পদ্মা সেতু হচ্ছে বাংলাদেশের পদ্মা নদীর উপর নির্মিত একটি বহুমুখী সেতু যা মুন্সিগঞ্জের মাওয়া এবং শরিয়তপুরের জাজিরা পয়েন্টে তৈরি করা হয়েছে । এই সেতুটি ২০২২ সালের ২৫ জুন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন। এই দিন তিনি মাওয়া প্রান্ত দিয়ে টোল পরিশোধ করে প্রথমবারের মত আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতুতে আরোহন করেন এবং এর মাধ্যমে সেতুটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয় । দুই স্তর বিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট দ্বারা নির্মিত এই সেতুর উপরের স্তরে রয়েছে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরে রয়েছে একটি একক রেলপথ । পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায়, ৪২টি পিলার ও ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যানের মাধ্যমে এই সেতুর মূল অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। এই পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য ৬.১৫০ কিমি এবং প্রস্থ হল ১৮.১০ মিটার। তাহলে চলুন আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে জেনে নেওয়া যাক পদ্মা সেতু সম্পর্কে আরও বিস্তারিত কিছু তথ্য ।
Table of Contents
পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য কত?
বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘতম সেতু পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য ৬.১৫০ কিলোমিটার । তবে দুই পাশের রাস্তাসহ এই সেতুর দৈর্ঘ্য দাঁড়ায় প্রায় ৯.৩৩ কিলোমিটার ।
পদ্মা সেতু নির্মাণের মোট খরচ
সংশ্লিষ্টদের তথ্য মতে, পদ্মা সেতু ও এর সাথে সংশ্লিষ্ট সব ধরনের অবকাঠামো নির্মাণে মোট ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। পুরো প্রকল্পের ব্যয় এত টাকা হলেও মূল সেতু তৈরিতে খরচ হয়েছে এর তিন ভাগের এক ভাগ টাকা। আর বাকি টাকা খরচ হয়েছে নদীশাসন, সংযোগ সড়ক নির্মাণ, পুনর্বাসন প্রকল্পসহ অন্যান্য আরও কিছু খাতে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক পদ্মা সেতুর কোন খাতে কত টাকা খরচ হয়েছে ।
সেতু নির্মাণে খরচ
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুসারে, স্থলভাগ এবং জলভাগ মিলিয়ে পদ্মা সেতুর মোট দৈর্ঘ্য ৯ দশমিক ৩৩ কিলোমিটার । এর মধ্যে জলভাগে অর্থাৎ পদ্মা নদীর মধ্যে ৬.১৫০ কিলোমিটার, স্থলভাগে অর্থাৎ মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তে পড়েছে ৩.১৮০ কিলোমিটার। প্রকল্পের মূল সেতু নির্মাণ করতে খরচ হয়েছে ১১ হাজার ৯১৮ কোটি টাকা।
সেতুর পাশ দিয়ে ৪০০ কেভি বিদ্যুৎ লাইন তৈরি করতে খরচ হয়েছে এক হাজার কোটি টাকা। মূল সেতুর রেললাইনের সাইড দিয়ে যে গ্যাস লাইন টানা হয়েছে, সেটি নির্মাণ করতে খরচ হয়েছে আরও ৩০০ কোটি টাকা।
নদীশাসনে খরচ
পদ্মা সেতুর আশেপাশের এলাকাকে নদী ভাঙনসহ যে কোনো দুর্যোগ থেকে রক্ষা করার জন্য প্রকল্প এলাকার দুই পাশে প্রায় ১৪ কিলোমিটার নদীশাসন করতে হয়েছে। এর মধ্যে মাওয়া সাইডে ১.৬ কিলোমিটার এবং জাজিরাতে ১২.৪০ কিলোমিটার এলাকা নদীশাসন করতে হয়েছে। চীনের কোম্পানি সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেড এই নদী শাসনের কাজটি সম্পন্ন করেছে। এই নদী শাসন বাবদ খরচ হয়েছে ৮ হাজার ৭০৭ কোটি ৮১ লক্ষ টাকা।
সংযোগ সড়ক
পদ্মা সেতুর দুই সাইডের মূল সড়কের সাথে পদ্মা সেতুকে সংযুক্ত করতে নির্মিত হয়েছে মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তের অ্যাপ্রোচ রোড বা সংযোগ সড়ক । জাজিরা প্রান্তের মূল অ্যাপ্রোচ সড়কটির দৈর্ঘ্য ১০.৬৭ কিলোমিটার । সেই সাথে আশেপাশের লোকাল রাস্তা গুলোকে সংযোগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে নির্মাণ করা হয়েছে আরও ১২ কিলোমিটার সার্ভিস সড়ক। অন্য দিকে অর্থাৎ মাওয়া প্রান্তে ১.৬৭ কিলোমিটার সংযোগ সড়কের সাথে যোগ হয়েছে আরও ৩ কিলোমিটার সার্ভিস সড়ক । এই সংযোগ সড়ক নির্মাণ করতে খরচ হয়েছে ১ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা।
সার্ভিস এরিয়ায় নানা খাতে ব্যয়
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী সার্ভিস এরিয়া-২ এর জন্য খরচ হয়েছে ২০০ কোটি টাকা । ইঞ্জিনিয়ারিং সাপোর্ট এবং সেফটি টিমের জন্য প্রথম পর্যায়ে খরচ হয়েছে ৭২ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা । ইঞ্জিনিয়ারিং সাপোর্ট অ্যান্ড সেফটি টিমের নিরাপত্তার জন্য আরও কিছু পরিমাণ টাকা ব্যয় হয়েছে। জলযান কেনার চুক্তি মূল্য ৭৭ কোটি ২৩ লক্ষ টাকা। কন্সট্রাকশন সুপারভিশন কনসালটেন্ট-১ বাবদ খরচ হয়েছে ৮৯ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা। কন্সট্রাকশন সুপারভিশন কনসালটেন্ট-২ এর জন্য খরচ হয়েছে ৬০৯ কোটি ১৪ লক্ষ টাকা।
ভূমি অধিগ্রহণ
পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকায় সর্বমোট ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে ২ হাজার ৬৯৩ দশমিক ২১ হেক্টর জমি । এই জমি অধিগ্রহণ বাবদ খরচ হয়েছে ২ হাজার ৬৯৮ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকা।
পুনর্বাসন
পদ্মা সেতু নির্মাণ হওয়ার কারণে ওই এলাকায় বসবাসরতদের অনেককেই তাদের বাড়িঘর ত্যাগ করতে হয়েছে। এই সব মানুষদের পুনর্বাসনের জন্য পদ্মা নদীর দুই পাশে আধুনিক নাগরিক সুবিধা সহ ৭ টি পুনর্বাসন সাইট নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য আবাসিক প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এই প্লটের জন্য মুন্সিগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর এই ৩ টি জেলার ২২ হাজার ৫৯৩ উপকারভোগীর মধ্যে এ পর্যন্ত ৭৫৯ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
গ্রামীণ সড়ক
পদ্মা সেতুর কারণে এর আশপাশের এলাকার রূপও বদলে গেছে। সেখানে এলজিইডির মাধ্যমে গ্রামীন সড়ক নির্মাণ এবং সংস্কার করা হচ্ছে । মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার ৬ টি গ্রামীণ সড়ক নির্মাণের জন্য মোট খরচ হয়েছে ১০ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা এবং শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার ৪ টি গ্রামীণ সড়ক উন্নয়নের জন্য ব্যায় হয়েছে ১০ কোটি টাকা ।
বৃক্ষরোপণে ব্যয়
পদ্মা সেতুর দুইপাশের এলাকা, সংযোগ সড়ক ও সার্ভিস এরিয়াগুলোতে বনায়ন করার জন্য ১ লক্ষ ৭৩ হাজার ২৯৪ টি গাছ লাগানো হয়েছে । এর মধ্যে বন বিভাগের মাধ্যমে লাগানো হয়েছে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৭০০টি গাছ এবং ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আব্দুল মোনেম লিমিটেড ও অন্যান্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে লাগানো হয়েছে আরও ২৪ হাজার ৫৯৪টি গাছ । এই গাছ লাগানোর জন্য খরচ হয়েছে প্রায় ৯ কোটি টাকা।
পদ্মা সেতু জাদুঘর স্থাপন
পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্প এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের মধ্যে চুক্তির আওতায় ‘পদ্মা সেতু জাদুঘর নির্মাণ করা হচ্ছে । এই জাদুঘরের জন্য বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ ও সংরক্ষণের কাজ চলমান রয়েছে। এই বছরের (২০২২) মে মাস পর্যন্ত সর্বমোট ২ হাজার ৩৫৫ টি নমুনা সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করা হয়েছে। পদ্মা সেতু জাদুঘরের জন্য প্রস্তাবিত ভবন নির্মাণের কাজ দেড়িতে হওয়ায় জাদুঘরের কাজ সম্পন্ন করতে কিছুটা সময় লাগছে। এই জাদুঘরের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫ কোটি ৮৩ লাখ ৫৭ হাজার ৬৫৩ টাকা ।
পরিবেশ খাতে ব্যয়
জীববৈচিত্র সংরক্ষণ ও অভয়ারণ্য ব্যবস্থাপনা কর্মসূচি খাতে খরচ হচ্ছে প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকা । পদ্মা সেতু বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ইতিমধ্যেই ঘোষণা সম্পন্ন হয়েছে এবং এর জন্য গেজেটও প্রকাশিত হয়েছে। পদ্মা সেতু বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য বাস্তবায়ন করার জন্য স্থানীও উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালানো হচ্ছে। পদ্মা সেতুর পরিবেশগত সকল ধরনের কার্যক্রমে এ পর্যন্ত সর্বমোট খরচ হয়েছে প্রায় ২৬ কোটি ৭২ লক্ষ টাকা। ম্যানেজমেন্ট সাপোর্ট কনসালটেন্সি খাতে খরচ ১২৫ কোটি ৩৬ লক্ষ টাকা।
মসজিদ, বিদ্যালয়, কবরস্থানসহ বিভিন্ন খাত
পদ্মা সেতু প্রকল্পের চারটি পুনর্বাসন এড়িয়াতে স্থাপিত হয়েছে মোট ৪ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সেই সাথে পুনর্বাসন এলাকাতে রয়েছে স্বাস্থ্য কেন্দ্র । সেনাবাহিনীর মাধ্যমে নির্মাণ করা হয়েছে ১৩টি নতুন মসজিদ , ৩ টি কবরস্থান এবং ৩ টি মসজিদ সংস্কার করা হয়েছে। এসব খাতেও বিভিন্ন অংকের টাকা খরচ হয়েছে।
যশোলদিয়া এলাকার জলবদ্ধতা দূর করার জন্য আউট-লেট ড্রেন নির্মাণ বাবদ খরচ হয়েছে প্রায় ১ কোটি টাকা । কুমারভোগ এলাকার জলবদ্ধতা দূর করার জন্য খরচ হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা । প্রকল্প এলাকায় আর্সেনিকমুক্ত পানি সরবরাহ করার জন্য স্থাপন করা হয়েছে ৪৮টি হস্তচালিত টিউবওয়েল । প্রকল্পের পুনর্বাসন খাত হতে প্রকল্পের আওতাধীন ৩ জেলার জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ৩৬ লক্ষ টাকার বিভিন্ন ধরনের মেডিকেল যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ বীমা কি এবং বাংলাদেশের বীমা কোম্পানিসমূহের তালিকা
পদ্মা সেতুর নির্ধারিত টোল
পদ্মা সেতুতে মোট ১৩ প্রকার যানবাহনের থেকে নির্ধারিত টোল আদায় করা হয় । এই ১৩ ধরনের যানবাহনের, কোন যানবাহনের জন্য কত টাকা টোল দিতে হয় তা নিচে দেওয়া হল –
ক্রমিক | যানবাহনের নাম | টোল হার |
১ | মোটরসাইকেল | ১০০.০০ টাকা |
২ | কার, জীপ | ৭৫০.০০ টাকা |
৩ | পিকআপ | ১২০০.০০ টাকা |
৪ | মাইক্রোবাস | ১৩০০.০০ টাকা |
৫ | ছোট বাস (৩১ আসন বা এর কম) | ১৪০০.০০ টাকা |
৬ | মাঝারি বাস (৩২ আসন বা এর বেশি) | ২০০০.০০ টাকা |
৭ | বড় বাস (৩ এক্সেল) | ২৪০০.০০ টাকা |
৮ | ছোট ট্রাক (৫ টন পর্যন্ত) | ১৬০০.০০ টাকা |
৯ | মাঝারি ট্রাক (৫ টন এর অধিক হতে ৮ টন পর্যন্ত) | ২১০০.০০ টাকা |
১০ | মাঝারি ট্রাক (৮ টনের অধিক হতে ১১ টন পর্যন্ত) | ২৮০০.০০ টাকা |
১১ | ট্রাক (৩ এক্সেল পর্যন্ত) | ৫৫০০.০০ টাকা |
১২ | ট্রেইলার (৩ এক্সের পর্যন্ত) | ৬০০০.০০ টাকা |
১৩ | ট্রেইলার (৪ এক্সেলের অধিক) | ৬০০০.০০ + প্রতি এক্সেল ১৫০০.০০ টাকা |
পদ্মা সেতুর বিস্তারিত তথ্য
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতু প্রকল্পের নাম কী?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর প্রকল্পের নাম হল পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প ।
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য কত কিলোমিটার?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য ৬.১৫০ কিলোমিটার।
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর প্রস্থ কত?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর প্রস্থ হল ১৮.১০ মিটার (চার লেনের সড়ক)
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর ভায়াডাক্ট কত কিলোমিটার?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর ভায়াডাক্ট হল ৩.১৮০ কিলোমিটর।
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়ক কত কিলোমিটার?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়ক দুই সাইডে প্রায় ১৪ কিলোমিটার।
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেলের টোল কত ?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেলের টোল ১০০ টাকা ।
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যানটি কবে বসানো হয়েছে ?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যান বসানো হয়েছে ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যানটি কোন কোন পিলারে বসানো হয়েছে ?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যানটি বসানো হয়েছে ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারের উপর
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর শেষ স্প্যানটি কত কত নম্বর পিলারে বসানো হয়েছে ?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর শেষ স্প্যানটি ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের উপরে বসানো হয়েছে
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর ৪১ টি স্প্যান বসাতে কতদিন সময় লেগেছে ?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর ৪১ টি স্প্যান বসাতে সময় লেগেছে প্রায় ৩ বছর ২ মাস ১০ দিন।
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর মোট দৈর্ঘ্য কত ?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর মোট দৈর্ঘ্য ৯.৩০ কি.মি .(৩. ১৫ কি.মি . সংযোগ সড়কসহ)
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর ৪১ তম স্প্যান কত তারিখে বসানো হয় ?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর সর্বশেষ স্প্যান বসানো হয় ১০ ডিসেম্বর ২০২০ সালে
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর প্রতিটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য কত ?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর প্রতিটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার ।
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর সংযোগকারি স্থানসমূহ কি কি ?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর সংযোগকারি স্থান হল মুন্সিগঞ্জের মাওয়া এবং শরিয়তপুরের জাজিরা ।
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর মোট পিলারের সংখ্যা কতটি ?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর মোট পিলারের সংখ্যা ৪২টি
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর মোট স্প্যান সংখ্যা কতটি ?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর মোট স্প্যান সংখ্যা ৪১টি
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর স্প্যানগুলোর মোট ওজন কত ?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর স্প্যানগুলোর মোট ওজন ১,১৬,৩৮৮টন
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর প্রতিটি পিলারের নিচে পাইলের সংখ্যা কতটি ?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর প্রতিটি পিলারের নিচে পাইলের সংখ্যা হল ৬টি ( তবে কিছু কিছু পিলারের নিচে ৭টি পাইলও দেওয়া হয়েছে)
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর পাইলের ব্যাস কত ?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর পাইলের ব্যাস হল ৩ মিটার
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর পাইলের সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য কত ?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর পাইলের সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য ১২৮ মিটার
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর মোট পাইলের সংখ্যা কতটি ?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর মোট পাইলের সংখ্যা ২৬৪টি ( ভায়াডাক্টের পিলারের পাইল সহ পাইলের সংখ্যা ২৯৪টি)
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর জন্য কত হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করতে হয়েছে ?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর মোট জমি অধিগ্রহণ করতে হয়েছে ৯১৮ হেক্টর
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুতে ব্যবহৃত স্টিলের পরিমাণ কত ?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুতে ব্যবহৃত স্টিলের পরিমাণ হল ১,৪৬,০০০ মেট্রিক টন
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ কবে শুরু হয় ?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ৭ই ডিসেম্বর ২০১৪ সালে
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ কোন প্রান্ত দিয়ে শুরু হয় ?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর মূল সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয় মাওয়া প্রান্তে ৬ নম্বর পিলারের কাজ দিয়ে
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতু কত তারিখে উদ্বোধন করা হয় ? পদ্মা সেতু কত সালে উদ্বোধন করা হয় ?
উত্তরঃ পদ্মা সেতু উদ্বোধন করা হয় ২৫শে জুন, ২০২২ রোজ; শনিবার
প্রশ্নঃ পানির স্তর থেকে পদ্মা সেতুর উচ্চতা কত ?
উত্তরঃ পানির স্তর থেকে পদ্মা সেতুর উচ্চতা ১৮ মিটার
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর আকৃতি কিসের মত ?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর আকৃতি অনেকটা ইংরেজি এস (S) অক্ষরের মতো
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতু কত মাত্রার ভূমিকম্প সহনশীল ?
উত্তরঃ পদ্মা সেতু ৮ মাত্রার ভুমিকম্প সহ্য করতে সক্ষম ।
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর আয়ুষ্কাল কত বছর ?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর আয়ুষ্কাল হল ১০০ বছর ।
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর মোট ব্যয় কত টাকা ?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর মোট ব্যয় হল ৩০,১৯৩.৩৯ কোটি
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতু প্রকল্পে কত কিলোমিটার নদীশাসন করতে হয়েছে ?
উত্তরঃ পদ্মা সেতু প্রকল্পে নদীশাসন করতে হয়েছে দুই পাড়ে ১২ কিলোমিটার ।
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে কত মানুষ কাজ করেছে ?
উত্তরঃ পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে কাজ করেছে প্রায় চার হাজার মানুষ।
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর ভায়াডাক্ট পিলার কত টি ?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর সর্বমোট ভায়াডাক্ট পিলার ৮১ টি ।
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতু বিশ্বের কত তম সেতু?
উত্তরঃ বিশ্বের মধ্যে আমাদের পদ্মা সেতুর অবস্থান ১২২ তম ।
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতু নির্মানকারি প্রতিষ্ঠানের নাম কি ?
উত্তরঃ পদ্মা সেতু নির্মানকারি প্রতিষ্ঠানের নাম হল চায়না মেজড় ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিঃ ।
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতু নির্মাণের আনুষ্ঠানিক চুক্তি কবে হয় ?
উত্তরঃ পদ্মা সেতু নির্মাণের আনুষ্ঠানিক চুক্তি ১৭ জুন ২০১৪ সালে করা হয় ।
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর প্যানেলের সভাপতির নাম কি ?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর প্যানেলের সভাপতির নাম অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী।
প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর নকশা কে করেছে ?
উত্তরঃ এইসিওএমের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় পরামর্শকদের নিয়ে গঠিত একটি দল পদ্মা সেতুর নকশা তৈরি করেছে।
শেষ কথা
আমরা আশা করছি আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা আমাদের পদ্মা সেতু সম্পর্কে বিস্তারিত অনেক তথ্য জানতে পেড়েছেন । পদ্মা সেতু নিয়ে আরও কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে জানাতে পারেন ।
ধন্যবাদ ।