আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য বিআরটিএ তে অনেক ছোঁটাছুটি করেছেন অথবা খুব সহজেই সিস্টেম করে হয়ত ড্রাইভিং লাইসেন্স করে এসেছেন। কিন্তু এখন আর তর সইছে না কারণ হয়ত বিআরটিএ থেকে আপনাকে সঠিক করে বলে দেয়া হয়নি যে ঠিক কবে আপনি আপনার বহু কাঙ্খিত ড্রাইভিং লাইসেন্স টি হাতে পাবেন। বাসায় বসে বসে ভাবছেন ড্রাইভিং লাইসেন্স হয়েছে কিনা কিভাবে জানা যাবে? চিন্তা করার কোন কারণ নেই, কারণ আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমরা আলোচনা করব, বাড়িতে বসেই ড্রাইভিং লাইসেন্স হয়েছে কিনা জানার পদ্ধতি সম্পর্কে।
Table of Contents
ড্রাইভিং লাইসেন্স কি?
আপনি যে একজন যোগ্য গাড়ী চালক এটির প্রমান হিসেবে যে সনদপত্র বিআরটিএ থেকে প্রদান করা হয় সেটিকেই ড্রাইভিং লাইসেন্স বলা হয়। ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে হলে আপনাকে গাড়ি চালানোর উপর পরিপূর্ণ জ্ঞান অর্জন করতে হবে এবং কিছু পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার মধ্য দিয়ে এই লাইসেন্সটি অর্জন করতে হবে। যে কোন গাড়ি চালানোর জন্য অনেক ধরনের নিয়ম কানুন আছে, সেই নিয়ম কানুন গুলো জানা না থাকলে চালক রাস্তায় গাড়ি ড্রাইভ করার সময় যে কোন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলতে পারে। তাই চালকদের যোগ্যতা প্রমানের লক্ষে বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ বিভাগ ড্রাইভিং লাইসেন্স পদ্ধতি চালু করেছে। কোন চালকের কাছে ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকলে এটি ধরে নেওয়া হয় যে, সে রাস্তায় গাড়ি চালানোর নিয়ম কানুন সম্পর্কে খুব ভালভাবেই জানে। কারন এইসব নিয়ম কানুন না জানলে তাকে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করা হতো না।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ড্রাইভিং লাইসেন্স অর্জন করার প্রক্রিয়াটি কিছুক্ষেত্রে জটিল বলে মনে হয়। ড্রাইভিং লাইসেন্সের অর্জন করার জন্য প্র্যাকটিক্যাল ভাবে ড্রাইভিং এর পরীক্ষা দিতে হয় এবং সেই সাথে অনেক গুলো প্রশ্নের উত্তরও দিতে হয়। অর্থাৎ সম্পূর্ণ একটি পরীক্ষা দেওয়ার পর সেই পরীক্ষার ফলাফলের উপর নির্ভর করে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করা হয়।
ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কি কি প্রয়োজন
ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য প্রথমেই আপনার লাগবে লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স অর্থাৎ শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স। আরও সহজ ভাবে বললে আপনি এখনো ড্রাইভিং শেখার পর্যায়ে আছেন। আপনার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাগত যোগ্যতা হতে হবে কমপক্ষে ৮ম শ্রেণী পাশ। বাংলাদেশে ড্রাইভিং লাইসেন্স মূলত ২ প্রকারের হয়ে থাকেঃ
- পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সঃ পেশাদার বা প্রফেশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে হলে আপনার বয়স হতে হবে কমপক্ষে ২১ ।
- অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সঃ অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে হলে আপনার বয়স হতে হবে কমপক্ষে ১৮ ।
অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের ক্ষেত্রে অনেক গুলো গুরুত্বপূর্ণ সীমাবদ্ধতা আছে। আর এই কারণেই আপনার বয়স সার্টিফিকেট অনুসারে একুশ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন এবং পেশাদার বা প্রফেশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স নিন।
ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
যেকোনো ধরণের ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য অনেক ধরনের ডকুমেন্ট বা কাগজপত্রের প্রয়োজন হয় । তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক বাংলাদেশে ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য কোন কোন কাগজপত্রের প্রয়োজন হয়
শিক্ষানবিশ বা লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স | স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স |
সরাসরি আবেদন/অনলাইনে আবেদন | সরাসরি আবেদন |
৩০০ x ৩০০ পিক্সেল (pixel) | মেডিক্যাল Certificate |
Medical সার্টিফিকেট | NID Card সত্যায়িত ফটোকপি |
জাতীয় পরিচয়পত্রের Scan কপি | নির্ধারিত Fee (পেশাদার- ১৬৭৯/-Tk ও অপেশাদার- ২৫৪২/-Tk) |
ক্যাটাগরি-1 -৩৪৫/-টাকা ও ক্যাটাগরি-2 -৫১৮/-টাকা | নির্ধারিত ব্যাংকে জমাদানের রশিদ ও পুলিশি তদন্ত রিপোর্ট। |
ইলেকট্রিক বিলের Scan copy | নতুন তোলা ১ কপি সাইজ ছবি পাসপোর্ট সাইজ |
ড্রাইভিং লাইসেন্স হয়েছে কিনা জানার পদ্ধতি
ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য সব কাজ যদি আপনি সম্পন্ন করে থাকেন তাহলে, আপনার টেনশান করার আর কোন কারণই নেই। ঠিক সময় মত আপনি আপনার বহু কাঙ্খিত ড্রাইভিং লাইসেন্সটি হাতে পেয়ে যাবেন। তারপরও যদি আপনার জানতে ইচ্ছা হয় ড্রাইভিং লাইসেন্স হয়েছে কিনা সেটা চেক করার তাহলে আপনার জন্য আমাদের কাছে রয়েছে ২ টি সমাধান । বর্তমানে মোবাইল এসএমএস এবং সফটওয়্যার ব্যবহার করে আমরা খুব সহজেই আমাদের ড্রাইভিং লাইসেন্সের বর্তমান অবস্থা জানতে পারি ।
এসএমএস এর মাধ্যমে ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক
- প্রথমে আপনার ফোনের মেসেজ অপশনে গিয়ে লিখুন “DL”স্পেস “আপনার রেফারেন্স নম্বর”। ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য বায়ো-মেট্রিক্স কমপ্লিট করার পর বিআরটিএ থেকে যে স্লিপ দেওয়া হয় সেখানে রেফারেন্স নম্বর উল্লেখ করা থাকে। এই রেফারেন্স নম্বরটি সবার জন্য আলাদা আলাদা অর্থাৎ ইউনিক হয় ।
- ম্যাসেজটি টাইপ করার পর পাঠিয়ে দিন 6969 এই নম্বরে।
- উদাহরণ: Type: DL DM484796 (just example) & Send to 6969
- ফিরতি এসএমএস এর মাধ্যমে আপনাকে আপনার স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্সের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে দেওয়া হবে।
Note: রেফারেন্স নম্বরের ভেতরে যদি কোনো ড্যাশ (“-“) দেওয়া থাকে তাহলে তা বাদ দিয়ে দিন। আর যদি স্ল্যাশ (“/”) সিম্বল থাকে তবে তা অবশ্যই দিতে হবে।
সফটওয়্যার এর মাধ্যমে ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক
“DL CHECKER” সফটওয়্যার ব্যবহার করেও আপনি খুব সহজেই আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্সের বর্তমান অবস্থা বা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে পারবেন।
সবার প্রথমে প্লে-স্টোরে থেকে “DL CHECKER” এপসটি ডাউনলোড করে নিন। ইন্সটল হয়ে গেলে ওপেন করে জন্ম তারিখ এবং DL নাম্বার দিয়ে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন। সাবমিট করার সাথে সাথে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রসহ আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্সের সকল তথ্য প্রদর্শন করবে।