Nofollow ব্যাকলিংকও পাওয়া যায়, যা একটি ওয়েবসাইটের র্যাঙ্কিং এর খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
তবে আর্টিকেলটি শেয়ার করার সময়, আপনার একটি বিষয় মাথায় রাখা উচিত যে, এটি শুধুমাত্র এমন সব সোশ্যাল মিডিয়া তে শেয়ার করুন, যেখানে ক্লিক করার সাথে সাথে ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইটের কন্টেন্টে প্রবেশ করতে পারে ।
মোবাইল ফ্রেন্ডলি ওয়েবসাইট তৈরি করুন৷
বর্তমানে, প্রায় ৭০ থেকে ৮০% ওয়েব সার্চ স্মার্টফোনের মাধ্যমে করা হয় । আর তাই, মোবাইল-ফ্রেন্ডলি সার্চ রেজাল্ট উন্নত করার জন্য গুগল এটিকে র্যাঙ্কিং ফ্যাক্টর হিসেবে নিতে শুরু করেছে । এর অর্থ হল, একটি ওয়েবসাইট মোবাইল-ফ্রেন্ডলি করা, গুগলের একটি র্যাঙ্কিং ফ্যাক্টর হিসাবে বিবেচিত হয় । যদি মোবাইলে আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগ ভালো না দেখায়, তাহলে আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগের র্যাঙ্কিং কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে । সুতরাং, আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগের জন্য থিম বা টেমপ্লেট নির্বাচন করার আগে, সেই থিম বা টেমপ্লেট মোবাইল ফ্রেন্ডলি কিনা তা পরীক্ষা করে দেখুন । আপনার ওয়েবসাইট মোবাইল ফ্রেন্ডলি কিনা তা জানার জন্য আপনি Google এর মোবাইল ফ্রেন্ডলি টেস্টিং টুল ইউজ করতে পারেন ।
ওয়েবসাইট লোডিং স্পীড বাড়ানোর চেষ্টা করুন
সাধারণত, ব্যবহারকারীরা কোনো ওয়েবসাইট ওপেন করতে বেশিক্ষণ সময় অপেক্ষা করতে চান না । যদি আপনার ওয়েবসাইট গুগল সার্চ রেজাল্টে শো করে এবং যদি এটি ওপেন হতে বেশি সময় নেয়, তাহলে ভিজিটররা আপনার ওয়েবসাইট ওপেন হওয়ার জন্য অপেক্ষা করবে না এবং তারা আপনার ওয়েবসাইটের পরিবর্তে অন্য ওয়েবসাইটের লিঙ্কে প্রবেশ করবে । আর এই রকম চলতে থাকলে, গুগলের কাছে মনে হবে যে, আপনার সাইটের কন্টেন্ট ভিজিটরদের জন্য উপযুক্ত নয় । তখন গুগল আপনার ওয়েবসাইটের র্যাঙ্কিং কমিয়ে দিতে পারে ।
এছাড়াও গুগল, ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিডকে, র্যাঙ্কিং ফ্যাক্টর হিসেবে বিবেচনা করে । সাধারনত গুগল, এমন ওয়েবসাইটগুলিকে র্যাঙ্ক করে না, যেগুলো লোডিং হতে 3 সেকেন্ডের বেশি সময় লাগে । আপনি গুগলের পেজ স্পিড ইনসাইটস, পিংডম এবং জিটিমেট্রিক্স ইত্যাদির মতো অনলাইন টুলের মাধ্যমে, আপনার ওয়েবসাইটের লোডিং টাইম পরীক্ষা করতে পারেন ।
আপনার ওয়েবসাইটের লোডিং স্পীড ঠিক করতে, জাভাস্ক্রিপ্ট, CSS এবং লাইটওয়েট থিম ইউজ করুন । আপনি যদি একজন ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহারকারী হন, তাহলে ওয়েবসাইটের স্পীড ঠিক রাখার জন্য কিছু প্লাগইন ইউজ করতে পারেন ।
টাইটেল এবং বর্ণনায় আকর্ষণীয় শব্দ ব্যবহার করুন
যেকোনো পোস্ট লেখার সময়, একটি আকর্ষণীয় টাইটেল এবং বিবরণ ব্যবহার করুন । কারণ গুগলের সার্চ রেজাল্টে শুধুমাত্র আপনার ওয়েবসাইটের পোস্টের টাইটেল এবং বিবরণ দেখানো হয় । আপনি যদি একটি আকর্ষণীয় টাইটেল এবং বিবরণ লিখেন, তাহলে আরও বেশি সংখ্যক ভিজিটর আপনার পোস্টের লিংকে ক্লিক করবে । এর ফলে আপনার ওয়েবসাইটের CTR (ক্লিক থ্রু রেট) বাড়াবে এবং এটি আপনার ওয়েবসাইটের র্যাঙ্কিং উন্নত করতে সহায়তা করবে । কারণ বেশি ক্লিক হওয়ার কারণে, গুগল মনে করবে যে, এই ওয়েবসাইটে এমন কিছু রয়েছে যা ভিজিটরদের জন্য প্রয়োজনীয় । এবং এইভাবে এটি আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটের র্যাঙ্কিং বাড়াতে সাহায্য করবে ।
কোয়ালিটি কন্টেন্ট লিখুন
কোয়ালিটি কন্টেন্ট অর্থ হল, এমন কন্টেন্ট লিখুন, যাতে ভিজিটরদের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য থাকে । এছাড়াও সব সময় নিজে আর্টিকেল লিখুন, অন্য কারও ওয়েবসাইট থেকে পোস্ট কপি করবেন না । সেইসাথে আপনার আর্টিকেলের মাঝে অন্য পোস্টের লিঙ্ক এড করুন । পোস্টটি পড়তে, ভিজিটরের যেন কোন অসুবিধা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন । পোস্টটি ভালোভাবে ফরম্যাট করতে বুলেট, নাম্বারিং ইত্যাদি ইউজ করুন।
আপনার লেখা যদি ভিজিটরদের ভাল লাগে, তাহলে তারা আপনার ব্লগের অন্যান্য পোস্টগুলি পড়ার জন্য, আপনার অন্যান্য পোস্টে ক্লিক করতে পারেন । আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটর যত বেশী বেশি সময় ব্যয় করবে, আপনার ওয়েবসাইটের র্যাঙ্কিং তত বাড়বে । আপনি যদি অন্যের ব্লগ থেকে কন্টেন্ট চুরি করে বা কপি করে আপনার নিজের ব্লগে পাবলিশ করেন, তাহলে এই ক্ষেত্রেও আপনার ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট গুগলে র্যাঙ্ক হবে না । মনে রাখবেন যে, গুগল খুব সহজেই বুঝতে পারে যে, আপনি নিজে কোন কন্টেন্ট লিখছেন, নাকি অন্য কোন ওয়েবসাইট থেকে কপি করেছেন । উপরন্তু, Google এটাও জানে যে, কোন ওয়েবসাইটে ইতিমধ্যেই সেই কন্টেন্ট প্রকাশ করা হয়েছে । যা থেকে কন্টেন্ট চুরি করা বা কপি করা হয়েছে । সুতরাং, যদি আপনার ব্লগের পোস্ট, অন্য কোন ব্লগ বা ওয়েবসাইট থেকে কপি করা হয় বা চুরি করা হয়, তাহলে আপনার গুগল সার্চে র্যাঙ্কিং পাওয়ার স্বপ্ন, শুধু স্বপ্ন হয়েই থেকে যাবে ।
হাই কোয়ালিটি ব্যাকলিংক তৈরি করুন
যখনই গুগল, কোনো ওয়েবসাইটের কোনো পেজকে ক্রল করে, ইনডেক্স করে এবং র্যাঙ্ক করে, তখন এটি সেই পেজের জন্য র্যাঙ্কিং ফ্যাক্টর হিসেবে ব্যাকলিংককেও র্যাঙ্ক করে । আপনার ওয়েবসাইটের পেজের জন্য যত বেশি এক্সটারনাল ব্যাকলিংক থাকবে, গুগলের চোখে, আপনি আপনার ব্লগের জন্য একটি গ্রিন সিগন্যাল পাবেন । কারণ ব্যাকলিংক হল, গুগলের একটি র্যাংকিং ফ্যাক্টর এবং সেই সাথে বিশ্বাসের প্রতীক । একটি সাইট আপনার ওয়েবসাইটকে একটি Dofollow ব্যাকলিংক দিচ্ছে, এর অর্থ হল যে, ওয়েবসাইটটি আপনার ওয়েবসাইটকে সাপোর্ট করে এবং সেই কারণে গুগল আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটকেও, ব্যাকলিংকের ভিত্তিতে র্যাঙ্ক করে । তবে সব সময় হাই কোয়ালিটি ওয়েবসাইট থেকে ব্যাকলিংক নেওয়ার চেষ্টা করবেন । আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইটের জন্য, লো কোয়ালিটির ব্যাকলিংক তৈরি করেন, তাহলে তা আপনার ওয়েবসাইটের র্যাঙ্কিং এর ক্ষেত্রে কোন কাজে আসবে না ।
উপরন্তু, খারাপ এবং লো কোয়ালিটির ব্যাকলিংকের কারণে, Google আপনার ওয়েবসাইটকে পানিশমেন্ট দিতে পারে । আর যদি তা হয়, তাহলে আপনার ওয়েবসাইটের গুগল র্যাঙ্কিং মারাত্মকভাবে নিচে নেমে যাবে । নতুন ওয়েবসাইটের, ডোমেইন অথরিটি (DA) বাড়ানোর জন্য ব্যাকলিংক খুবই গুরুত্বপূর্ণ । হাই কোয়ালিটির ব্যাকলিংক তৈরি করতে আপনার ব্লগে উচ্চ মানের কন্টেন্ট লিখুন এবং পাবলিশ করুন ৷ ফলস্বরূপ, অনেক মানুষ স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনাকে ব্যাকলিংক দিতে বাধ্য হবে । এছাড়াও, হাই ডোমেইন অথোরিটি আছে, এমন ব্লগে গেস্ট পোস্ট করুন । আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট সম্পর্কিত অন্যান্য ব্লগ পোস্টে কমেন্ট করুন । শীর্ষ উচ্চ মানের ব্লগ ডিরেক্টরিতে আপনার নিজের ব্লগ বা ওয়েবসাইট সাবমিট করুন ।
আমাদের এই ওয়েবসাইট থেকে ডু-ফলো ব্যাকলিংক নিতে, আমাদের ফেসবুক পেজে যোগাযোগ করুন ।
ব্লগের বাউন্স রেট কমান
ব্লগ বা ওয়েবসাইটের র্যাঙ্কিং এর ক্ষেত্রে, বাউন্স রেট খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় । আপনি Google Analytics ড্যাশবোর্ডে, আপনার ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেখতে পাবেন । আপনি যদি এখনও আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটকে Google Analytics এর সাথে সংযুক্ত না করে থাকেন, তাহলে আর দেরি না করে এখনি সংযুক্ত করুন । গুগল অ্যানালিটিক্সের মাধ্যমে, আপনি আপনার ওয়েবসাইটের সাথে সম্পর্কিত সমস্ত ডেটা দেখতে পাবেন ।
বাউন্স রেট বলতে বোঝায় যে, কতজন ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইটে প্রবেশ করছেন এবং আপনার সাইটের কন্টেন্ট পড়ছেন এবং কতজন ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে কোন ধরনের কন্টেন্ট না পড়েই ফিরে যাচ্ছেন । বাউন্স রেট যতটা সম্ভম কম রাখার চেষ্টা করুন । একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইটের জন্য ৩০% এর চেয়ে কম বাউন্স রেট ভাল বলে মনে করা হয় । এর অর্থ হল যে, আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটরদের মধ্যে ৭০%, আপনার ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট পড়েন এবং বাকি ৩০% ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইটে শুধু প্রবেশ করেন কিন্তু তারা কোন কন্টেন্ট না পরেই আপনার ওয়েবসাইট থেকে বের হয়ে যান ।
সাইটের বাউন্স রেট কমাতে, হাই কোয়ালিটির কন্টেন্ট লিখুন । কন্টেন্টের মাঝখানে অন্যান্য পোস্টের হাইপারলিঙ্ক যোগ করুন এবং ওয়েবসাইট ডিজাইনকে আরও বেশী আকর্ষণীয় করে তুলুন । অর্থাৎ এমন কিছু করুন, যা আপনার ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা ভিজিটরদের আকৃষ্ট করবে ।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ SEO কৌশল ব্যবহার করুন
আপনারা নিশ্চই জানেন যে, SEO কি এবং কেন এটি ওয়েবসাইট বা ব্লগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ । এসইও এর ফুল ফর্ম হল সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন, যেটি অনুসারে আপনি আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগকে সার্চ ইঞ্জিনের জন্য অপ্টিমাইজ করেন । ওয়েবসাইট র্যাঙ্ক করার জন্য, এসইও এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক সম্পর্কে আমরা আপনাদের বলব । আপনি যদি একজন ওয়ার্ডপ্রেস ইউজার হন, তবে আপনি সহজেই আপনার ওয়েবসাইটে নিচে উল্লেখিত জিনিসগুলি বাস্তবায়ন করতে পারেন –
- কন্টেন্টের টাইটেল, হাইপারলিঙ্ক, বর্ণনা এবং পোস্টে ফোকাস কীওয়ার্ড ব্যবহার করুন ।
- বোল্ড, ইটালিক, প্রয়োজনীয় কীওয়ার্ড এবং শব্দ আন্ডারলাইন করুন ।
- কন্টেন্টের মধ্যে আপনার সাইটের অন্যান্য পোস্টের লিঙ্ক যোগ করুন, অর্থাৎ ইন্টারনাল লিঙ্কিং করুন ।
- পোস্টে ব্যবহৃত ছবিতে অবশ্যই Alt Tag ইউজ করুন ।
- আপনার ওয়েবসাইট থেকে ব্রোকেন লিঙ্ক মুছে ফেলুন । অথবা সেগুলোকে অন্য পোস্টের url দিয়ে রিপ্লেস করে দিন ।
- txt এবং সাইটম্যাপ ফাইল ইউজ করুন ।
- মেটা ট্যাগ ইউজ করুন ।
- একটি 404 এরর পেজ তৈরি করুন ।
- Table of Contents ব্যবহার করুন ।
আরও পড়ুনঃ এসইও কি? এটা কিভাবে কাজ করে?
রিচ রেজাল্টের জন্য ব্লগ পোস্ট প্রস্তুত করুন
আপনি যদি ব্লগিং এর ক্ষেত্রে নতুন হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি হয়তো রিচ রেজাল্ট সম্পর্কে কম জানেন । এটি SEO এর একটি অত্যন্ত গোপন কৌশল । এই অনুসারে, আপনার পোস্টটি গুগলের প্রথম পেজে দেখানোর জন্য রেডি করা হয় । রিচ রেজাল্ট মানে হল, আপনার ওয়েবসাইটের লিঙ্ক স্পেশালভাবে গুগলে প্রদর্শিত হয় ।
ধরুন আপনি যদি সহজে বোঝার জন্য এবং প্রশ্ন ভিত্তিক কোন পোস্ট লেখেন, তাহলে আপনার সাইটের পোস্ট, গুগলের প্রথম পাতায় আসার সম্ভাবনা বেড়ে যায় । আপনি যদি আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটকে, গুগলে থাকা অন্যান্য ওয়েবসাইট থেকে আলাদা করতে চান, তাহলে আপনি স্কিমা মার্কআপ ইউজ করতে পারেন । স্কিমা মার্কআপ ইউজ করলে, ওয়েবসাইট সম্পর্কিত তথ্য, গুগলের সার্চ রেজাল্টের পেজে উপস্থিত হতে শুরু করে এবং এর ফলে আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটর আসার সম্ভাবনা বেড়ে যায় । আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেস ইউজার হন, তাহলে আপনি প্লাগইন এর মাধ্যমে আপনার পোস্টে স্কিমা মার্কআপ ইউজ করতে পারবেন । কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এক্সটার্নাল স্কিমা মার্কআপ যেমন How to Schema, Table Schema, Faqs Schema and Review ইত্যাদি ।
নিয়মিত পোস্ট লিখুন
আপনি অবশ্যই দেখে থাকবেন যে, গুগলের সার্চ রেজাল্টের শীর্ষে সাধারণত নিউজ ওয়েবসাইট গুলোকে দেখা যায় । এর পেছনের কারণ কি কখনও জানার চেষ্টা করেছেন? আপনি যদি লক্ষ্য করেন, তবে আপনি দেখবেন যে, নিউজ ওয়েবসাইটের কন্টেন্টে বিস্তারিত কিছু লেখা থাকে না, তারপরও এটি গুগলের সার্চ রেজাল্টের প্রথম স্থানে থাকে । এর প্রধান কারণ হল নিউ ওয়েবসাইটে দিনে প্রায় কমপক্ষে ৫০ টিরও বেশী পোস্ট পাবলিশ করা হয় । তাই আপনি যদি আপনার ব্লগে, নিয়মিত পোস্ট পাবলিশ করেন, তাহলে আপনার পোস্ট অবশ্যই গুগলে র্যাঙ্ক করবে । আপনি আপনার সাইটে যত বেশি পোস্ট পাবলিশ করবেন, গুগল আপনার ওয়েবসাইটকে তত বেশী ট্রাস্ট করবে, যা আপনার ওয়েবসাইট কে র্যাঙ্ক করতে সাহায্য করবে ।
শেষ কথা
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সাথে, গুগলে দ্রুত র্যাঙ্ক করার জন্য কিছু উপায় সম্পর্কে বলেছি । অনেক গবেষণা করার পর, আমরা আপনাদের সাথে এই গুরুত্বপূর্ণ টিপসগুলো শেয়ার করার চেষ্টা করেছি । উপরে উল্লেখিত টিপস গুলো সঠিকভাবে ফলো করলে আপনারা ভাল ফলাফল পাবেন । আপনি যদি একজন নতুন ব্লগার হন, তাহলে অবশ্যই উপরে উল্লেখিত টিপস গুলো ফলো করুন । আর্টিকেলটি নিয়ে যে কোন ধরণের প্রশ্ন বা মন্তব্য থাকলে কমেন্ট সেকশনে জানানা । ধন্যবাদ