সুষম খাদ্য কি ? সুষম খাদ্য গ্রহনের উপকারিতা

ব্যায়াম, ঘুম এবং বিশ্রামের মতোই, সুষম খাদ্য গ্রহণ করাও আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত জরুরী । খাওয়া মানেই, যে কোন কিছু খাওয়া নয় । আপনি খাবার অল্প পরিমাণে খান, তবে পরিষ্কার ও পুষ্টিকর খাবার খান । এটি আমাদের বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে দূরে রাখার পাশাপাশি, শারীরিক বিকাশেও সহায়তা করে । তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সাথে, সুষম খাদ্য কি এবং সুষম খাদ্য গ্রহনের উপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব ।

সুষম খাদ্য কি – সুষম খাদ্য কাকে বলে

যে সকল খাদ্যে আমাদের শরীরের জন্য অপরিহার্য সবকয়টি খাদ্য উপাদান (শর্করা, আমিষ বা প্রোটিন, চর্বি বা স্নেহ, ভিটামিন, খনিজ লবণ এবং পানি) সঠিক অনুপাতে বিদ্যমান থাকে তাকে সুষম খাদ্য বলে ।

যদি আমরা সঠিক এবং সুষম খাদ্যের কথা বলি, তাহলে এর মধ্যে সবুজ শাক-সবজি, ফলমূল, চর্বিমুক্ত বা কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত পণ্য, গোটা শস্য, চর্বিহীন মাংস, ডিম, মুরগি, হাঁস, মাছ, মটরশুটি এবং বাদাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে । এছাড়াও সুষম খাদ্যের ক্ষেত্রে যে ধরনের খাবারগুলো এড়িয়ে চলা কম খাওয়া উচিত তা হলো, স্যাচুরেটেড এবং ট্রান্স ফ্যাট, সোডিয়াম এবং শর্করা যুক্ত খাবার । সেই সাথে খাবারের পরিমাণও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে হবে । এক্ষেত্রে একজন মহিলার জন্য প্রিতিদিন গড়ে ১২০০ থেকে ১৫০০ ক্যালোরি যথেষ্ট, অন্যদিকে একজন পুরুষের জন্য ১৫০০ থেকে ১৮০০ ক্যালরির প্রয়োজন হয় । তবে এটি ব্যক্তির বয়স এবং শারীরিক কন্ডিশনের উপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হতে পারে । এমন অবস্থায় আপনি একজন ডায়েটিশিয়ানের সাথে পরামর্শ করে এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য নিতে পারেন ( তথ্যসূত্র ) ।

সুষম খাদ্য পিরামিড

শর্করা জাতীয় খাদ্যকে প্রথম স্তরে রেখে, পরিমাণগত দিক বিবেচনা করে পর্যায়ক্রমে শাক-সবজি, ফল-মূল, আমিষ বা প্রোটিন, স্নেহ বা চর্বি জাতীয় খাদ্যকে সাজালে যে কাল্পনিক পিরামিড তৈরি হয়, তাকে সুষম খাদ্য পিরামিড বলে ।

আরও সহজ ভাবে বললে, সুষম খাদ্য পিরামিড হলো, আমাদের খাদ্য গ্রহণের পরিমাণের ডায়াগ্রাম্যাটিক প্রেজেন্টেশান । সুষম খাদ্য তালিকার মধ্যে শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট, শাক-সবজি, ফলমূল, আমিষ ও স্নেহ বা চর্বিজাতীয় খাদ্য অন্তর্ভুক্ত থাকে । আমাদের শরীরের জন্য কোন খাদ্য উপাদান কতটুকু পরিমাণে প্রয়োজন, তা এই পিরামিডের নিচ থেকে ওপরে ক্রমান্বয়ে সাজানো হয় । আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য এবং পুষ্টির চাহিদা পূরণ হচ্ছে কি না, তা এই পিরামিড দেখে খুব সহজেই বোঝা যায় ।

কেন একটি সুষম খাদ্য গুরুত্বপূর্ণ – সুষম খাদ্যের গুরুত্ব

ভারসাম্যপূর্ণ বা সুষম খাদ্য, যে কোনও মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় । কারণ, ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্য, আমাদের শরীরকে সঠিক এবং পর্যাপ্ত পুষ্টি সরবরাহ করে । শরীর যখন পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি পায়, তখন আমাদের শারীর এবং মন উভয়ই ভালো থাকে । এছাড়াও এটি স্থূলতা এবং অন্যান্য অনেক ধরণের রোগ ব্যাধি থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে । আমরা আর্টিকেলের পরবর্তী অংশে, সুষম ডায়েট চার্টের মাধ্যমে এগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব, যা শরীরকে সুস্থ রাখতে অবলম্বন করা যেতে পারে ।

আরও পড়ুনঃ কোলেস্টেরল কমাতে কী খাবেন আর কী খাবেন না ? কোলেস্টেরল ডায়েট

সুষম খাদ্যের উপকারিতা

সুষম খাদ্যের উপাদানগুলো আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং এর অনেক ধরনের উপকারিতাও রয়েছে । বৈজ্ঞানিক গবেষণার উপর ভিত্তি করে, সুষম খাদ্যের কিছু উপকারিতা নিচে দেওয়া হল –

  • ইমিউন সিস্টেমের জন্য – ভিটামিন এবং বিভিন্ন ধরনের খনিজ, সুষম খাদ্যের অন্যতম প্রধান উপাদান । যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে । এর ফলে আমরা অনেক ধরনের রোগ ব্যাধি থেকে দূরে থাকতে পারি ।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণ করে- ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সুষম খাদ্য গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে । বর্তমানে প্রায় সবাই অতিরিক্ত জাঙ্কফুড এবং তৈলাক্ত খাবার খাওয়ার কারণে, ওজন বৃদ্ধি এবং স্থূলতার সমস্যায় ভুগে থাকেন । এমন পরিস্থিতিতে নিয়মিত ব্যায়াম করার পাশাপাশি সুষম খাদ্য গ্রহণ করলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় ।
  • রোগের ঝুঁকি কমে- সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে না চলা এবং অতিরিক্ত জাঙ্কফুড ও অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার কারণে বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে । এমন পরিস্থিতিতে, নিয়মিত সঠিক ও সুষম খাদ্য গ্রহণ করলে স্থূলতা, হাই প্রেশার, হৃদরোগ, কিডনি রোগ, ডায়াবেটিস এবং ক্যান্সারসহ আরও অনেক ধরনের রোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায় ।
  • শরীরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে- নিয়মিত সুষম খাবার গ্রহন করলে শরীর প্রয়োজনীয় পরিমাণে পুষ্টি পায়, যা শরীরে শক্তি জোগাতে সহায়তা করে । এই কারণে, দীর্ঘ সময় ধরে শরীরে কোনও ধরনের শারীরিক দুর্বলতা অনুভব হয় না, যার কারণে ব্যক্তি ফিট এবং সুস্থ বোধ করেন । এমন অবস্থায় বলা যেতে পারে যে, প্রতিদিন পুষ্টিকর খাবার গ্রহন করার ফলে শরীরের শক্তি বৃদ্ধি পায় ।
  • মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য – কখনও কখনও, বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে মানুষের ভুলে যাওয়া এবং অন্যান্য অনেক ধরনের মানসিক সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে । এছাড়াও অনেকের ক্ষেত্রে মানসিক চাপের সমস্যাও তৈরি হয় । কিছু কিছু মানুষ, ঘন ঘন মেজাজ পরিবর্তনের সমস্যায় ভোগেন । এই সমস্ত রোগের কারণ, ভারসাম্যহীন খাদ্যের সাথে সম্পর্কিত হতে পারে ।এমন অবস্থায়, যদি নিয়মিত সুষম খাদ্য গ্রহণ করা হয়, তাহলে এই সমস্যাগুলি কিছুটা উপশম করা যেতে পারে । কারণ নিয়মিত সুষম খাবার খাওয়া, আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে ( তথ্যসূত্র ) ।
  • পর্যাপ্ত ঘুম – একটি সুষম এবং স্বাস্থ্যকর খাবার, আমাদের ঘুমের উপরেও প্রভাব বিস্তার করে । NCBI (ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহন করলে, পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম হয় ( তথ্যসূত্র ) । 

সুষম খাদ্যের অপরিহার্য উপাদান – সুষম খাদ্য উপাদান

সুষম খাদ্যের উপকারিতা জানার পর, এখন আমরা আপনাদের সাথে, সুষম খাদ্যের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় উপাদান নিয়ে আলোচনা করব –

প্রোটিন – প্রোটিন, আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানগুলোর মধ্যে একটি । এটি, একজন মানুষের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য । এটি পেশী শক্তিশালী করতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে । তবে , প্রতিদিন কতটুকু পরিমাণে প্রোটিন গ্রহণ করা উচিত, তা নির্ভর করে ব্যক্তির বয়স এবং শারীরিক কন্ডিশনের ওপর । এছাড়াও, একজন ব্যক্তি প্রতিদিন কি পরিমাণ শারীরিক পরিশ্রম করছে, তার উপরেও প্রোটিন গ্রহনের পরিমাণ নির্ভর করে । প্রোটিনের জন্য পনির, ডিম, দুধ, মাছ, শিমের বিচি এবং মটর জাতীয় খাবার খাওয়া যেতে পারে ।

কার্বোহাইড্রেট- শর্করা, আমাদের শরীরে শক্তি যোগায় এবং এটি সঠিক পরিমাণে গ্রহণ করলে, অনেক ধরনের রোগ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে । কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা দুই ধরনের, ভাল এবং খারাপ । সঠিক বা ভাল কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করা হলে তা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী ভুমিকা পালন করে । ভাল কার্বোহাইড্রেটের জন্য, আপনি বাদামী চাল, আলু, কম চর্বিযুক্ত দুধ এবং কলা খেতে পারেন । একই সময়ে, ক্ষতিকারক কার্বোহাইড্রেট থাকে, তৈলাক্ত খাবার যেমন ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, মিষ্টি খাবার যেমন আইসক্রিম, চকোলেট, কুকিজ বা সাদা রুটি । তাই এগুলো থেকে দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করুন ।

খনিজ পদার্থ – আয়রন, আয়োডিন, ক্যালসিয়াম এবং পটাসিয়াম আমাদের শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান । এগুলো আমাদের শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর করে এবং হাড় মজবুত করতে সহায়তা করে । এছাড়াও এগুলো, আমাদের শরীরের পেশী এবং স্নায়ুতন্ত্রকে ঠিক রাখতে সাহায্য করে । সেই সাথে শরীরের হরমোনের ভারসাম্যও বজায় রাখতে পারে ।

চর্বি ও চিনি- অনেকেই মনে করেন যে, চর্বি এবং চিনি আমাদের শরীরের জন্য ঠিক নয় । তবে কথাটি পুরোপুরি সঠিক নয় ।অতিরিক্ত যে কোন কিছু খাওয়াই আপনার শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে । চর্বি ও চিনি দুটোই আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজন । কিন্তু তা অবশ্যই নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে হবে । তাই আপনার খাদ্যতালিকায় সঠিক পরিমাণে চর্বি এবং চিনি অন্তর্ভুক্ত করুন এবং প্রক্রিয়াজাত করা খাবার থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন ।

ভিটামিন- ভিটামিন হল, সুষম খাদ্যের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ । অনেক ধরণের ভিটামিন রয়েছে এবং প্রতিটি ভিটামিন আমাদের শরীরে আলাদা আলাদা উপকার করে থাকে । এর কোনটি আমাদের ত্বকের জন্য, কোনটি হাড়ের জন্য, কিছু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য, কিছু রক্তের জন্য, কিছু পেশীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ । আখরোট, পালং শাক, ফল, মাছ এবং অন্যান্য অনেক কিছুতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন পাওয়া যায় ।

ফাইবার – সুষম খাদ্য সম্পর্কে কথা বললে, এর মধ্যে ফাইবার থাকা আবশ্যক । পরিপাকতন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত করার জন্য ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা অপরিহার্য । হার্ট ফাউন্ডেশনের পরামর্শ অনুযায়ী, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন প্রায় ২৫ থেকে ৩০ গ্রাম ফাইবার খাওয়া উচিত । চার থেকে আট বছর বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে, প্রতিদিন ১৮ গ্রাম ফাইবার গ্রহন করা উচিত । ৯ থেকে ১৩ বছর বয়সী মেয়েদের ক্ষেত্রে ২০ গ্রাম এবং ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী মেয়েদের জন্য প্রতিদিন ২২ গ্রাম ফাইবার প্রয়োজন । অন্যদিকে, যদি আমরা ছেলেদের কথা বলি, তাহলে ৯ থেকে ১৩ বছর বয়সী ছেলেদের প্রতিদিন ২৪ গ্রাম এবং ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী ছেলেদের জন্য প্রতিদিন ২৮ গ্রাম পরিমাণ ফাইবার প্রয়োজন । ফাইবার খাওয়া অনেক ধরনের শারীরিক সমস্যার ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে, যেমন পেটে অস্বস্তি, ফোলাভাব, হৃদরোগ এবং কোষ্ঠকাঠিন্য ( তথ্যসূত্র )।

সবুজ শাকসবজি – শরীরে পুষ্টির যোগানের জন্য শাক সবজি খাওয়া আবশ্যক । এটি আপনার দৈনন্দিন খাদ্যের মধ্যে সুষম খাদ্য অন্তর্ভুক্ত করার সবচেয়ে সহজ উপায় । সুষম খাদ্যের উৎসের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সবুজ শাক-সবজি যেমন পালং শাক, লাল শাক, কলমি শাক, ধনে পাতা ইত্যাদি । এছাড়াও, গাজর, শসা, কাঁচা পেঁপে, শিম, মটরশুটি এবং অন্যান্য সবজি অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে । যদি কোন ব্যক্তি এই ধরনের সবজি খেতে পছন্দ না করেন, তবে তারা ভেজিটেবল স্যুপ তৈরি করেও খেতে পারেন ।

ফল- শাক সবজির মতো, ফলও আপনার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত । ফল, আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান দেয় । আপনি আপনার হালকা ক্ষুধা নিবারণের জন্য নাস্তা হিসাবে ফল খেতে পারেন । আপনাদের মধ্যে যদি কেউ ফল সরাসরি খেতে পছন্দ না করেন, তাহলে ফলের জুস তৈরি করেও খেতে পারেন ।

পানি- সঠিক খাবার খাওয়ার পাশাপাশি সঠিক পরিমাণে পানি পান করাও আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন । পানি কম পান করলে শরীর রোগের আবাসস্থল হয়ে যায় । তাই নিজেকে হাইড্রেটেড রাখতে এবং বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে দূরে থাকতে প্রতিদিন সঠিক পরিমাণে পানি পান করুন । প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করুন ।

আরও পড়ুনঃ দড়ি লাফানোর উপকারিতা এবং অসুবিধা

ব্যালেন্সড ডায়েট চার্ট

সুষম খাদ্যের গুরুত্ব, আমাদের প্রত্যেকের জীবনের সাথেই সম্পৃক্ত । নিচে আমরা আপনাদের সাথে, ২৪ ঘন্টার জন্য পুষ্টির ডায়েট চার্ট শেয়ার করছি । নিচে উল্লেখিত ডায়েট চার্টটি আপনার প্রতিদিনের রুটিনে অন্তর্ভুক্ত করে, আপনিও একটি সুস্থ জীবনযাপন করতে পারেন ( তথ্যসূত্র ) ।

সময় আমাদের কি খাওয়া উচিত
সকালে ঘুম থেকে উঠে (সকাল 6 থেকে 7 টা) সকালে ঘুম থেকে ওঠার সাথে সাথে ১ গ্লাস কুসুম গরম পানির সাথে অর্ধেক টুকরো লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন ।
ব্রেকফাস্ট (8 থেকে 9:30 pm) সকালের নাস্তায় ১ টি অমলেট বা সেদ্ধ ডিম খাওয়া যেতে পারে । সেই সাথে ২ টি গমের রুটি এবং সবজি খেতে পারেন । সেই সাথে ১ কাপ গ্রিন টি ।
হালকা নাস্তা (১০:৩০ থেকে দুপুর ১২টা) আপনি শুকনো যে কোন ফল ১ টি বা ২ টি খেতে পারেন ।
দুপুরের খাবার (দুপুর ১টা থেকে ২.৩০ টা) দুপুরের খাবারে, যে কোন ধরনের শাক, মসুর ডাল, অল্প পরিমাণে ভাত এবং মুরগির মাংস বা মাছের তরকারি খেতে পারেন । এছাড়াও আপনি দুপুরের খাবারে সবজি খেতে পারেন এবং সাথে সালাদও খেতে পারেন ।
সন্ধ্যার নাস্তা (4:30 থেকে 6 টা) এ সময় যে কোন ফল বা শুকনো ফল খাওয়া যেতে পারে ।
রাতের খাবার (রাত 7 থেকে 9 টা) রাতে আপনি ২ টি ছোট সাইজের গমের রুটি এবং এর সাথে সবজি খেতে পারেন ।  আপনি ঘুমানোর কিছুক্ষন আগে দুধ পান করতে পারেন এবং স্বাদের জন্য দুধের সাথে এলাচ যোগ করতে পারেন ।

নোট: এই ব্যালেন্স ডায়েট চার্টটি সব ধরনের মানুষের কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছে । তবে আপনি এই ডায়েট চার্টের সাথে আপনার স্বাদ এবং পছন্দ অনুযায়ী অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার এবং পানীয় যোগ করতে পারেন । তবে একজন ডায়েটিশিয়ানের সাথে পরামর্শ করে নিলে সবচেয়ে বেশী ভালো হয় ।

সুষম খাদ্যের জন্য কিছু টিপস

ব্যালেন্সড ডায়েট চার্ট ছাড়াও আপনাদের আরও কিছু বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখা জরুরী, যা আমাদের সুস্থ রাখতে সহায়ক ভুমিকা পালন করে ।

  • প্রতিদিনের সুষম খাবার গ্রহন করার পাশাপাশি শুকনো ফল খান ।
  • উপরে উল্লিখিত প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুলো, খাবারের মাধ্যমে গ্রহণ করুন ।
  • কখনই খাবার মিস করবেন না, অর্থাৎ সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার এবং রাতের খাবার সঠিক সময়ে গ্রহন করুন । কেউ যদি কোন একবেলা খাবার বাদ দেয়, সেক্ষেত্রে সেই ব্যক্তি বেশি ক্ষুধার্ত অনুভব করতে পারে এবং তার খাওয়ার ইচ্ছা বেড়ে যেতে পারে, যার ফলে সে একবারে অনেক বেশি পরিমাণে খাবার গ্রহন করে । এর ফলে পেট সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা, ওজন বৃদ্ধির সমস্যার পাশাপাশি আরও অনেক ধরনের সমস্যা হতে পারে ।
  • অতিরিক্ত লবণ ও অতিরিক্ত চিনি খাবেন না । বিশেষ করে কাঁচা লবন খাওয়া থেকে বিরত থাকুন ।
  • বেশি তৈলাক্ত স্ট্রিটফুড এবং জাঙ্ক ফুড খাওয়া থেকে বিরত থাকুন ।
  • পুষ্টি সমৃদ্ধ সুষম খাবার খাওয়ার পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম করুন ।

শেষ কথা

আমাদের শরীর সুস্থ্য রাখার জন্য, নিয়মিত সুষম খাদ্য গ্রহন করার পাশাপাশি দৈনন্দিন রুটিনেও কিছুটা পরিবর্তন করা জরুরী । তাই প্রতিদিন সঠিক সময়ে ঘুম থেকে উঠুন, সঠিক সময়ে ঘুমাতে যান, পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান এবং মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন । এই বিষয়গুলো মেনে চললে অনেক ধরণের সমস্যা থেকে দূরে থাকা সম্ভব । আজকের আর্টিকেলে আপনার আপনাদের সাথে সুষম খাদ্য সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি । আর্টিকেলটি নিয়ে যে কোন ধরনের প্রশ্ন বা মন্তব্য থাকলে কমেন্ট সেকশনে জানান ।

Share on:
Avatar photo

Hello Friends, I am James harden, the founder of this site. This blog provides accurate and precise information on Technology, Banking, Insurance, Tips & Tricks, Online Earning, Computer troubleshooting and much more.

Leave a Comment