বর্তমান সময়ে চশমা পরা, কিছু মানুষের কাছে ফ্যাশন আবার কিছু মানুষের জন্য বাধ্যতামূলক । বাধ্যতামূলক কারণ, অনেক সময় খাবার এবং খারাপ রুটিন ফলো করার কারণে দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে । আবার অনেকের জন্ম থেকেই চোখের সমস্যা থাকে । এমন অবস্থায় চশমা পরা বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়ায় । কারণ যাই হোক না কেন, নিয়মিত চশমা পড়ার কারণে নাকের পাশে দাগ পরে, যা দেখতে খারাপ লাগে । চশমার দাগ থেকে মুক্তি পেতে, আজকের এই আর্টিকেলে আমরা, চশমার দাগের কারণগুলির পাশাপাশি চশমার দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বলব । এই ঘরোয়া প্রতিকারগুলি, চশমার কারণে হওয়া দাগ থেকে মুক্তি পেতে সহায়ক হতে পারে ।
Table of Contents
চশমা পরলে নাকে কেন ব্যথা হয়
ভুল আকারের ফ্রেমের চশমা পরা হল নাক ব্যথার সবচেয়ে সাধারণ কারণ । উপরন্তু, নিয়মিত এবং দীর্ঘসময় চশমা পরার ফলে নাকের উপর ত্বকে এবং পেরিওকুলার ত্বকে চাপ পরে । এর কারণে সেখানে দাগ এবং নাকে ব্যথা হয় । এছাড়াও, ভুল ফ্রেমের চশমা পড়ার কারণে নিম্নলিখিত সমস্যাগুলিও দেখা দিতে পারে –
- নাকের ওপরে ব্যথা: চশমার ভারী ওজনের কারণে, চশমা নাকের মাঝখানে ভালোভাবে ফিট না হলে নাকের উপরে ব্যাথা হতে পারে ।
- কানের পিছনে ব্যথা: চশমার ফ্রেমটি যদি কানের পিছনে ঠিক মত না পৌঁছায় তাহলে কানের পেছনে ব্যাথা হতে পারে ।
- চোখের উপর চাপের কারণে মাথাব্যথা: চশমার কারণে মাথাব্যথা হওয়া একটি সাধারণ সমস্যা । চশমার লেন্স যদি আপনার চোখের জন্য প্রয়োজনীয় লেন্সের সাথে না মেলে, তাহলে মাথাব্যথার সমস্যা দেখা দিতে পারে ।
এই ধরনের লক্ষণগুলি থেকে মুক্তি পেতে, একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী চশমা পড়া উচিত । সঠিক লেন্স এবং সঠিক ফ্রেমের চশমা পড়ার মাধ্যমে, এই ধরনের উপসর্গ প্রতিরোধ করা যেতে পারে ।
চশমার দাগ হওয়ার কারণ
নিয়মিত চশমা পড়ার কারণে নাকের দুই পাশে দাগ দেখা দিতে শুরু করে । চশমার দাগের কারণগুলি নিচে দেওয়া হল –
- নাকের ত্বকে চাপ: নিয়মিত চশমা পরার ফলে নাকের দুই পাশে চশমার দাগ পড়তে পারে । কারণ চশমার স্ট্যান্ড নাকের ত্বকে কন্টিনিউ চাপ দিতে থাকে । এর কারণে, রক্তের সঞ্চালন সেখানে বন্ধ হয়ে যায় এবং সেই স্থানের ত্বকের কোষ মৃত হয়ে যায়, যার ফলে দাগ দেখা দিতে শুরু করে ( তথ্যসূত্র )।
- ভুল ফ্রেম পরা: ভুল ফ্রেম পরা, অর্থাৎ আপনার মুখের সাথে সামঞ্জস্য পূর্ণ নয় এমন আকারে ছোট ফ্রেমের চশমা পরার ফলেও চশমার দাগ পড়তে পারে ।
- হার্ড নোজ প্যাড: চশ্মার নোজ প্যাড যদি বেশী শক্ত হয় তাহলেও নাকে চশমার দাগ পড়তে পারে ।
দ্রষ্টব্য: চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে আপনার জন্য উপযুক্ত আকারের হালকা এবং নাকের উপর কম চাপ পরে এমন প্যাড সহ চশমা ইউজ করুন ।
আরও পড়ুনঃ ডেঙ্গু জ্বর কী ? ডেঙ্গু জ্বরের কারণ, লক্ষণ, চিকিৎসা এবং ঘরোয়া প্রতিকার
চশমার দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায়
নিচে উল্লিখিত ঘরোয়া প্রতিকারগুলি ত্বকের রঙ উন্নত করার পাশাপাশি চশমার কারণে হওয়া দাগ কমাতে কাজ করে ।
অ্যালোভেরা –
উপাদান :
- অ্যালোভেরা পাতার একটি ছোট টুকরা
ব্যবহারবিধি:
- প্রথমে অ্যালোভেরার পাতা মাঝখান থেকে কেটে নিয়ে, এর ভেতরে থাকা পাল্প বের করে নিন ।
- এই পাল্প নাকের দাগের উপরে লাগিয়ে আলতোভাবে কিছুক্ষন ম্যাসাজ করুন এবং এভাবে কিছুক্ষন রেখে মুখ ভাল করে ধুয়ে ফেলুন ।
- এই প্রক্রিয়াটি প্রতিদিন ১ থেকে দুইবার পুনরাবৃত্তি করা যেতে পারে ।
এটা কিভাবে লাভজনক?
চশমার কারণে হওয়া দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায় হিসেবে অ্যালোভেরা ব্যবহার করতে পারেন । NCBI (ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন) এর সাইটে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যালোভেরার জেলে ময়েশ্চারাইজিং এবং অ্যান্টি-এজিং বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা চশমার কারণে হওয়া নাকের দাগ এবং ফোলাভাব কমাতে বেশ কার্যকরী । সেইসাথে, এটি ত্বকের মৃত কোষ অপসারণ করে এবং আক্রান্ত কোষগুলিকে নিরাময়েও সাহায্য করে থাকে ( তথ্যসূত্র )। এভাবে চশমার দাগ দূর করার ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করা যেতে পারে ।
আলু –
উপাদান :
- একটি কাঁচা আলু
ব্যবহারবিধি:
- প্রথমে একটি আলু কুচি করে নিন ।
- এরপর একটি সুতির কাপড়ের সাহায্যে আলুর রস বের করে নিন ।
- তারপর সেই আলুর রস দাগের উপর লাগিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে দিন ।
- এরপর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ।
এটা কিভাবে লাভজনক?
কাঁচা আলুর মধ্যে এনজাইম, ভিটামিন সি এবং স্টার্চের মতো বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা ত্বকের টিস্যুতে সঠিক পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করতে সহায়তা করতে পারে । এছাড়াও, আলুর রসের ক্ষারীয় বৈশিষ্ট্য, ত্বকের অ্যান্টিসেপটিক হিসাবে কাজ করে, যা ত্বককে উজ্জ্বল করতে সহায়তা করে ( তথ্যসূত্র )। এই সব বৈশিষ্ট্য থাকায়, চশমার কারণে হওয়া ত্বকের দাগ দূর করতে আলু কার্যকরী ভুমিকা পালন করে । তাই আপনার চাইলেও চশমার দাগ দূর করার ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে আলু ব্যবহার করতে পারেন ।
শসা –
উপাদান :
- শসার দুটি ছোট টুকরা
ব্যবহারবিধি:
- এক টুকরো শসা নিয়ে নাকের দাগের উপর হালকা করে ঘষুন ।
- এভাবে কিছুক্ষন ঘষে শসার টুকরোটি ৫ থেকে ১০ মিনিট দাগের উপর রেখে দিন ।
- তারপর পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ভাল করে ধুয়ে ফেলুন ।
- এই প্রক্রিয়াটি প্রতিদিন কমপক্ষে ২ থেকে ৩ বার করুন ।
এটা কিভাবে লাভজনক?
শসা আমাদের ত্বকের উপর শীতল প্রভাব ফেলে । এছাড়াও শসায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-কে এবং ত্বককে হাইড্রেটিং করার গুণাগুণ রয়েছে । যার কারণে শসা ত্বক উজ্জ্বলকারী হিসেবে ব্যবহার করা হয় । এই বৈশিষ্ট্যগুলির কারণে, চশমার কারণে হওয়া দাগ দূর করতে, শসা ঘরোয়া প্রতিকার হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন ।
লেবুর রস –
উপাদান :
- অর্ধেক লেবু
- একটি ছোট বাটি
- তুলার বল বা পিন্ড
ব্যবহারবিধি:
- প্রথমে একটি পাত্রে অর্ধেক লেবুর রস বের করে নিন ।
- এবার সেই রসে এক টুকরো তুলা ডুবিয়ে নাকের দাগে হালকাভাবে লাগান ।
- তারপর এভাবে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে, পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ভাল করে ধুয়ে ফেলুন ।
- এই প্রক্রিয়াটি প্রতিদিন গোসলের আগে এবং রাতে ঘুমানোর আগে পুনরাবৃত্তি করুন ।
এটা কিভাবে লাভজনক?
NCBI সাইটে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, লেবুর রসে ব্লিচিং বৈশিষ্ট্য রয়েছে । এই কারণে, মুখে লেবুর রস ইউজ করলে ত্বকের রং উন্নত হয় ( তথ্যসূত্র ) । এছাড়াও, লেবুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন-সি বৈশিষ্ট্যগুলি ত্বককে ফ্রি র্যাডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে । এই সব কারণে বলা যায় যে, চশমার কারণে হওয়া দাগ দূর করতে লেবুর রস কার্যকরী ভুমিকা পালন করে ।
গোলাপ জল –
উপাদান :
- দুই থেকে তিন ফোঁটা গোলাপ জল
- তুলার বল বা পিন্ড
ব্যবহারবিধি:
- এক টুকরো তুলোর মধ্যে ২ থেকে ৩ ফোঁটা গোলাপ জল নিন ।
- এবার সেই জল নাকের দাগে লাগান ।
- তারপর এভাবে কিছুক্ষন রেখে দিন ।
- আপনি গোসল করার পরে এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এই প্রক্রিয়াটি পুনরাবৃত্তি করুন ।
এটা কিভাবে লাভজনক?
গোলাপজল ইউজ করে ত্বকের অনেক ধরনের সমস্যা দূর করা যায় । গবেষণায় দেখা গেছে যে, গোলাপের পাপড়ির রসে ইথাইল অ্যাসিটেট এবং অ্যান্টি-টাইরোসিনেজ বৈশিষ্ট্য থাকে । এই বৈশিষ্ট্যগুলি ফ্রি র্যাডিক্যাল দূর করতে এবং মেলানিন-সম্পর্কিত সমস্যা যেমন পিগমেন্টেশন ( তথ্যসূত্র ) কমাতে সহায়তা করে । এই সব কারনে চশমার দাগ কমাতে গোলাপ জল সহায়ক হতে পারে ।
মধু –
উপাদান :
- এক চামচ মধু
- এক চামচ দুধ
ব্যবহারবিধি:
- একটি পাত্রে মধু ও দুধ নিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন ।
- এবার এই মিশ্রণটি দাগের উপর লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে দিন ।
- তারপর পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ভাল করে ধুয়ে ফেলুন ।
- এই প্রক্রিয়াটি প্রতিদিন দুইবার করে পুনরাবৃত্তি করুন ।
এটা কিভাবে লাভজনক?
গবেষণায় দেখা গেছে যে, ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে মধু খুব কার্যকরী, কারণ মধুতে অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে । এই বৈশিষ্ট্যগুলি ভেতর থেকে ত্বকের ক্ষত নিরাময় করতে এবং ত্বককে ময়শ্চারাইজ করতে সহায়তা করে । এছাড়াও , এটি ডিহাইড্রেশনের সমস্যা দূর করতে এবং ত্বকের পিএইচ স্তর ঠিক রাখতে সহায়তা করে । যা ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে ( তথ্যসূত্র )। এ কারণে চশমার দাগ থেকে মুক্তি পেতে মধু ইউজ করলে খুব ভাল উপকার পাওয়া যায় ।
কমলার খোসা –
উপাদান :
- ২ চা চামচ শুকনো কমলার খোসার গুঁড়া
- ১ চামচ দুধ
ব্যবহারবিধি:
- দুধ এবং কমলার খোসার গুঁড়া একসাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন ।
- এবার এই পেস্টটি নাকের দাগের উপরে লাগিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে দিন ।
- এরপর পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন ।
- দাগ পুরোপুরি চলে না যাওয়া পর্যন্ত এই প্রক্রিয়াটি প্রতিদিন একবার পুনরাবৃত্তি করুন ।
এটা কিভাবে লাভজনক?
কমলার খোসার ফেসপ্যাক, মুখের দাগ দূর করতে সাহায্য করে । কারণ কমলার খোসায় পলিমেথক্সিফ্ল্যাভোন (পিএমএফ) রয়েছে । এই PMF হল ফ্ল্যাভোনয়েড যৌগগুলির একটি গ্রুপ, যা সাধারণত সাইট্রাস জাতীয় উদ্ভিদে পাওয়া যায় । PMF ত্বকে মেলানিনের উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে । এটি ত্বকের উজ্জ্বলতাও বৃদ্ধি করে । এছাড়াও, এই কমলার খোসা মুখের দাগ দূর করতে সাহায্য করে ( তথ্যসূত্র ) ।
শসার রস –
এক টুকরো শসা নিয়ে তা থেতো করে নিন । তারপর শসা থেকে রস বের করে নিন । এই রস আঙুল বা তুলার সাহায্যে নাকের দুপাশে লাগিয়ে রাখুন । অথবা আপনি শসার টুকরো নিয়েও নাকে চশমার দাগের উপর ঘষতে পারেন ।
টমেটো –
উপাদান :
- টমেটো
ব্যবহারবিধি:
- এক টুকরো টমেটো কেটে নিয়ে দাগের জায়গায় কিছুক্ষণ ঘষুন ।
- তারপর ১০ থেকে ১৫ মিনিট এভাবে রেখে পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন ।
- এই প্রক্রিয়াটি প্রতিদিন দুইবার করে পুনরাবৃত্তি করুন ।
এটা কিভাবে লাভজনক?
টমেটোতে ক্যারোটিনয়েড হিসেবে লাইকোপিন থাকে । ফ্ল্যাভোনয়েড এবং ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ই এর মতো জৈব সক্রিয় যৌগও এতে পাওয়া যায় ( তথ্যসূত্র )। টমেটোর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পরিষ্কার করার বৈশিষ্ট্যগুলি ত্বককে মসৃণ এবং উজ্জ্বল করতে সহায়তা করে ( তথ্যসূত্র ) । এছাড়াও, NCBI (ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন) এর একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, টমেটোতে পাওয়া লাইকোপিন সূর্যের অতিবেগুনী (UV) রশ্মির কারণে সৃষ্ট রোদে পোড়া চিকিৎসায় সাহায্য করে ( তথ্যসূত্র )। এই সব কারণে বলা যায় যে, টমেটো চশমার দাগের কারণে সৃষ্ট দাগ থেকে মুক্তি দিয়ে সহায়ক ভুমিকা পালন করে ।
বাদাম তেল –
উপাদান :
- দুই থেকে তিন ফোঁটা বাদাম তেল
ব্যবহারবিধি:
- কয়েক ফোঁটা বাদামের তেল নিন এবং আঙ্গুল দিয়ে দাগের উপর হালকাভাবে ম্যাসাজ করুন ।
- এরপর এভাবে সারারাত রেখে সকালে ঘুম থেকে উঠে পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ভাল করে ধুয়ে ফেলুন ।
- এই প্রক্রিয়া প্রতি সপ্তাহে ২ বার দাগের উপর ব্যবহার করুন ।
এটা কিভাবে লাভজনক?
আয়ুর্বেদিক থেকে শুরু করে চাইনিজ ওষুধ, সব জায়গায় বাদাম তেলের উপকারিতা সম্পর্কেও কথা বলা হয়েছে । কিছু গবেষণা অনুসারে, বাদাম তেলের প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা ত্বককে নরম ও পুনরুজ্জীবিত করতে সহায়তা করে ( তথ্যসূত্র ) ।এছাড়াও, বাদাম তেলের ইমোলিয়েন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা ত্বকের দাগ দূর করতে সাহায্য করে ।
আপেল সিডার ভিনেগার –
উপাদান :
- এক চামচ আপেল সিডার ভিনেগার
- এক কাপ পানি
- তুলার বল
ব্যবহারবিধি:
- এক কাপ পানির সাথে এক চামচ আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে নিন ।
- এবার এই মিশ্রণে এক টুকরো তুলা ডুবিয়ে দাগের উপর লাগান ।
- তারপর ১০ থেকে ১৫ মিনিট এভাবে রেখে পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন ।
- এই প্রতিকারটি প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ব্যবহার করুন ।
এটা কিভাবে লাভজনক?
অনেক মানুষ চুল সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে, আপেল সিডার ভিনেগার ইউজ করাকে উপকারী বলে মনে করে ।এছাড়াও, এটি ত্বকের অনেক ধরনের সমস্যার চিকিৎসায় উপকারী বলে মনে করা হয় । কারণ আপেল সিডার ভিনেগারে, আলফা হাইড্রক্সিল অ্যাসিড রয়েছে । এই অ্যাসিড ত্বকের মৃত কোষগুলিকে সরিয়ে সুস্থ কোষ তৈরি করতে সাহায্য করে ।এছাড়াও, এটি ত্বকের ছিদ্রগুলিকে ব্যাকটেরিয়া, তেল এবং ধুলার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে এবং এটিকে শিথিল করে ত্বককে নরম করতেও সাহায্য করে ( তথ্যসূত্র )। তাই আপনারা চশমার কারণে হওয়া দাগ দূর করতে অ্যাপেল সিডার ভিনেগার ব্যবহার করতে পারেন ।
আরও পড়ুনঃ ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর উপকারিতা
চশমার দাগ প্রতিরোধ করার টিপস
চশমার কারণে তৈরী হওয়া দাগ এড়াতে, আপনাকে নিম্নলিখিত বিষয়গুলির দিকে যত্ন নেওয়া প্রয়োজন –
- চশমা ইউজ আগে একবার ভালো করে পরিষ্কার করে নিন । চশমার লেন্স পরিষ্কার করার জন্য সবসময় সুতি বা নরম কাপড় ইউজ করুন, যাতে লেন্সে কোন আঁচড় না থাকে ।
- যদি চশমাগুলি বেশী আঁটসাঁট মনে হয়, তাহলে দ্রুত চশমার ফ্রেম চেঞ্জ করুন ।
- যদি চশমার নোজ প্যাডগুলি, নাকের উপর খুব বেশি পরিমাণে চাপ দেয় তবে সেগুলি প্রতিস্থাপন করার কথা বিবেচনা করুন ।
- সর্বদা হালকা এবং আরামদায়ক চশমার ফ্রেম বেছে নিন ।
- বেশী মোটা লেন্স নাকে পিগমেন্টেশন চিহ্নের কারণ হতে পারে, তাই পাতলা লেন্স এবং হালকা ফ্রেম এবং ফিটিং চশমা ইউজ করার চেষ্টা করুন ।
- ঘাম হলে চশমা খুলে ফেলুন এবং ঘাম মুছে ফেলুন ।
- আক্রান্ত ত্বককে সবসময় ময়েশ্চারাইজ করতে থাকুন ।
- কিছুক্ষন পরে পরে একবার চশমা খুলে ফেলুন, যাতে ত্বকে রক্ত চলাচল করতে পারে ।
- সবসময় একজন ভালো চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শে চশমা বেছে নিন । ভুল লেন্স এবং ভুল ফ্রেম বেছে নেওয়ার ফলে চোখের উপর আরও বেশী চাপ পড়তে পারে এবং তা থেকে দাগের সমস্যা হতে পারে ।
শেষ কথা
আপনার নিশ্চই বুঝতে পেরেছেন যে, চশমার কারণে কেন দাগ পরে । অতএব, এখন থেকে আপনি যখনই চশমা পরবেন, তখনই চশমার দাগ প্রতিরোধ করার বিষয়গুলি মাথায় রাখবেন । তা সত্ত্বেও, যদি নাকে দাগ পরে, তাহলে চশমার দাগ দূর করার জন্য আর্টিকেলে উল্লেখিত ঘরোয়া প্রতিকারগুলি ব্যবহার করতে পারেন । যদিও এই ঘরোয়া প্রতিকার গুলোর কোন সাইড ইফেক্ট নেই ।তবুও, আমরা পরামর্শ দেব যে, চশমার কারণে তৈরি হওয়া দাগ দূর করার জন্য ঘরোয়া প্রতিকার গ্রহণের আগে একবার আপনার চক্ষু এবং চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করুন ।
সচরাচর জিজ্ঞাস্য
নাকে চশমার দাগ দূর করার জন্য সেরা ক্রিম কোনটি?
আর্টিকেলে আমরা আগেই উল্লেখ করেছি যে, চশমার দাগ দূর করতে অ্যালোভেরা জেল কার্যকরী । এই ক্ষেত্রে, আপনারা অ্যালোভেরাযুক্ত যে কোন ক্রিম বেছে নিতে পারেন । তবে যে কোনও ক্রিম চর্মরোগ বিশেষজ্ঞকে জিজ্ঞাসা করার পরেই ইউজ করা উচিত ।
চশমার দাগ কি সারাজীবন থাকতে পারে?
না, চশমার কারণে তৈরি হওয়া দাগ নিয়ে খুব বেশী চিন্তা করার দরকার নেই । কারণ এই দাগগুলো স্থায়ী নয় । আর্টিকেলে উল্লেখিত ঘরোয়া প্রতিকারগুলো অবলম্বন করলে এবং একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের সঠিক পরামর্শ নিলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই চশমার কারণে তৈরী হওয়া দাগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় ।
নাকের চশমার দাগ কি দূর করা যায়?
হ্যাঁ, চশমার দাগ দূর করা যায় । এর জন্য শুধু আপনারা, সঠিক চশমার ফ্রেম এবং নোজ প্যাড ব্যবহার করুন ।এছাড়াও, আর্টিকেলে উল্লিখিত ঘরোয়া প্রতিকারগুলি অবলম্বন করুন ।