টাইফয়েড হল এক ধরনের সংক্রামক জ্বর যা এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তিতে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এটি শিশু, যুবক বা বৃদ্ধ যে কাউকে প্রভাবিত করতে পারে। বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক সাধারণত এটির চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়। প্রথম অবস্থায় এই জ্বরের যত্ন না নিলে ভবিষ্যতে আরও অনেক ধরনের সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এই জ্বরের ক্ষেত্রে সময়মত রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাহলে চলুন আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে জেনে নেই টাইফয়েড কী? টাইফয়েড জ্বর হলে করণীয় কি?
Table of Contents
টাইফয়েড কী – টাইফয়েড জ্বর কি
টাইফয়েড জ্বর সাধারণত হয় গোসল বা দূষিত পানি পান করার কারণে। এই জ্বর সালমোনেলা টাইফি নামক ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয়ে থাকে। এই ব্যাকটেরিয়া খাবার বা পানির মাধ্যমে এক ব্যক্তি বা থেকে অন্য ব্যক্তির কাছে পৌঁছায় এবং সংক্রমণ ঘটায়। অনেক সময় আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণেও টাইফয়েড হতে পারে। এটি একটি ছোঁয়াচে রোগ, তাই বাড়ির একজনের যদি এই জ্বর হয় তবে বাড়ির অন্যদেরও এটি হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তাই এই পরিস্থিতিতে সতর্ক থাকা খুবই জরুরী।
টাইফয়েড জ্বর কেন হয়
টাইফয়েড হল একটি পানিবাহিত মারাত্মক রোগ যা, সালমোনেলা টাইফি এবং সালমোনেলা প্যারাটাইফি এই দুই ধরনের ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয়ে থাকে। । সালমোনেলা টাইফির কারণে যে জ্বর হয় তাকে টাইফয়েড জ্বর বা এন্টারিক ফিভার বলা হয়। আর যদি জ্বর সালমোনেলা প্যারাটাইফি নামক ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয় তখন তাকে প্যারা টাইফয়েড জ্বর বলে।
সাধারনত দূষিত বা নোংরা পানি ও খাবার গ্রহণের মাধ্যমেই এই জীবাণু মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার প্রতি উদাসীনতার কারণেও এটি মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারে। এছাড়াও টাইফয়েড জ্বর হতে সুস্থ হয়েছেন কিন্তু এই ব্যাকটেরিয়া বহন করছেন এমন ব্যক্তির মাধ্যমেও এই রোগ ছড়াতে পারে। এই জীবাণু শরীরে প্রবেশ করার পর তা মানুষের বৃহদান্ত্রকে আক্রমণ করে। এছাড়াও এই ব্যাকটেরিয়া পিত্তথলিতে জমা থাকে এবং উপযুক্ত পরিবেশ পেলেই আক্রমণ শুরু করে।
টাইফয়েডের লক্ষণ – টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ
টাইফয়েড জ্বরেরও কিছু লক্ষণ রয়েছে, যার সাহায্যে আপনি বা আপনার ডাক্তার নিশ্চিত করতে পারেন যে আপনি টাইফয়েডে আক্রান্ত। আপনি যদি নিজের বা আপনার পরিবারের কোনো সদস্যের মধ্যে নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি লক্ষ্য করেন, তাহলে আপনার দ্রুত একজন ডাক্তারের সাথে দেখা করা উচিত । টাইফয়েডের লক্ষণগুলি নিম্নরূপ:
- উচ্চ জ্বর
- কখনও কখনও জ্বর 102-104 ডিগ্রি পর্যন্ত বেড়ে যায়।
- বুকের টান
- ক্ষুধার্ত বোধ
- পেটে ব্যথা
- মাথাব্যথা
- অনেক সময় সারা শরীরে খিঁচুনি
- দুর্বল অনুভব হওয়া
- শিশুদের ক্ষেত্রে ডায়রিয়া এবং বমি বমি ভাব
- কিছু কিছু ক্ষেত্রে হার্ট রেট বা হৃদস্পন্দন কমে যাওয়া
- দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে রোগীর পেটে ও পিঠে গোলাপি রঙের দানা দেখা দিতে পারে
আরও পড়ুনঃ জন্ডিস কী? জন্ডিসের কারণ, লক্ষণ এবং ঘরোয়া প্রতিকার
কিভাবে টাইফয়েড জ্বর সনাক্তকরণ করা হয় – টাইফয়েড টেস্ট এর নাম
পরীক্ষা করার পর চিকিৎসকরা কনফার্ম করে বলতে পারবেন যে আপনার টাইফয়েড জ্বর হয়েছে কিনা। টাইফয়েড দ্রুত সনাক্ত করার জন্য সাধারনত ব্লাড কালচার নামক রক্ত পরীক্ষা করা হয়। যদি নমুনায় স্যালমোনেলা নামক ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায় তাহলে তা প্রকার ভেদে টাইফয়েড ও প্যারা- টাইফয়েড হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এছাড়া জ্বর হওয়ার ২য় সপ্তাহে “উইডাল টেস্ট” নামক এক ধরনের ননস্পেসিফিক ব্লাড টেস্ট করানো হয়, যার টাইটার দেখে টাইফয়েড শনাক্ত করা হয়।
টাইফয়েডে স্বাস্থ্যকর খাবার কেন গুরুত্বপূর্ণ
টাইফয়েডের কারণে শরীরে রক্তের অভাব হয়, যার কারণে রোগী খুব দুর্বল হয়ে পড়ে। শরীর দুর্বল হওয়ার কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং লিভারও ঠিকমতো কাজ করা বন্ধ করে দেয়। এতে পরিপাকতন্ত্র এবং লিভার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যাদের কাজ সময়মতো খাবার হজম করা। দুর্বলতার কারণে পরিপাকতন্ত্র ও লিভার সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। তাই অতিরিক্ত বা ভারী খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে।
টাইফয়েড হলে চিকিৎসকরাও রোগীকে হালকা ও নিয়মিত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন। দিনে তিন বেলা খাওয়ার পরিবর্তে, রোগীরা অল্প অল্প করে ছয় বা সাত খাবার খেতে পারেন। এতে করে খাবার হজমে কোনো সমস্যা হয় না এবং পরিপাকতন্ত্র ও লিভারের ওপর কোনো চাপ পড়ে না। এই অবস্থায়, আপনার শরীর শক্তি এবং বিশ্রাম উভয়ই পায়।
টাইফয়েডের ক্ষেত্রে, রোগীর জন্য তার খাদ্যের দিকে মনোযোগ দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যকর জিনিস খাওয়া শরীরের দুর্বলতা দূর করে শক্তি যোগায়। দেহের শক্তির কারণে এক সময় পর রোগ নিজেই শেষ হয়ে যায়।
তাহলে আসুন নীচে সেই খাদ্য আইটেমগুলি সম্পর্কে কথা বলি, কোন জিনিসগুলি আপনাকে গ্রহণ করতে হবে এবং কোন জিনিসগুলি এড়িয়ে চলতে হবে।
টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত
উচ্চ-ক্যালরিযুক্ত খাবার গ্রহন করুন
টাইফয়েডে আক্রান্ত হলে বেশি বেশি ক্যালোরি যুক্ত খাবার গ্রহণ করা উচিত। টাইফয়েডের কারণে আপনার শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ধীরে ধীরে ওজনও কমতে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে বেশি ক্যালরিযুক্ত খাবার খেলে শরীর শক্তি পায় এবং ওজনও ঠিক থাকে। আপনি কলা, সাদা রুটি, পাস্তা এবং সেদ্ধ আলু ইত্যাদি খেতে পারেন।
তরল পান করুন
টাইফয়েড থাকা অবস্থায়, আপনার শরীর ডিহাইড্রেশনের শিকার হতে পারে। যার কারণে আপনার গুরুতর ডায়রিয়ার সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এই পরিস্থিতিতে, আপনার সেইসব খাবার এবং ফল খাওয়া উচিত যাতে ভাল পরিমাণে পানি থাকে। এ ছাড়া দিনে সাত থেকে আট গ্লাস পানি পান করুন। শরীরে যেন কোন অবস্থাতেই পানির অভাব না হয়।
শর্করাযুক্ত খাবার বেশি করে গ্রহন করুন
টাইফয়েড হলে যেসব খাবারে কার্বোহাইড্রেট বেশি পরিমাণে থাকে সেগুলো গ্রহন করুন। এছাড়াও, খেয়াল রাখবেন যে আপনি যাই খান না কেন তা হজম হতে কোন সমস্যা হচ্ছে কি না। সেদ্ধ আলু, চাল এবং সিদ্ধ ডিম টাইফয়েডের জন্য উপকারী বলে মনে করা হয়।
দুগ্ধজাত পণ্য গ্রহন করুন
টাইফয়েডের কারণে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে, সেক্ষেত্রে শরীরে শক্তির প্রয়োজন হয় এবং এর জন্য দুগ্ধজাত খাবার খুবই উপকারী । শরীরে শক্তি দেওয়ার পাশাপাশি এগুলি লিভার এবং হজমের সমস্যা নিরাময়েও সহায়ক ভুমিকা পালন করে।
শুকনো আঙ্গুর খান
শুষ্ক আঙুরের সাথে শিলা লবণ মিশিয়ে খেলে টাইফয়েড জ্বর অনেকটা কমে যায়। টাইফয়েড জ্বর, দুর্বলতা এবং অলসতা সৃষ্টি করে। এক্ষেত্রে শুকনো আঙুর খুব কার্যকরী।
ফল খান
টাইফয়েড হলে বেশী পরিমাণে ফল খেতে হবে। কারণ এই জ্বরের অবস্থায় শরীরে এমন খাবার ও পানীয়ের প্রয়োজন হয় যা প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন এবং ক্যালরি সমৃদ্ধ এবং একই সঙ্গে সেগুলো খুব সহজে হজমও হয়। এতে আপনি খেতে পারেন কিছু বিশেষ ফল যেমন
- ডালিম বা এর রস
- আপেল বা এর রস
- কমলার শরবত
- নারিকেলের পানি
- পানিতে গ্লুকোজ মিশিয়ে পান করুন
টাইফয়েড জ্বর হলে যেসব খাবার খাওয়া উচিত নয়
মশলা এড়িয়ে চলুন
টাইফয়েড হলে ওষুধ সেবনের পাশাপাশি মশলা পরিহার করতে হবে। কারণ এটি করলে শরীরে ওষুধের প্রভাব দ্রুত হবে এবং আপনি রোগ থেকে দ্রুত আরোগ্য লাভ করবেন। আপনার খাবারে মশলা, যেমন মরিচ, সস বা ভিনেগার ইত্যাদি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
গ্যাস তৈরি করে এমন খাবার এড়িয়ে চলুন
পেটে গ্যাস তৈরির প্রবণতা রয়েছে এমন সমস্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। টাইফয়েডের সময় শরীর এমনিতেই অনেক দুর্বল থাকে এবং এমন অবস্থায় গ্যাসের সমস্যা হলে আপনি ঠিকমতো খাবার খেতে পারবেন না। যার ফলে আপনি আরও বেশী দুর্বল হয়ে পড়বেন। কাঁঠাল এবং আনারস থেকে গ্যাস হতে পারে, এগুলি এড়ানোর চেষ্টা করুন।
তীব্র গন্ধযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন
আপনি যদি টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হন, তবে তীব্র গন্ধযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। খাবারের আইটেমগুলোতে এমন অনেক খাবার রয়েছে যা তীব্র গন্ধ যুক্ত, যেমন পেঁয়াজ এবং রসুন। আপনার এই জিনিসগুলি সাময়িকভাবে এড়িয়ে চলা উচিত।
চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন
আপনি যদি টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হন, তাহলে আপনাকে চর্বিযুক্ত খাবার সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে চলতে হবে। ভাজা জিনিস, ঘি, মাখন, পেস্ট্রি, মিষ্টি, ঘন ক্রিম ইত্যাদি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এছাড়াও নিচের জিনিস গুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন –
- বাজার বা হোটেলের জিনিস খাবেন না।
- ফাইবার বেশি থাকে এমন জিনিস খাবেন না।
- কয়েকদিন নন-ভেজ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
- গরম মসলা এবং খুব তৈলাক্ত জিনিস খাবেন না।
- হজম হতে অনেক সময় লাগে এমন কিছু খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
- চা, কফি, সিগারেট এবং অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকুন।
- ঘি, তেল, মসৃণ জিনিস যেমন বেসন, ভুট্টা থেকে তৈরি ব্রাউন রাইস ইত্যাদি এড়িয়ে চলুন।
- কাঁচা সবজি বা ফল খাওয়ার আগে ভালো করে ধুয়ে নিন।
আরও পড়ুনঃ হাঁপানির কারণ, লক্ষণ এবং ঘরোয়া প্রতিকার
টাইফয়েড জ্বর প্রতিরোধে করণীয়
- দিনে তিনবার খাবার না খেয়ে অল্প অল্প করে, দিনে ছয় বা সাতবার খান
- যতটা সম্ভব তরল গ্রহণ করার চেষ্টা করুন
- টাইফয়েডের চিকিৎসার পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন ও বিশ্রাম নেওয়া খুবই জরুরি। এই অবস্থানে যতটা সম্ভব বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করুন।
- মেডিসিন কোর্স সম্পূর্ণ করুন। কিছুটা উপকার পাওয়ার পরে লোকেরা প্রায়শই মাঝপথে ওষুধ বন্ধ করে দেয়। কিন্তু এটি করা উচিত নয় কারণ এটি করার ফলে যে কোনও সময় আবার জ্বর আসতে পারে।
- সঠিক সময়ে আপনার ওষুধ গ্রহন করুন
- দুধের সাথে ওষুধ খাওয়ার চেষ্টা করুন।
- ওষুধ খাওয়ার পর বিশ্রাম নিন যাতে শরীর গরম হয়।
- কুসুম গরম পানি পান করুন।
- বেশি করে পানি পান করুন।
- পরিষ্কার এবং স্বাস্থ্যকর পানি পান করুন
- আপনার খাদ্যতালিকায় ভিটামিন এ, বি এবং সি অন্তর্ভুক্ত করুন
- শরীরে পানির অভাব যেন না হয।
- নারিকেলের পানি পান করুন
- খাওয়ার আগে এবং পরে অবশ্যই সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করুন
- টাইফয়েড আক্রান্ত রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া উচিত। যদি এটি কোন কারণে সম্ভব না হয় তাহলে আক্রান্ত রোগিকে বাড়িতে আলাদা রাখার চেষ্টা করুন।
টাইফয়েড জ্বরের চিকিৎসা
সাধারনত এন্টিবায়োটিক ঔষধের মাধ্যমে ডাক্তাররা টাইফয়েড জ্বরের চিকিৎসা করে থাকেন। এন্টিবায়োটিক ঔষধ অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহন করুন। এন্টিবায়োটিক শুরু করার পরও জ্বর কমতে পাঁচ থেকে সাত দিন লেগে যেতে পারে। টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হলে দ্রুত চিকিৎসা গ্রহন না করলে জ্বর সপ্তাহ বা মাসব্যাপী থাকতে পারে। এছাড়াও রোগীর অন্যান্য অনেক ধরনের জটিলতা তৈরি হতে পারে।
চিকিৎসার সাথে সাথে রোগীকে অধিক পরিমাণে তরল খাবার এবং পানি গ্রহন করতে হবে। টাইফয়েডের রোগীকে সম্পূর্ণ রূপে বিশ্রামে থাকতে হবে। জ্বর যদি বেশী হয় তাহলে পুরো শরীর ভেজা গামছা বা তোয়ালে দিয়ে মুছে দিতে হবে। শরীরে শক্তি পুনরুদ্ধারের জন্য উচ্চ ক্যালরি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা উচিত। প্রতিবার বাথরুম ব্যবহার করার পর পরিষ্কার পানি ও সাবান দিয়ে হাত এবং পা ভাল করে ধুয়ে ফেলতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ বিষয় হলো চিকিৎসক যতদিন পর্যন্ত এন্টিবায়োটিক গ্রহণের পরামর্শ দিবেন ঠিক ততদিন পর্যন্ত তা গ্রহণ করতে হবে। কোন অবস্থাতেই কোর্স কমপ্লিট হওয়ার আগ পর্যন্ত এন্টিবায়োটিক বন্ধ করবেন না।
টাইফয়েড জ্বরের ঘরোয়া প্রতিকার
টাইফয়েড জ্বর হলে চিকিৎসা করানোর পাশাপাশি আপনি নিচে দেখানো ঘরোয়া উপায় গুলো অনুসরন করলে আপনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হতে পারবেন।
- সমপরিমাণ আদার রস এবং মধু একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় পান করলে উপকার পাওয়া যায়।
- কাঁচা আম পুড়িয়ে পানির সাথে মিশিয়ে সরবত করে খেতে পারেন।
- ২০ টি তুলসী পাতা, সামান্য আদা, কিছুটা দারচিনি নিয়ে পানিতে মিশিয়ে ভালোভাবে ফুটিয়ে নিন। এবার ফুটন্ত মিশ্রণটি নামিয়ে ছেঁকে নিয়ে অল্প পরিমাণে এতে মধু মিশিয়ে সেবন করলে আরাম পাবেন।
- তুলসী পাতার রস পান করে টাইফয়েড জ্বর নিরাময় হয়। প্রাতিদিন সকালে এটি পান করুন।
- সরাসরি টিউবয়েলের পানি পান করা উচিত নয়। টাইফয়েড রোগীদের পানি ফুটিয়ে তারপর ঠাণ্ডা করে পান করা উচিত।
শেষ কথা
টাইফয়েড জ্বর আমাদের দেশের খুবই সচরাচর একটি রোগ। দূষিত খাবার ও পানির মাধ্যমে সাধারণত মানব দেহে এই জীবাণু ছড়ায়। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার মানুষজনের মধ্যে টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।
পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকাই টাইফয়েড থেকে রক্ষা পাওয়ার মূলমন্ত্র। বাহিরে খাবার খাওয়া এবং পানি পান করার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করলে টাইফয়েডের ঝুঁকি থেকে কিছুটা মুক্ত থাকা যায়।
আর্টিকেলটি নিয়ে যে কোন ধরনের প্রশ্ন বা মন্তব্য থাকলে কমেন্ট সেকশনে জানান।
ধন্যবাদ ।