আমাদের ব্যাবহৃত মোবাইল ফোনটি অনেক সময় সার্ভিসিং করানোর প্রয়োজন পরে । সাধারনত আমরা দুই ধরনের জায়গা থেকে মোবাইল ফোন রিপেয়ার করে থাকি। মোবাইল ফোনটি সার্ভিসিং করানোর জন্য, হয় আমরা কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে নিয়ে যাই অথবা নিয়ে যাই কোন মোবাইল মেকানিকের দোকানে। কিন্তু ফোন রিপেয়ার করতে দেওয়ার আগে কিছু করনীয় বিষয় আমাদের মাথায় রাখতে হবে ! এই পোস্টে মোবাইলফোন রিপেয়ারিং এ দেওয়ার আগে করণীয় কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করব ।
Table of Contents
মোবাইল সার্ভিসিং করতে দেওয়ার আগে করণীয়
মোবাইলফোন রিপেয়ারিং বা সার্ভিসিং করতে দেওয়ার পূর্বে আমাদের যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখা উচিত সেই সকল বিষয় গুলো নিচে সংক্ষিপ্ত আকারে আলোচনা করা হলো। আপনার প্রাইভেসি ও নিরাপত্তার জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ।
১। কাস্টমার কেয়ার Vs মেকানিক
আপনার মোবাইল ফোনটির যদি ওয়ারেন্টি ডেট থেকে থাকে তাহলে যা কিছুই নষ্ট হোক না কেন, সবার প্রথমে কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে ঠিক করানোর জন্য নিয়ে যাবেন। যদি ওয়ারেন্টি পিরিয়ড শেষ হয়ে থাকে তাহলে ভালো মেকানিকের কাছে নিয়ে যাবেন। কারণ আপনার মোবাইল ফোনটির কি ধরনের সমস্যা হয়েছে এবং কিভাবে রিপেয়ারিং করতে হবে তা একজন কাস্টমার কেয়ারের দক্ষ কর্মীরা খুব ভাল করেই জানে । তারা আপনার কাজ টি ভাল ভাবে বুঝবে এবং আপনার পছন্দের ফোনটি দক্ষ হাতে রিপেয়ার করে দেবে । কিন্তু যদি এই উপায় না থাকে সেক্ষেত্রে ভালো দোকান (যে দোকানে দক্ষ মেকানিক রয়েছে) থেকে মোবাইল সার্ভিসিং করিয়ে নিতে হবে।
২। মেমোরী ও সিম কার্ড খুলে নেওয়া
আপনার মেমোরী কার্ড হলো একটি বাক্তিগত বা পার্সোনাল জিনিস । আপনার মেমোরী কার্ডে অনেক ধরনের ব্যাক্তিগত এবং গুরুত্বপূর্ণ ফাইল বা ডকুমেন্ট থাকতে পারে । তাই যখন ফোন রিপেয়ারিং করানোর জন্য কয়েকদিন দেরী করার প্রয়োজন পরে তখন অবশ্যই আপনার মেমোরি কার্ড টি খুলে নিবেন। অন্যথায় মেমোরি কার্ড টি হারিয়ে যাওয়া ছাড়াও, আপনার মেমোরি কার্ডে জমা রাখা আপনার ব্যাক্তিগত ছবি বা গুরুত্বপূর্ণ যে কোন কিছু চুরি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে । তাই নিজের সিকিউরিটি এবং প্রাইভেসির জন্য মেমোরি কার্ডটি খুলে নেওয়াই উত্তম। সেই সাথে আপনার সীম কার্ড টিও কিন্তু মনের ভুলেও রেখে আসবেন না । কারণ বর্তমানে নিজের সিম কার্ড অন্যের কাছে দেওয়ার মানে হল নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনা।
৩। ফোন মেমোরি ব্যাকআপ আর ফরম্যাট
আপনার মোবাইল ফোনটি যদি সার্ভিসিং করানোর জন্য সময় নেয়, মানে ফোনটি আপনাকে কাস্টোমার কেয়ার বা মেকানিকের কাছে রেখে আসতে হয় সেক্ষেত্রে অবশ্যই ফোন মেমোরীর ব্যাকআপ নিয়ে নেবেন। আপনার মোবাইল ফোনে যদি সফটওয়্যার দেওয়ার প্রয়োজন হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে কিন্তু আপনার ফোন মেমরিতে সংরক্ষিত থাকা সকল ডাটা মুছে যাবে। সাধারনত ফোন মেমোরী প্রাইমারী স্টোরেজ লোকেশন হিসেবে সিলেক্ট করা থাকে তাই ক্যামেরা দিয়ে তোলা ছবি, ডাউনলোড দেওয়া ফাইল অনেকে কিছু ফোন মেমোরীতেই থেকে যায় । তাই আপনার ফটো গুলো অবশ্যই আপনার কম্পিউটার, ল্যাপটপ অথবা এক্সটারনাল মেমোরিতে ট্রান্সফার করে নেবেন। আর ফোন কাস্টোমার কেয়ার বা মেকানিকের কাছে রেখে আসার আগে ফোন মেমোরি ফরম্যাট করে দেবেন, যদি সিকিউরিটি চান । অন্যথায় আপনার ব্যাক্তিগত ছবি বা অন্য কিছু নিয়ে হয়রানির স্বীকার হতে পারেন, তাই সাবধান!
৪। ফেসবুক লগআউট করে দেওয়া
এমন খুব মানুষ কম আছে যারা স্মার্টফোন ব্যবহার করে কিন্তু ফেসবুক বা অন্য কোন সোশ্যাল মিডিয়া ইউজ বা ব্যাবহার করে না। দিনে রাতে যে কোন সময় ফেসবুকে বন্ধুদের সাথে মেসেঞ্জারে চ্যাটিং , ফটো শেয়ারিং, বিভিন্ন রকমের আলাপ আলোচনা কত কিছু হয় । এখন চিন্তা করুন এই অবস্থায় যদি কোন অসৎ ব্যক্তির হাতে ফোন যায় সেক্ষেত্রে কি হতে পারে? তাহলে স্বাভাবিক ভাবেই আপনি ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন । এমন অনেক ঘটনা অনেক সময় ঘটে থাকে যে, আপনি মোবাইল সার্ভিসিং করতে দিয়েছেন আর মোবাইল মেকানিক আপনার সব ব্যাক্তিগত জিনিস হাতিয়ে নিয়েছে। বর্তমান সময়ে আপনার ফেসবুক আইডি অন্য কারও হাতে চলে যাওয়া মানে তার দ্বারা অনেক খারাপ কিছু করা সম্ভব। তাই সচেতন এবং সাবধান হন আর ফোন সারভিসিং এ দেওয়ার আগে অবশ্যই ফেসবুক থেকে লগআউট করুন ।
৫। নিজে দাঁড়িয়ে থেকে মোবাইল রিপেয়ার করানো
মোবাইল সারভিসিং করতে দিলে অনেক সময় দেখা যায় মেকানিক ফোনের ভালো বা ওরিজিনাল পার্টস খুলে রেখে অন্য খারাপ বা ডুপ্লিকেট পার্টস লাগিয়ে দেয়। তাই যখন মোবাইল ফোন সারভিসিং করতে দেবেন তখন সম্ভব হলে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে রিপেয়ার করে নিয়ে আসবেন। অনেক সময় দেখা যায় যে মোবাইলের পার্টস পাওয়া যাচ্ছে না বা হাতে অন্য কাজ আছে বলে মেকানিক একটা নির্দিষ্ট সময় চেয়ে নেয় অথবা এক দুদিন পরে এসে মোবাইল নিয়ে যেতে বলে তাহলে অবশ্যই উপরের কথা গুলো মেনে চলবেন।
পরিশেষ
এখন অনেকেই বলতে পারেন বা ভাবছেন যে একটা সামান্য মোবাইল ঠিক করতে দেব তার জন্য এতো কিছু? এতো কিছু নিয়ম কে মানবে? যদি আপনার ধারণা এমন হয়ে থাকে সেটা একান্তই আপনার ব্যাক্তিগত ব্যাপার। শুধু একটি কথা মনে রাখবেন, আপনার অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন বা অন্য যে কোন মোবাইল হোক না কেন, খুব গুরুত্বপূর্ণ জিনিস এটি । যদি অসাধু লোকের হাতে ফোনটি যায় সেক্ষেত্রে আপনি অনেক ভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন। বিশেষ করে কোন মেয়ের মোবাইল রিপেয়ার করতে দেওয়ার আগে এই বিষয় গুলতে খুব বেশী জোর দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি । কারণ মেকানিক চাইলেই ফোন থেকে মেয়ের ব্যাক্তিগত ছবি গুলো হাতিয়ে নিয়ে, তাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করতে পারে! এমনটি যে ঘটবে তাও না, কিন্তু সাবধানতার কোন মার নেই, তাই সময় থাকতে সাবধান হয়ে কাজ করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
ফেসবুক, গুগল, ইন্সট্রাগাম অ্যাকাউন্ট সহ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ জিনিস থাকে আমাদের স্মার্ট ফোনে । যে গুলো অনেক কেয়ারফুলি রাখা উচিত যেন সেইগুলো কোন ভাবে কোন অসৎ ব্যাক্তির হাতে না পড়ে, অন্যথায় মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা যারা প্রযুক্তি লাভার অথবা এই ধরনের বিভিন্ন মুভি দেখে থাকেন তারা মোবাইল ফোন থেকে ডাটা বা ফটো চুরি বা হাইজ্যাক করা নিয়ে অনেক ঘটনা দেখে থাকবেন। কিন্তু বর্তমান সময়ে এটি এখন শুধু মুভির মধ্যেই আবদ্ধ নেই, এখন আমাদের আশে পাশে এমন ঘটনা হরহামেশাই ঘটতে দেখা যায় । তাই সময় থাকতে সবাই সচেতন ও সাবধান হন ।
আমাদের অন্য ব্লগ গুলো চাইলে ঘুরে আসতে পারেন
- Vivo v23 price in Bangladesh with Specification
- Meghna bank Credit Card Details
- How to Create linkedin Account ? Step by Step Guide
- Best Psychologist in Dhaka
- Islami Bank Credit Card Details with Benefits and Charges