কিভাবে আপনার হলুদ দাঁত সাদা করবেন

ঝকঝকে পরিষ্কার সাদা দাঁত, যে কোনো মানুষের মুখের সৌন্দর্য বদলে দিতে পারে। অন্যদিকে একজন মানুষের মুখ দেখতে যতই সুন্দর হোক না কেনো, নোংরা অপরিষ্কার হলুদ দাঁত মানুষের ব্যক্তিত্বকে নষ্ট করে ফেলে। বর্তমান যুগে মানুষ নিজের প্রসাধনী এবং রূপচর্চার জন্য অর্থ খরচ কর‍তে বিন্দুমাত্র চিন্তা করেনা। তাই দাঁতের ক্ষেত্রেও অবহেলা না করে দাঁতের রঙ স্বাভাবিকের থেকে পরিবর্তন হলেই সেদিকে বিশেষ যত্ন নেওয়া উচিত। তাহলে আর অপরিচ্ছন্ন হলুদ দাঁত বা মুখের গন্ধ এইরকম সমস্যা নিয়ে অন্যের সামনে অস্বস্তিকর অবস্থার মধ্যে পড়তে হবে না। এই আর্টিকেলে আমরা ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করে হলুদ দাঁত সাদা করার উপায় গুলি জেনে নেবো।

সবার প্রথমে জেনে নেয়া যাক দাঁতে হলুদ ছোপ পরার বা দাঁত হলুদ হওয়ার কারণগুলো কী?

দাঁত হলুদ হওয়ার কারণ

দাঁত হলুদ হওয়ার জন্য অনেক ধরনের কারণ রয়েছে, সেই কারণ গুলি নিচে উল্লেখ করা হল–

  • খাদ্য  অনেক খাবারে অতি উচ্চ মাত্রায় ট্যানিক অ্যাসিড রয়েছে যেমন রেড ওয়াইন। যার কারণে দাঁতে হলুদ ভাব দেখা দিতে পরে। এছাড়াও কফি এবং সোডা জাতীয় পানীয় গুলির কারণে দাঁতে হলুদ ছাপ পরে ।
  • ধূমপান  – দাঁত হলুদ হওয়ার আরও একটি অন্যতম কারণ হলো ধূমপান করা। ধূমপানের কারণে দাঁতে স্থায়ী ভাবে হলদে ছোপ পড়তে পারে।
  • রোগের চিকিৎসা – এমন বেশ কিছু রোগ রয়েছে যেগুলোর চিকিৎসার কারণে দাঁত হলুদ হয়ে যেতে পারে। যেমন কেমোথেরাপি, অ্যাস্থমা রোগের চিকিৎসা, এমনকি উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসার কারণেও দাঁত হলুদ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
  • মুখের ভেতরে পরিচ্ছন্নতার অভাব – মুখের ভেতরের অংশ সঠিভাবে পরিষ্কার না করা দাঁত হলুদ হয়ে যাওয়ার অন্যতম একটা প্রধান কারণ বলে মনে করা হয়। নিয়মিত সঠিকভাবে ব্রাশ না করলে এবং কিছু খাওয়ার পর মুখের ভেতরে ঠিকমত কুলকুচি করে পরিষ্কার না করার ফলেও দাঁতে হলুদ ভাব দেখা দিতে পারে।
  • ফ্লোরাইড  অতিরিক্ত ফ্লোরাইড এক্সপোজার দাঁত হলুদ হওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে এই উপসর্গ অতিরিক্ত মাত্রায় দেখা যায়।

ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করে হলুদ দাঁত সাদা করার উপায় 

যদি আপনার দাঁত হলুদ হয়ে যায়, তাহলে চিন্তা না করে দাঁত সাদা করার জন্য নিচে দেখানো ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো অনুসরন করতে পারেন। এই ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো সঠিকভাবে অনুসরণ করলে আপনার দাঁত সুন্দর এবং আকর্ষণীয়ও হয়ে উঠবে।

১। আপেল সিডার ভিনেগার

উপকরণ 

  • ১ চামচ Apple সিডার ভিনেগার
  • ১ কাপ ভর্তি পানি

আপেল সিডার

প্রস্তুত প্রণালী 

  • প্রথমে Apple সিডার ভিনেগার এবং পানি খুব ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর প্রত্যেকদিন সকালে ব্রাশ করার আগে এই মিশ্রনের সাহায্যে খুব ভালো করে মুখের ভেতর ধুয়ে নিতে হবে। প্রতিদিন সকালে এই মিশ্রনের সাহায্যে ২ থেকে ৩ বার মুখের ভেতর পরিষ্কার করবেন।  

উপকারীতা 

Apple সিডার ভিনেগার আপনার দাঁতের ওপর ব্লিচের মত কাজ করে। এতে উপস্থিত থাকা লঘু অ্যাসিড দাঁতের হলুদ ভাব দূর করে তা পরিস্কার এবং ঝকঝকে করে তোলে। দাঁত সাদা করার ক্ষেত্রে Apple সিডার ভিনেগার অত্যন্ত কার্যকরী ভুমিকা পালন করে।

আরও পড়ুনঃ সেরা নিউরো মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ঢাকা

২। বেকিং সোডা এবং পাতি লেবুর রস

উপকরণ 

  • ১ চামচ Baking সোডা
  • ১ চামচ পাতি লেবুর রস

প্রস্তুত প্রণালী 

  • Baking সোডা এবং পাতি লেবুর রস ভালোভাবে মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে নিতে হবে। এরপর টুথব্রাশের সাহায্যে মিশ্রণটি দাঁতে ভালোভাবে লাগিয়ে নিতে হবে।
  • দাঁতের ওপর এই প্রলেপ লাগিয়ে ২ -৩ মিনিট রেখে পরে ভালোভাবে মুখের ভেতর ধুয়ে ফেলতে হবে। প্রথম অবস্থায় সপ্তাহে কমপক্ষে ২ বার এই মিশ্রণটি ব্যবহার করুন।  

উপকারীতা 

বেকিং সোডা কে সোডিয়াম বাইকার্বনেটও বলা হয়। এটা প্রায় সব বাড়ির রান্নাঘরেই পাওয়া যায়। বেকিং সোডা দাঁতে জমে থাকা হলুদ দাগ দূর করতে সাহায্য করে।

৩। লবন এবং পাতিলেবু

উপকরণ 

  • ১ চামচ সাদা লবণ বা খাবার লবণ
  • ২ চামচ পাতি লেবুর রস

প্রস্তুত প্রণালী 

  • সাদা লবণ এবং পাতি লেবুর রস ভালোভাবে মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে নিতে হবে। এই মিশ্রণটি টুথপেস্ট বা দাঁতের মাজনের মতন টুথব্রাশের মাধ্যমে ব্যবহার করতে হবে। সপ্তাহে কমপক্ষে ২-৩ বার এই মিশ্রণটি ব্যবহার করুন।

উপকারীতা 

লেবুর রসে রয়েছে প্রাকৃতিক ব্লিচিং বৈশিষ্ট্য, যা দাঁত পরিষ্কার করে তুলতে এবং দাঁতের হলুদ রং দূর করে দাঁত সাদা করতে খুব ভাল কাজ করে।

৪। কাঠ কয়লা

উপকরণ 

  • কাঠ কয়লা গুঁড়ো
  • টুথব্রাশ

প্রস্তুত প্রণালী 

  • টুথব্রাশ পানিতে ভিজিয়ে নিয়ে তাতে কাঠ কয়লা গুঁড়ো লাগিয়ে নিতে হবে। এরপর এই কাঠ কয়লা গুড়ো দিয়ে দাঁত ভালোভাবে ব্রাশ করে নিতে হবে।
  • এরপর পানি দিয়ে ভালো করে মুখের ভেতর পরিষ্কার করুন। সপ্তাহে কমপক্ষে ১ -২ বার এই কাঠ কয়লা দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করুন।

উপকারীতা 

কাঠকয়লা দাতের ময়লা পরিষ্কার করে এবং দাঁত সাদা করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এটা মুখের ভেতরের ব্যাক্টেরিয়া অপসারণ করে রোগ জীবানু প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

৫। স্ট্রবেরী

উপকরণ 

  • ১ টা স্ট্রবেরী
  • ১ চামচ Baking সোডা

প্রস্তুত প্রণালী 

  • স্ট্রবেরী ভালো করে থেঁতো করে তাতে Baking সোডা মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর এই মিশ্রণ টি টুথব্রাশ বা নিজের আঙুলের সাহায্যে দাতের উপর লাগিয়ে নিন।
  • দাঁতের ওপর মিশ্রণটি লাগিয়ে কিছু সময় অপেক্ষা করুন এবং শেষে পানি দিয়ে মুখের ভেতর ভালোভাবে পরিষ্কার করুন। সপ্তাহে ১ বার করে এই মিশ্রন টি আপনার দাতে ব্যবহার করুন।

উপকারীতা 

স্ট্রবেরীর মধ্যে থাকা ভিটামিন সি দাঁতের দাগ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি নিয়মিত ব্যবহার করার ফলে দাঁত উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।

৬। নিম

উপকরণ 

  • ১ টা নিমের দাঁতন বা নিম গাছের ডাল

প্রস্তুত প্রণালী 

  • ১ টা নিম গাছের ডাল ভালোভাবে গরম জলে ধুয়ে নিতে হবে। তারপর ঐ দাঁতন বা নিমের ডালের সাহায্যে দাঁতগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। নিম দাঁতনের সাহায্যে আপনি প্রতিদিন দাঁত পরিষ্কার করতে পারেন।

উপকারীতা 

প্রাচীন কাল থেকেই নিমের ডাল, দাঁত মাজার উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। নিয়মিত এর মাধ্যমে দাঁত মাজার ফলে দাঁত পরিষ্কার এবং সাদা হয়ে উঠবে।

৭। হলুদ

উপকরণ 

  • ১ চামচ গুঁড়ো হলুদ
  • ১টা টুথ ব্রাশ

প্রস্তুত প্রণালী 

  • টুথব্রাশ পানিতে ভিজিয়ে হলুদ গুঁড়া লাগিয়ে দাঁত ব্রাশ করতে হবে। দাঁত ব্রাশ করার পর ২ – ৩ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। এরপর প্রতিদিনের মত দাঁতের মাজন বা টুথ পেস্টের সাহায্যে দাঁত মেজে নিতে হবে। অল্প কিছু দিনের মধ্যেই এই অভ্যাসের সুফল আপনি দেখতে পাবেন। এই মিশ্রনটি সপ্তাহে ২-৩ দিন আপনার দাতে ব্যবহার করতে পারেন।

উপকারীতা 

হলুদ গুঁড়ো দাঁত থেকে গভীর দাগ দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, হেপাটোপ্রোটেকটিভ, ইমিউনোস্টিমুল্যান্ট, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল, এন্টিসেপটিক এবং এন্টিমুটাজেনিক বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ হলুদ গুঁড়ো দাঁতের চিকিৎসায় খুবই কার্যকরী ভুমিকা পালন করে। এটি মুখের ভেতরের ব্যাকটেরিয়া মুক্ত করতে সাহায্য করে।

৮। প্যারোক্সাইড সহযোগে কুলকুচি

উপকরণ 

  • ১ কাপ পরিমাণ হাইড্রোজেন প্যারোক্সাইড
  • ১ কাপ হালকা গরম পানি

প্রস্তুত প্রণালী 

  • এক কাপ হালকা গরম পানির সাথে হাইড্রোজেন প্যারক্সাইড খুব ভালোভাবে মিশিয়ে মিশ্রন তৈরি করে নিতে হবে। এরপর এই মিশ্রণটি ৩০ – ৪০ সেকেণ্ড মুখে রেখে তারপর মুখ ভাল করে ধুয়ে ফেলতে হবে। প্রতি সপ্তাহে ২ বার এই পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন। তবে অবশ্যই মনে রাখবেন এই মিশ্রণ দাঁতে লাগানোর পর মুখ ধোয়ার সময় যেন কুলকুচি করা পানি বাহিরে ফেলে দেওয়া হয় এবং কোনোভাবেই এই পানি ব্যবহারকারী যেন গিলে না ফেলে।

উপকারীতা 

হাইড্রোজেন প্যারোক্সাইড দাঁত পরিষ্কার বা সাদা করার জন্য একটি ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। দাঁতের চিকিৎসকেরা এই উপকরণটি দাতের চিকিৎসার জন্য ইউজ করে থাকেন।

৯। নারকেল তেল

উপকরণ 

  • ২ চামচ নারীকেল তেল

প্রস্তুত প্রণালী 

  • নারকেল তেল আঙুলের সাহায্যে দাঁতের ওপর লাগিয়ে নিতে হবে। কিন্তু মাথায় রাখবেন নারকেল তেল যুক্ত মুখের লালা কোনোভাবেই যেন ব্যবহারকারী গিলে না খেয়ে ফেলেন। এভাবে কিছুক্ষন দাঁতে ঘষার পর কিছু সময় অপেক্ষা করে মুখ পানি দ্বারা কুলকুচি করে নিতে হবে। আপনি প্রতিদিন সকালে নারকেল তেল দিয়ে দাঁত মাজতে পারেন।

উপকারীতা 

নারকেল তেলে থাকা লরিক অ্যাসিড অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন হয়। এই কারণে, এটা মুখের ভেতরে এবং দাঁতে তৈরি হওয়া ব্যাক্টেরিয়া নির্মূল করে। এছাড়াও এটা আপনার শ্বাস-প্রশ্বাস সতেজ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।

১০। কমলালেবু তেল

উপকরণ 

  • ২ -৩ ফোঁটা কমলালেবু তেল
  • ১ টা টুথপেস্ট বা দাঁতের মাজন
  • ১ টা টুথব্রাশ

প্রস্তুত প্রণালী 

  • প্রথমে আপনার টুথব্রাশে অরেঞ্জ বা কমলালেবু্র তেল লাগিয়ে দাঁত মেজে নিতে হবে। একটানা ২ সপ্তাহ প্রতিদিন সকালে কমলা লেবুর তেল দিয়ে দাঁত মাজলে আপনার দাতের হলুদ ভাব অনেকটাই কেটে যাবে।

উপকারীতা 

কমলালেবুর খোসা হতে কমলা লেবুর তেল তৈরী করা হয়। এটা দাঁত সাদা করতে অত্যন্ত কার্যকরী ভুমিকা পালন করে। এছাড়াও এতে অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য থাকায় সহজেই দাঁত সহ মুখের ভেতরের রোগ জীবানু প্রতিরোধ করে।

১১। তিল তেল

উপকরণ 

  • ১ টেবিল চামচ তিলের তেল

প্রস্তুত প্রণালী 

  • সকালে আঙ্গুলের সাহায্যে ১০ – ১৫ মিনিট তিল তেল দাতে ভালোভাবে ঘষতে হবে। তবে খেয়াল রাখবেন ব্যবহারকারী যেন এটা খেয়ে না ফেলেন। এরপর ঐ তেল যুক্ত থুতু মুখ থেকে ফেলে পানির সাহায্যে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। কুলকুচি করার পানিতে আপনি ১ চিমটে লবন মিশিয়ে নিতে পারেন। এরপর ব্রাশ করে নিন। আপনি প্রতিদিন সকালে তিল তেল দাতে ব্যবহার করতে পারেন।

উপকারীতা 

তিলের তেলে সেসামিন, সেসমোলিন এবং সেসমিনল রয়েছে এছাড়াও এর ডিটক্সিফিকেশন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিবায়োটিক বৈশিষ্ট্যের কারণে, তিলের তেল দাঁতের দাগ পরিষ্কার করার সাথে সাথে দাঁতকে শক্তিশালীও করে তোলে।

আরও পড়ুনঃ অতিরিক্ত ওজন কমানোর ঘরোয়া উপায়

১২। কমলালেবুর খোসা

উপকরণ 

  • কমলালেবুর খোসা

প্রস্তুত প্রণালী 

  • কমলালেবুর খোসা হাতে নিয়ে ১ – ২ মিনিট দাঁতে ঘষতে হবে। এরপর প্রতিদিনের মত টুথপেস্ট বা মাজন দিয়ে দাঁত ব্রাশ করে নিতে হবে। ১ দিন পর পর এই পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন।

উপকারীতা 

কমলালেবুর খোসাতে ব্রোমেলিন নামক এনজাইম রয়েছে, যা দাঁত সাদা করতে সাহায্য করে থাকে।

১৩। পেয়ারা পাতা

উপকরণ 

  •  ১ – ২ টি পেয়ারা পাতা

প্রস্তুত প্রণালী 

  • পেয়ারা পাতা ভালভাবে বেটে একটা মিশ্রণ তৈরী করে নিতে হবে। এই মিশ্রণ হালকা হাতে দাঁতের উপর ঘষতে হবে। এবং কিছু সময়ের জন্য এভাবেই রেখে দিতে হবে।
  • কিছুক্ষন পরে কুলকুচি করে পরে টুথপেস্ট বা মাজনের সাহায্যে দাঁত মেজে নিতে হবে। কয়েকদিন নিয়মিত ভাবে এই মিশ্রণ ইউজ করলে আপনার দাতের হলুদ ভাব কমে যাবে।

উপকারীতা 

পেয়ারা পাতা দাঁত পরিষ্কারের জন্য ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসারে ব্যবহার করা হয়। এটা মুখের সংক্রমণ, মাড়ির সমস্যা প্রতিকারের জন্যই মূলত ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও এতে উপস্থিত ফ্ল্যাভোনয়েড দাঁতের ওপর অক্সিডেটিভ স্ট্রেস হ্রাস করে।

১৪। তেলের সাহায্যে দাঁত মাজা 

উপকরণ 

  • নারকেল তেল এবং সূর্যমুখী তেল

প্রস্তুত প্রণালী 

  • সকালে দাঁত মাজার আগে কিছুটা সময় দাঁতে এই তেলের মিশ্রণ লাগিয়ে রাখতে হবে। এরপর পানি দিয়ে মুখ কুলকুচি করে পরে দাঁত ব্রাশ করে ফেলুন। সপ্তাহে ৩ – ৪ বার এটি দাতে ইউজ করতে পারেন।

১৫। কলার খোসা

উপকরণ 

  • কলার খোসা
  • ১ কাপ হালকা গরম পানি

প্রস্তুত প্রণালী 

  • কলার খোসা প্রথমে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিতে হবে। কলার খোসার ভেতরের অংশ দাঁতের ওপর ভালোভাবে ঘসে নিতে হবে। এরপর হালকা গরম পানির সাহায্যে মুখ কুলকুচি করে নিতে হবে। নিয়মিত এইভাবে ব্যবহার করলে দাঁত পরিষ্কার হয়ে যাবে।

উপকারীতা 

কলার খোসায় পটাশিয়াম রয়েছে, যা দাঁত পরিষ্কার করতে বিশেষ ভাবে কাজ করে।

দাঁত পরিষ্কার রাখার জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য দ্রব্য 

দাঁতের সৌন্দর্য এবং শক্তি বৃদ্ধির জন্য শুধুমাত্র দাঁত পরিষ্কার করলেই হবে না, এর পাশাপাশি উপযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করাও অত্যন্ত জরুরী। দাঁত পরিষ্কার এবং শক্তিশালী করতে পারে এমন কিছু খাদ্যের বিষয়ে নিচে আলোচনা করা হল।

দাঁত ভালো রাখার জন্য যেসব খাদ্য গ্রহণ করা জরুরী 

  • ফাইবার সমৃদ্ধ শাক সবজি এবং ফল – আমেরিকান ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশন (এডিএ) সূত্রে জানা যায় যে ফাইবার সমৃদ্ধ শাক সবজি এবং ফল জাতীয় খাবার দাঁত পরিষ্কার রাখতে খুব ভালো কাজ করে। এছাড়াও এই ধরনের খাবার লালা তৈরী করে, যা আপনার দাঁতে আক্রমণকারী অ্যাসিড এবং এনজাইমের প্রভাব কমাতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
  • দুগ্ধজাত পণ্য – দুধ এবং বিভিন্ন দুগ্ধজাত পণ্যে ক্যালসিয়াম এবং ফসফেট থাকে। এই খনিজ পদার্থগুলো দাঁতকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। ফ
  • সবুজ এবং কালো চা – সবুজ এবং কালো চা তে পলিফেনল রয়েছে, যা দাঁতের ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করে। এটা মুখের ভেতরে দাতের জন্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি বা অ্যাসিড তৈরিতে বাধা প্রদান করে।
  • ফ্লোরাইড সমৃদ্ধ খাদ্য –  ফ্লোরাইড সমৃদ্ধ পানীয় অথবা ফ্লোরাইড সমৃদ্ধ যে কোন খাবার দাঁতের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।

যেসব খাদ্য বর্জন করা উচিৎ

  • আঠালো চকলেট বা মিষ্টি – এই ধরনের খাবার গুলি দাঁতের সঙ্গে আটকে যায় এবং পরে সেগুলি থেকে দাঁত ক্ষয়কারী ব্যাকটেরিয়া তৈরি হয়।
  • স্টার্চি জাতীয় খাদ্য – নরম রুটি এবং পটেটো চিপস জাতীয় খাবার গুলো খুব সহজেই দাঁতের সাথে আটকে যায় এবং পরবর্তীতে পচে গিয়ে দাঁতের ক্ষয় তৈরি করে।
  • কার্বনেটেড পানীয় – এই জাতীয় পানীয়তে উচ্চ পরিমাণে শর্করা থাকে। এগুলি পান করার কারণে দাঁতের হলুদ ভাব বৃদ্ধি পায় ।
  • মুখ গহ্বর শুষ্ক করা পদার্থ – অ্যালকোহল এবং কিছু ওষুধ যা গ্রহণের কারণে মুখের ভেতর শুকিয়ে যায়,  এবং এগুলো আপনার দাঁতকে দুর্বল করে ফেলে।

দাঁত পরিষ্কার এবং সুরক্ষিত রাখার জন্য কতকগুলি জরুরী পরামর্শ বা টিপস 

  • দাঁত পরিষ্কার এবং সুন্দর রাখতে হলে প্রত্যেক দিন অন্তত ২ বার করে দাঁত ব্রাশ করা উচিত।
  • ফ্লোরাইড সমৃদ্ধ টুথপেস্ট অথবা মাজন ব্যবহার করা উচিত। এর ফলে দাঁতের এনামেল শক্ত হয় এবং দাঁতের ক্ষয় রোধ করে।
  • দাঁতের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য বাজারজাত বোতলবন্দী পানীয় পান করা থেকে বিরত থাকুন।
  • মিষ্টিজাতীয় খাবার কম গ্রহণ করার চেষ্টা করুন। শর্করা জাতীয় খাবার দাঁতে ব্যাক্টেরিয়া উৎপন্ন করে।
  • খেলাধুলা করার সময় চোট বা আঘাত থেকে দাঁতকে রক্ষা করার জন্য সর্বদা মাউথ গার্ড ইউজ করা উচিত।
  • দাঁত নড়লে তা অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
  • দাঁতে ব্যথা এবং যন্ত্রনা হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন।

শেষ কথা

একবার হলেও চিন্তা করে দেখুন যে, দাঁতের অনুপস্থিতিতে অথবা দাঁত পরে গেলে আপনার জীবন কেমন হতে পারে? তাই সময় থাকতে দাঁতের পরিচর্যার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরী। আপনার সামাণ্যতম অবহেলার কারণে আপনার দাঁতের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তাই আর দেরী না করে নিজের এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের দাঁতের প্রতি বিশেষভাবে যত্ন নিন। আর্টিকেলটি নিয়ে যে কোন ধরনের প্রশ্ন বা মন্তব্য থাকলে কমেন্ট সেকশনে জানান। ধন্যবাদ

Share on:
Avatar photo

Hello Friends, I am James harden, the founder of this site. This blog provides accurate and precise information on Technology, Banking, Insurance, Tips & Tricks, Online Earning, Computer troubleshooting and much more.

Leave a Comment